অনলাইন ডেস্ক::বাংলাদেশে কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে চিকিৎসা শেষে হাসপাতাল থেকে কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে সরিয়ে নেয়া হবে। কেরানীগঞ্জের কারাগারের ভেতরে স্থাপিত বিশেষ আদালতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা মামলাগুলোর বিচার কার্যক্রম চলবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এর আগে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ নিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে।
এতে বলা হয়েছে, কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে একটি নবনির্মিত ভবনকে অস্থায়ী আদালত হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিট্যাবল ট্রাস্ট মামলায় দণ্ডাদেশ পাওয়া বিএনপি প্রধান এখন ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, খালেদা জিয়াকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে স্থানান্তরের ব্যাপারে চিকিৎসকদের ছাড়পত্রের নির্ভর করা হবে।
খালেদা জিয়াকে কবে নাগাদ কেরানীগঞ্জ কারাগারে স্থানান্তর করা হতে পারে?
এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ” তাঁর চিকিৎসা হচ্ছে। ডাক্তার যখন বলবে যে তাঁর চিকিৎসা সম্পন্ন হয়ে গেছে, তখন তাঁকে নিয়ে যাওয়া হবে।”
আইনমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার সবগুলি মামলা বিশেষ আদালতে ছিল। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশেই। খালেদা জিয়া দোষী সাব্যস্ত করার আগে থেকেই কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে বিশেষ আদালত স্থানান্তর করে তাঁর বিচার কাজ চলছিল।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যেহেতু কেরানীগঞ্জে চলে গেছে সেজন্য সেখানে বিচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কিন্তু হাসপাতাল থেকে কারাগারে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হলে খালেদা জিয়ার কি কোন স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি তৈরি হতে পারে?
আইনমন্ত্রী বলেন, ” আমরা তো এমন কোন কথা বলি নাই যে কালকেই নিয়ে যাব, কালকেই বিচার শুরু হবে। ডাক্তাররা যতক্ষণ পর্যন্ত ছাড়পত্র না দেবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তো আমরা বলি নাই যে তাকে জোর করে নিয়ে যাওয়া হবে।”
ডাক্তারদের ছাড়পত্রের উপর ভিত্তি করে খালেদা জিয়াকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে নিয়ে যাওয়া হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, কেরানীগঞ্জ কারাগারের ভেতরে আদালত বসানো হয়েছে এবং সেখানেই খালেদা জিয়ার বিচার হবে।
খালেদা জিয়াকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তার কি বিশেষ কোন ঝুঁকি তৈরি হয়েছে?
এমন প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী বলেন, ” ঝুঁকিপূর্ণ থাক আর না থাক, আমরা কোন ঝুঁকি নিতে চাইনা। ঝুঁকিপূর্ণ এমন কোন তথ্যাদি আমাদের কাছে নাই। কিন্তু আমরা সব ব্যাপারেই সিকিউরিটি কনসার্ন।”
তিনি বলেন, ঝুঁকি তৈরি হতে পারে এরকম কোন পরিস্থিতির সম্মুখীন সরকার হতে চায়না।
আইনমন্ত্রী বলেন, বিচারের সুবিধার্থে এবং নিরাপত্তার বিবেচনায় কেরানীগঞ্জে ইতোমধ্যে একটি ভার্চুয়াল কোর্ট তৈরি করা হয়েছে।
“সরকার যে ই-জুডিশিয়ারি স্থাপন করছে সেখানে একটি বিধান রাখা হচ্ছে যাতে হাই সিকিউরিটি কারাবন্দীরা কারাগার থেকে সাক্ষ্য দিতে পারে। সে কারণে কেরানীগঞ্জে কারাগারের ভেতরে আদালত স্থাপন করা হয়েছে,” বলছিলেন আইনমন্ত্রী।
তিনি বলেন , ঢাকা শহরের ভেতরে বর্তমানে কোন কেন্দ্রীয় কারাগার নেই। যেহেতু কেন্দ্রীয় কারাগারটি কেরানীগঞ্জে স্থানান্তর করা হয়েছে সেজন্য খালেদা জিয়াকেও সেখানে স্থানান্তর করা হবে।
“খালেদা জিয়া একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। ওনাকে মুভ করার জন্য আগেও একটা স্পেশাল কোর্ট ছিল জেলখানার কাছে,” বলছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
সূত্র : বিবিসি