অনলাইন রিপোর্টার ॥ যৌন নিপীড়নের মামলায় ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিচার হবে কি না জানা যাবে ১৭ জুলাই।
মঙ্গলবার ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ মামুনুর রশিদ অভিযোগপত্রের ওপর শুনানির দিন ঠিক করে দেন।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী এম শাহজাহান সাজু বলেন, গত ৩ জুলাই এ মামলায় অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই ফেনীর পরিদর্শক মো. শাহ আলম। অভিযোগপত্রে ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে।
গত ২৭ মার্চ মাদ্রাসার সিরাজ-উদ-দৌলা আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাতকে যৌন নিপীড়ন করেন বলে তার মা থানায় মামলা করেন।
এই মামলা তুলে না নেওয়ায় ৬ এপ্রিল নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয় বলে পরিবারের অভিযোগ। ওই দিনই অধ্যক্ষ সিরাজকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
এরপর ৬ এপ্রিল নুসরাত আরবি প্রথম পত্র পরীক্ষা দিতে মাদ্রাসায় গেলে কয়েকজন তাকে কৌশলে ডেকে মাদ্রাসার সাইক্লোন সেন্টারের ছাদে নিয়ে যায়। পরে তাকে বোরকা পরা একদল লোক তাকে সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতহানির মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়। নুসরাত এতে রাজি না হলে তারা তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ১০ এপ্রিল রাতে নুসরাতের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজকে প্রধান আসামি করে আটজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরও চার-পাঁচজনের বিরুদ্ধে নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান ৮ এপ্রিল সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলায় এজহারভুক্ত আটজনসহ ২১ জনকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এদের মধ্যে সিরাজ-উদ-দৌলাসহ ১২ জন হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে অধ্যক্ষ সিরাজকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়।
নুসরাতের মায়ের দায়ের করা যৌন নিপীড়নের মামলা ও নুসরাতের ভাইয়ের দায়ের করা হত্যা মামলা উভয়ই ফেনীর পিবিআই তদন্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।
হত্যা মামলায় অধ্যক্ষসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে বিচার চলছে ফেনীর নারী ও শিশুনির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে।