ঢাকা ১০:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

কিছু কিছু ওসি-ডিসি নিজেদের জমিদার মনে করেন: হাইকোর্

স্টাফ রিপোর্টার, ১০ জুলাই ২০১৯::সাবেক ওসি মোয়াজ্জেমের জামিন শুনানিতে হাইকোট বলেন, কিছু কিছু ওসি ও ডিসি রয়েছেন যারা নিজেদের জমিদার মনে করেন। সবার কথা বলছি না, কিছু কিছু ওসি-ডিসি মনে করেন, তারাই অল ইন অল। গতকাল বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মোয়াজ্জেমের জামিন আবেদনের শুনানিতে এ মন্তব্য করেন। এরপর আদালত আবেদনটি শুনে উত্থাপিত  হয়নি মর্মে জামিন আবেদন খারিজ করে দেন। এ দিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। অন্যদিকে ওসি মোয়াজ্জেমের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. আহসান উল্লাাহ ও সালমা সুলতানা। এছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার বাদী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এবং তার সঙ্গে আইনজীবী মো. আব্বাস উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

শুনানিতে আদালত বলেন, নুসরাতকে যে অবান্তর প্রশ্ন করেছিলেন তা বলার মতো বিষয় নয়। তাকে পুলিশ হেফাজতে রাখলে সে মারা যেত না।

কিন্তু তা না করে ভিডিও করে মজা নিয়েছেন। তিনি তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেননি। অভিযোগ নেয়ার পর তিনি যদি প্রটেকশন দিতেন তাহলে এ ঘটনা নাও ঘটতে পারত।

শুনানিতে মোয়াজ্জেমের আইনজীবী মো. আহসান উল্লাহ বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আছে, কেউ যদি ওয়েবসাইটে বা ডিজিটাল ডিভাইসে প্রকাশ করে তার সাজা হবে। ওসি শত্রুতাবশত এটা (ভিডিও) করেননি। অপরাধে সাজার মাত্রা কম, অপরাধটি জামিনযোগ্য এবং তিনি অসুস্থ, তার চিকিৎসা দরকার। এ কারণে জামিন আবেদন করেছি। এছাড়া তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা, তার পেনশনের বিষয় আছে। জামিন দিলে তো তিনি পালিয়ে যাবেন না। তখন আদালত বলেন, তার বিরুদ্ধে আসা অভিযোগটি গুরুতর, অপরাধের সাজা কম বা বেশি তা বড় কথা নয়। ওসি মোয়াজ্জেমের আইনজীবী বলেন, তিনি বয়স্ক। কানে সমস্যা, কম শোনেন। আদালত তখন প্রশ্ন তোলেন, বয়স কত। আইনজীবী বলেন, ৫০ বছর। এ সময় আদালতে উপস্থিত সকলে হেসে ওঠেন। হাইকোর্ট এ সময় বলেন, তিনি কানে কম শুনলে ওসির মতো এত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে কেমনে থাকেন?

উল্লেখ্য, ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার বিরুদ্ধে ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে তার মা ২৭ মার্চ থানায় অভিযোগ দাখিল করেন। এরপর ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন নুসরাতকে থানায় ডেকে নিয়ে তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। গত ৬ এপ্রিল নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১০ এপ্রিল মারা যান নুসরাত। এ সময়ই মোয়াজ্জেম নুসরাতের রেকর্ড করা জবানবন্দি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেন।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

ঠাকুরগাঁয়ে যুবলীগ নেতার পলিথিন কারখানা বন্ধ, মালামাল জব্দ

কিছু কিছু ওসি-ডিসি নিজেদের জমিদার মনে করেন: হাইকোর্

আপডেট টাইম ০১:১১:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ জুলাই ২০১৯
স্টাফ রিপোর্টার, ১০ জুলাই ২০১৯::সাবেক ওসি মোয়াজ্জেমের জামিন শুনানিতে হাইকোট বলেন, কিছু কিছু ওসি ও ডিসি রয়েছেন যারা নিজেদের জমিদার মনে করেন। সবার কথা বলছি না, কিছু কিছু ওসি-ডিসি মনে করেন, তারাই অল ইন অল। গতকাল বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ মোয়াজ্জেমের জামিন আবেদনের শুনানিতে এ মন্তব্য করেন। এরপর আদালত আবেদনটি শুনে উত্থাপিত  হয়নি মর্মে জামিন আবেদন খারিজ করে দেন। এ দিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। অন্যদিকে ওসি মোয়াজ্জেমের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. আহসান উল্লাাহ ও সালমা সুলতানা। এছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার বাদী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এবং তার সঙ্গে আইনজীবী মো. আব্বাস উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

শুনানিতে আদালত বলেন, নুসরাতকে যে অবান্তর প্রশ্ন করেছিলেন তা বলার মতো বিষয় নয়। তাকে পুলিশ হেফাজতে রাখলে সে মারা যেত না।

কিন্তু তা না করে ভিডিও করে মজা নিয়েছেন। তিনি তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেননি। অভিযোগ নেয়ার পর তিনি যদি প্রটেকশন দিতেন তাহলে এ ঘটনা নাও ঘটতে পারত।

শুনানিতে মোয়াজ্জেমের আইনজীবী মো. আহসান উল্লাহ বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আছে, কেউ যদি ওয়েবসাইটে বা ডিজিটাল ডিভাইসে প্রকাশ করে তার সাজা হবে। ওসি শত্রুতাবশত এটা (ভিডিও) করেননি। অপরাধে সাজার মাত্রা কম, অপরাধটি জামিনযোগ্য এবং তিনি অসুস্থ, তার চিকিৎসা দরকার। এ কারণে জামিন আবেদন করেছি। এছাড়া তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা, তার পেনশনের বিষয় আছে। জামিন দিলে তো তিনি পালিয়ে যাবেন না। তখন আদালত বলেন, তার বিরুদ্ধে আসা অভিযোগটি গুরুতর, অপরাধের সাজা কম বা বেশি তা বড় কথা নয়। ওসি মোয়াজ্জেমের আইনজীবী বলেন, তিনি বয়স্ক। কানে সমস্যা, কম শোনেন। আদালত তখন প্রশ্ন তোলেন, বয়স কত। আইনজীবী বলেন, ৫০ বছর। এ সময় আদালতে উপস্থিত সকলে হেসে ওঠেন। হাইকোর্ট এ সময় বলেন, তিনি কানে কম শুনলে ওসির মতো এত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে কেমনে থাকেন?

উল্লেখ্য, ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলার বিরুদ্ধে ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে তার মা ২৭ মার্চ থানায় অভিযোগ দাখিল করেন। এরপর ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন নুসরাতকে থানায় ডেকে নিয়ে তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। গত ৬ এপ্রিল নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১০ এপ্রিল মারা যান নুসরাত। এ সময়ই মোয়াজ্জেম নুসরাতের রেকর্ড করা জবানবন্দি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেন।