সারাদিন ডেস্ক:: আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন গ্রহণ করেছেন আদালত। বরগুনায় রিফাত শরীফকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা মামলায় তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির দেয়া ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহার চেয়ে জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে গতকাল বরগুনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আবেদন করেন। পরে, আজ বুধবার বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালত সে আবেদন গ্রহণ করেন।
আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির আইনজীবী মাহাবুবুল বারী আসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জবানবন্দি প্রত্যাহারের বিষয়ে বরগুনার জেল সুপার মো. আনোয়ার হোসেন জানান, আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি মঙ্গলবার তার কাছে ১৬৪ ধারায় দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন করেন। এরপর, গতকালই বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে তিনি সে আবেদন পৌঁছে দেন।
বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী আসলাম জানান, এই হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি তার দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেন। কিন্তু মূল নথি নিম্ন আদালতে না আসায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী আয়শার জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদন শুনানির জন্য আগামী ১৪ই আগস্ট তারিখ নির্ধারণ করেছেন।
আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে গত ১৬ই জুলাই সকাল পোনে দশটার দিকে জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে পুলিশ লাইনে নিয়ে আসা হয়। ওইদিন রাত ৯টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বরগুনা কারাগারে পাঠানো হয়। পরের দিন, বিকেল সোয়া তিনটার দিকে কারাগার থেকে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। রিমান্ডে নেয়ার ৪৮ ঘন্টা পরেই ১৯শে জুলাই বেলা দুইটার দিকে মিন্নিকে বরগুনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে হাজির করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেয়া হয়। ওইদিন রাত সাড়ে ৭ টার দিকে মিন্নিকে বরগুনা কারাগারে পাঠানো হয়। সেই থেকে মিন্নি বরগুনা কারাগারে রয়েছেন।
এদিকে, আজ বেলা ১১ টার দিকে মামলার অভিযোগ গঠনের জন্য রিফাত শরীফ হত্যা মামলার গ্রেপ্তারকৃত ১৫ জন আসামির মধ্যে ১৪ জনকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। আগামী ১৪ই আগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানীর তারিখ ধার্য করে ১৫ মিনিট পরেই আবার আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়।
চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা হচ্ছেন, রিফাত ফরাজী, রিশান ফরাজী, চন্দন সরকার, রাব্বি আকন, হাসান, অলি, টিকটক হৃদয়, সাগর, কামরুল ইসলাম সাইমুন, আরিয়ান শ্রাবন, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, তানভীর, নাজমুল হাসান, রাতুল সিকদার ও আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি।
মামলার এজাহারভুক্ত ৫ নম্বর আসামি মুসা বন্ড, ৭ নম্বর আসামি মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, ৮ নম্বর আসামি রায়হান ও ১০ নম্বর আাসামি রিফাত হাওলাদারকে এখনো পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
প্রসঙ্গত, গত ২৬শে জুন সকালে প্রকাশ্যে বরগুনা সরকারি কলেজ গেটের সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে আহত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যালে নেয়ার পর সেখানেই রিফাত শরীফ মারা যান। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেন।