ঢাকা ১০:০৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হুমকীর মধ্যেও শুরু হলো জেলা ইজতেমা

sdr

আজম রেহমান,ঠাকুরগাঁও॥ ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তাবলীগ জামাতের ৩ দিন ব্যাপী (২২-২৪ আগষ্ট) জেলা ইজতেমা বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজের পর শুরু হয়েছে। তাবলীগ জামাতের অতিথি মুরব্বিরা বয়ান শুরু করতে ইজতেমা ময়দানে উপস্থিত হয়েছেন।
যোহরের নামাজের পর ঢাকার মুরব্বি ডাঃ আতাউর গনি বয়ান শুরু করেন। বাদ মাগরিব মুফতি জিয়া বিন কাশেম, শুক্রবার ফজরের পর মুফতি আজিম উদ্দীন বয়ান করেন।
জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে ২২-২৪ আগষ্ট জেলা ইজতেমা সম্পন্ন করতে রাণীশংকৈল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সা’দ পন্থী তাবলীগ জামাতের লোকজন। এদিকে যে কোনো মূল্যে প্রতিপক্ষ মাওলানা সা’দ কান্ধলবী পন্থিদের জেলা ইজতেমা প্রতিহত করার হুমকী দিয়ে মানব বন্ধন করেছে মাওলানা জুবায়েদ পন্থিরা। এদিকে ইজতেমা প্রতিহত করার ঘোষণাটি বে-আইনী বলে উল্লেখ করে বিশৃক্সক্ষলা সৃষ্টির যে কোনো অপতৎপড়তা শক্তহাতে প্রতিহত করতে পুলিশ প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার মোহা. মনিরুজ্জামান।
পূর্বেই ঠিক হওয়া এই ইজতেমা সম্পন্ন করার একদিন আগে মঙ্গলবার ইজতেমা স্থান রাণীশংকৈল শিবদিঘী মোড়ে মাওলানা সা’দ কান্ধলবী পন্থিদের জেলা ইজতেমা ঠেকাতে মাওলানা জুবায়ের পন্থিরা ঠাকুরগাঁও জেলা ওলামায়ে কেরাম, তাবলীগের সাথী ও সর্বস্তরের তাওহীদির ব্যানারে মানব বন্ধন করে। এ মানববন্ধনের পর ইজতেমা নিয়ে টঙ্গীর ভয়াল রক্তাক্ত স্মৃতি মনে করে মানুষের মনে আতংক ছড়িয়ে পরে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, তাবলীগ জামাতের বির্তকিত ব্যাক্তি সা’দ পন্থীরা জেলা ইজতেমা যেন না করতে পারে এজন্য প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এরপরও যদি সেখানে ইজতেমা হয় প্রয়োজনে মাথার পাগড়ি কোমরে বেঁধে আমরা প্রতিহত করবো । চট্রগ্রামের হাটহাজারী থেকে আল্লামা শফি সাহেবকে এনে গণজমায়েত করবো। বক্তারা আগামি ২২ আগষ্ট ইজতেমার একই স্থান পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মহাসমাবেশের ঘোষণা দেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন নেকমরদ ওলামা পরিষদ সম্পাদক মৌঃ রাজিউল ইসলাম রাজু, ওলামাদের মুরব্বি মাহমুদুল্লাহ, লাহিড়ী জামে মসজিদের খতিব মজিবুর রহমান, পীরগঞ্জ ইমাম ওলামা পরিষদ সম্পাদক নুরুজাম্মানের পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন ঠাকুরগাঁও মারাক্কাজ মসজিদের ইমাম জামিল আহাম্মেদ, তাবলীগ জামাতের জেলা জিম্মাদার বদরুজাম্মান কামাল, প্রারম্ভিক বক্তা মহিলা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম, জেলা ইমাম ওলামা পরিষদ সভাপতি উবাইদুল মতিন প্রমুখ।
উল্লেখ্য তাবলীগ জামাতের ৩ দিন ব্যাপী (২২-২৪ আগষ্ট) জেলা ইজতেমা করতে রাণীশংকৈল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সা’দ পন্থী তাবলীগ জামাতের লোকজন।
উদ্ভুত পরিস্থিতি সামাল দিতে তৎপড় হয়ে ওঠে জেলা পুলিশ। জেলা ইজতেমা সম্পন্ন করতে বুধবার বিকালে থানা চত্তরে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে পুলিশ বাহিনীকে দিক নির্দেশনা ও স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে প্রেস ব্রিফিং করেন ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান (পিপিএম সেবা)।
এসময় পুলিশ সুপার বলেন, জেলা ইজতেমা সম্পন্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া হবে। এতে পুলিশ বাহিনীর যা করণীয় তার বিন্দু মাত্র কার্পণ্যতা করা হবে না। আজ থেকে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে চেক পোষ্ট বসানো হবে এবং ছাত্রাবাস ও ম্যাসগুলো তল্লাশি করা হবে। পুলিশ বাহিনীকে তিনি আরো বলেন, যেখানে যতটুকু বল প্রয়োগ করা দরকার সেখানে ততটুকু বল প্রয়োগ করবেন। প্রথমে লাঠি চার্জ এরপর গ্যাস গান, সটগান এরপরেও নিজেরা অথবা অন্যেরা আক্রান্ত হলে ফায়ার করার নির্দেশনা দেন। আর এ ইজতেমা সুন্দর ভাবে সম্পন্ন করতে পারলে পুলিশ বাহিনীকে পূরস্কিত করা হবে। মাওলানা জুবায়েদ পন্থিদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, ইজতেমা প্রতিহত করার ঘোষণাটি বে-আইনী যারা এ ঘোষনাটি দিয়েছেন তারা বে-আইনী কাজ করেছেন। আমরা এ বে-আইনী কাজটি করতে দিতে পারি না। আশা করি আপনাদের এ ঘোষণাটি প্রত্যাহার করবেন। যে কোনো নাশকতা ঠেকাতে তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে পুলিশ সুপার নিশ্চিত করেন।এসময় আরো বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আল আসাদ মোঃ মাহাফুজুল ইসলাম।
উল্লেখ্য এদিকে জেলা ইজতেমা ঠেকাতে ঠাকুরগাঁও জেলা ওলামায়ে কেরাম, তাবলীগের সাথী ও সর্বস্তরের তাওহীদির ব্যানারে গতকাল মঙ্গলবার মানব বন্ধন করেছে জুবায়ের পন্থিরা।
রাণীশংকৈল প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সাংবাদিক মোবারক হোসেন বুধবার রাতে টেলিফোনে জানান, ইজতেমার স্থানে লোকজন জমায়েত হতে শুরু করেছে। এ পর্যন্ত জুবায়ের পন্থীদের কোনো তৎপড়তা বুধবার চোখে পড়েনি।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

হুমকীর মধ্যেও শুরু হলো জেলা ইজতেমা

আপডেট টাইম ০৭:২১:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ অগাস্ট ২০১৯

আজম রেহমান,ঠাকুরগাঁও॥ ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তাবলীগ জামাতের ৩ দিন ব্যাপী (২২-২৪ আগষ্ট) জেলা ইজতেমা বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজের পর শুরু হয়েছে। তাবলীগ জামাতের অতিথি মুরব্বিরা বয়ান শুরু করতে ইজতেমা ময়দানে উপস্থিত হয়েছেন।
যোহরের নামাজের পর ঢাকার মুরব্বি ডাঃ আতাউর গনি বয়ান শুরু করেন। বাদ মাগরিব মুফতি জিয়া বিন কাশেম, শুক্রবার ফজরের পর মুফতি আজিম উদ্দীন বয়ান করেন।
জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে ২২-২৪ আগষ্ট জেলা ইজতেমা সম্পন্ন করতে রাণীশংকৈল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সা’দ পন্থী তাবলীগ জামাতের লোকজন। এদিকে যে কোনো মূল্যে প্রতিপক্ষ মাওলানা সা’দ কান্ধলবী পন্থিদের জেলা ইজতেমা প্রতিহত করার হুমকী দিয়ে মানব বন্ধন করেছে মাওলানা জুবায়েদ পন্থিরা। এদিকে ইজতেমা প্রতিহত করার ঘোষণাটি বে-আইনী বলে উল্লেখ করে বিশৃক্সক্ষলা সৃষ্টির যে কোনো অপতৎপড়তা শক্তহাতে প্রতিহত করতে পুলিশ প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার মোহা. মনিরুজ্জামান।
পূর্বেই ঠিক হওয়া এই ইজতেমা সম্পন্ন করার একদিন আগে মঙ্গলবার ইজতেমা স্থান রাণীশংকৈল শিবদিঘী মোড়ে মাওলানা সা’দ কান্ধলবী পন্থিদের জেলা ইজতেমা ঠেকাতে মাওলানা জুবায়ের পন্থিরা ঠাকুরগাঁও জেলা ওলামায়ে কেরাম, তাবলীগের সাথী ও সর্বস্তরের তাওহীদির ব্যানারে মানব বন্ধন করে। এ মানববন্ধনের পর ইজতেমা নিয়ে টঙ্গীর ভয়াল রক্তাক্ত স্মৃতি মনে করে মানুষের মনে আতংক ছড়িয়ে পরে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, তাবলীগ জামাতের বির্তকিত ব্যাক্তি সা’দ পন্থীরা জেলা ইজতেমা যেন না করতে পারে এজন্য প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এরপরও যদি সেখানে ইজতেমা হয় প্রয়োজনে মাথার পাগড়ি কোমরে বেঁধে আমরা প্রতিহত করবো । চট্রগ্রামের হাটহাজারী থেকে আল্লামা শফি সাহেবকে এনে গণজমায়েত করবো। বক্তারা আগামি ২২ আগষ্ট ইজতেমার একই স্থান পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মহাসমাবেশের ঘোষণা দেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন নেকমরদ ওলামা পরিষদ সম্পাদক মৌঃ রাজিউল ইসলাম রাজু, ওলামাদের মুরব্বি মাহমুদুল্লাহ, লাহিড়ী জামে মসজিদের খতিব মজিবুর রহমান, পীরগঞ্জ ইমাম ওলামা পরিষদ সম্পাদক নুরুজাম্মানের পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন ঠাকুরগাঁও মারাক্কাজ মসজিদের ইমাম জামিল আহাম্মেদ, তাবলীগ জামাতের জেলা জিম্মাদার বদরুজাম্মান কামাল, প্রারম্ভিক বক্তা মহিলা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম, জেলা ইমাম ওলামা পরিষদ সভাপতি উবাইদুল মতিন প্রমুখ।
উল্লেখ্য তাবলীগ জামাতের ৩ দিন ব্যাপী (২২-২৪ আগষ্ট) জেলা ইজতেমা করতে রাণীশংকৈল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সা’দ পন্থী তাবলীগ জামাতের লোকজন।
উদ্ভুত পরিস্থিতি সামাল দিতে তৎপড় হয়ে ওঠে জেলা পুলিশ। জেলা ইজতেমা সম্পন্ন করতে বুধবার বিকালে থানা চত্তরে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে পুলিশ বাহিনীকে দিক নির্দেশনা ও স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে প্রেস ব্রিফিং করেন ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার মনিরুজ্জামান (পিপিএম সেবা)।
এসময় পুলিশ সুপার বলেন, জেলা ইজতেমা সম্পন্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়া হবে। এতে পুলিশ বাহিনীর যা করণীয় তার বিন্দু মাত্র কার্পণ্যতা করা হবে না। আজ থেকে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে চেক পোষ্ট বসানো হবে এবং ছাত্রাবাস ও ম্যাসগুলো তল্লাশি করা হবে। পুলিশ বাহিনীকে তিনি আরো বলেন, যেখানে যতটুকু বল প্রয়োগ করা দরকার সেখানে ততটুকু বল প্রয়োগ করবেন। প্রথমে লাঠি চার্জ এরপর গ্যাস গান, সটগান এরপরেও নিজেরা অথবা অন্যেরা আক্রান্ত হলে ফায়ার করার নির্দেশনা দেন। আর এ ইজতেমা সুন্দর ভাবে সম্পন্ন করতে পারলে পুলিশ বাহিনীকে পূরস্কিত করা হবে। মাওলানা জুবায়েদ পন্থিদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, ইজতেমা প্রতিহত করার ঘোষণাটি বে-আইনী যারা এ ঘোষনাটি দিয়েছেন তারা বে-আইনী কাজ করেছেন। আমরা এ বে-আইনী কাজটি করতে দিতে পারি না। আশা করি আপনাদের এ ঘোষণাটি প্রত্যাহার করবেন। যে কোনো নাশকতা ঠেকাতে তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে পুলিশ সুপার নিশ্চিত করেন।এসময় আরো বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আল আসাদ মোঃ মাহাফুজুল ইসলাম।
উল্লেখ্য এদিকে জেলা ইজতেমা ঠেকাতে ঠাকুরগাঁও জেলা ওলামায়ে কেরাম, তাবলীগের সাথী ও সর্বস্তরের তাওহীদির ব্যানারে গতকাল মঙ্গলবার মানব বন্ধন করেছে জুবায়ের পন্থিরা।
রাণীশংকৈল প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সাংবাদিক মোবারক হোসেন বুধবার রাতে টেলিফোনে জানান, ইজতেমার স্থানে লোকজন জমায়েত হতে শুরু করেছে। এ পর্যন্ত জুবায়ের পন্থীদের কোনো তৎপড়তা বুধবার চোখে পড়েনি।