ঢাকা ০৫:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
সংবাদকর্মী মামুনের ওপর হামলার প্রতিবাদে সাংবাদিকদের অবস্থান কর্মসূচী, সন্ত্রাশীকে দল থেকে বহিষ্কার অনলাইন বই বাজার: ঘরে বসেই যে ১০ ওয়েবসাইট থেকে কিনতে পারেন পছন্দের বই পদোন্নতি পেয়ে সচিব হলেন সাত কর্মকর্তা স্টারলিংক এলে আর কেউ ইন্টারনেট বন্ধ করতে পারবে না: শফিকুল আলম গণঅভ্যুত্থানের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে মাঠে থেকে কাজ করতেই পদত্যাগ করেছি: নাহিদ পীরগঞ্জে জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস পালিত ১৭ লাখ মৃত ভোটার কবর থেকে ভোট দিয়েছে : সিইসি দেশ টিভির এমডি আরিফ গ্রেপ্তার চ্যানেল ওয়ান সম্প্রচারে বাধা নেই : আপিল বিভাগ স্বাধীন, বস্তুনিষ্ঠ ও শক্তিশালী গণমাধ্যম গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে কমিশন- গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ

রাণীশংকৈল উপজেলার এসিল্যান্ড নিজেই ঠিকাদার

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলা ২টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সংস্কার ও নির্মাণ কাজ ইতিমধ্যে সর্ম্পূণ হয়েছে। তবে এ কাজে সরকারি নিয়মকে কাগজে কলমে দেখিয়ে গোপনে সম্পূর্ণ করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) সোহাগ চন্দ্র সাহার বিরুদ্ধে। সরকারি বিধিমালাকে উপেক্ষা করে কর্মকর্তা নিজেই এ কাজ করায় উপজেলায় আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।

জানা গেছে, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) সোহাগ চন্দ্র সাহা সরকারী বরাদ্দের ৫ লাখ টাকা ঠিকাদার নিয়োগের মাধ্যমে উপজেলা ভূমি অফিস ও ২টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সংস্কার কাজ সম্পূর্ণ করেছেন বলে কাগজে কলমে দেখিয়েছেন।

অপরদিকে সংস্কারের নামে বাচোর ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে এক লাখ অনুদান নিয়েছেন এসিল্যান্ড। অনুদান দেওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান জিতেন্দ্র নাথ।

ঠিকাদার নিয়োগ হলেও কাজটি এসিল্যান্ড নিজেই করেছেন বলে নিয়োগকৃত ঠিকাদার খায়রুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন।

এ ছাড়াও কাজের শ্রমিকদের বেতন এসিল্যান্ড অফিসের নাজির পরিশোধ করেছেন বলে জানান শ্রমিকরা।

এদিকে অভিযোগ উঠেছে, ঠিকাদার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কিছুটা অস্বচ্ছতার। স্থানীয় ও জেলার নিয়মিত ঠিকাদাররা এ কাজের দরপত্র বিজ্ঞপ্তি আহবানের বিষয়ে কিছুই জানেন না। এ ব্যাপারে রাণীশংকৈল উপজেলা ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির সভাপতি আবু তাহের বলেন, এ কাজের যে কখন দরপত্র আহবান করা হলো তা আমরা জানি না। সংস্কারের কাজ করা হয়েছে ২টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের।

ধর্মগড়-কাশিপুর ইউপির উপ-সহকারি ভূমি কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম জানান, এটা কোন বরাদ্দ থেকে হয়েছে জানি না। এসিল্যান্ড স্যার আমার অফিসের পিয়ন দিয়ে দেখাশুনা করিয়ে অফিসের দরজা জানালা প্রাচীর কাজটি করিয়ে নিয়েছেন শুধু এটা জানি। এর বাইরে কিছুই জানি না। এখানে কোন ঠিকাদার কিংবা কোন প্রকৌশলীকে কখনো আসতে দেখেনি।

আরেকটি ইউনিয়ন ভূমি অফিস বাচোর ইউপির উপ-সহকারি ভূমি কর্মকর্তা রহমত আলী জানান, কাজটি কীভাবে হলো, কার অর্থায়নে হলো জানি না একদিন দেখলাম ইট সিমেন্ট বালু নিয়ে এসে এসিল্যান্ড রাজমিস্ত্রি দিয়ে আমার অফিসের ডান দিকে ইটের প্রাচীর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ করলো। এর থেকে বেশি কিছু বলতে পারবো না।

উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, সরকারি নিয়মে দরপত্র আহবানের মাধ্যমে উপজেলা ভূমি অফিসের ফ্রন্ট ডেস্ক নির্মাণ ২টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস সংস্কার বাবদ ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ঠিকাদার নিয়োগ করে কাজ করা হয়েছে।

তবে দরপত্র আহবান বা কার্যাদেশ প্রদানের সময় ও তারিখ দিতে অপরাগতা প্রকাশ করে উপজেলা ভূমি অফিসের এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দরপত্র আহবানের মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগের মাধ্যমে কাজ করার বিধান থাকলেও এসিল্যান্ড স্যার নামে মাত্র ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে নিজের তত্ত্বাবধানে কাজটি করেছেন। কর্মরত শ্রমিকদের বেতন মুজুরি ও মালামাল ক্রয়ের টাকা আমাদের অফিসের লোক দিয়েই পরিশোধ করেছেন।

নির্মাণ কাজের রাজ মিস্ত্রি আমির আলী বলেন, এ কাজের ঠিকাদার আছে, কিন্তু তাকে আমি দেখিনি। আমাকে ভূমি অফিসের নাজির টাকা পরিশোধ করেছে।

উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি সোহাগ চন্দ্র সাহা নিজে কাজ করার কথা স্বীকার করে বলেন, আমি দরপত্রের কাজের চেয়েও অতিরিক্ত কাজ করেছি। তাই অনুদানও নিয়েছি। আপনারা সরেজমিনে গিয়ে দেখতে পারেন।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

সংবাদকর্মী মামুনের ওপর হামলার প্রতিবাদে সাংবাদিকদের অবস্থান কর্মসূচী, সন্ত্রাশীকে দল থেকে বহিষ্কার

রাণীশংকৈল উপজেলার এসিল্যান্ড নিজেই ঠিকাদার

আপডেট টাইম ০৬:৪৫:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলা ২টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সংস্কার ও নির্মাণ কাজ ইতিমধ্যে সর্ম্পূণ হয়েছে। তবে এ কাজে সরকারি নিয়মকে কাগজে কলমে দেখিয়ে গোপনে সম্পূর্ণ করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) সোহাগ চন্দ্র সাহার বিরুদ্ধে। সরকারি বিধিমালাকে উপেক্ষা করে কর্মকর্তা নিজেই এ কাজ করায় উপজেলায় আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে।

জানা গেছে, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) সোহাগ চন্দ্র সাহা সরকারী বরাদ্দের ৫ লাখ টাকা ঠিকাদার নিয়োগের মাধ্যমে উপজেলা ভূমি অফিস ও ২টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সংস্কার কাজ সম্পূর্ণ করেছেন বলে কাগজে কলমে দেখিয়েছেন।

অপরদিকে সংস্কারের নামে বাচোর ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে এক লাখ অনুদান নিয়েছেন এসিল্যান্ড। অনুদান দেওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান জিতেন্দ্র নাথ।

ঠিকাদার নিয়োগ হলেও কাজটি এসিল্যান্ড নিজেই করেছেন বলে নিয়োগকৃত ঠিকাদার খায়রুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন।

এ ছাড়াও কাজের শ্রমিকদের বেতন এসিল্যান্ড অফিসের নাজির পরিশোধ করেছেন বলে জানান শ্রমিকরা।

এদিকে অভিযোগ উঠেছে, ঠিকাদার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কিছুটা অস্বচ্ছতার। স্থানীয় ও জেলার নিয়মিত ঠিকাদাররা এ কাজের দরপত্র বিজ্ঞপ্তি আহবানের বিষয়ে কিছুই জানেন না। এ ব্যাপারে রাণীশংকৈল উপজেলা ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির সভাপতি আবু তাহের বলেন, এ কাজের যে কখন দরপত্র আহবান করা হলো তা আমরা জানি না। সংস্কারের কাজ করা হয়েছে ২টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের।

ধর্মগড়-কাশিপুর ইউপির উপ-সহকারি ভূমি কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম জানান, এটা কোন বরাদ্দ থেকে হয়েছে জানি না। এসিল্যান্ড স্যার আমার অফিসের পিয়ন দিয়ে দেখাশুনা করিয়ে অফিসের দরজা জানালা প্রাচীর কাজটি করিয়ে নিয়েছেন শুধু এটা জানি। এর বাইরে কিছুই জানি না। এখানে কোন ঠিকাদার কিংবা কোন প্রকৌশলীকে কখনো আসতে দেখেনি।

আরেকটি ইউনিয়ন ভূমি অফিস বাচোর ইউপির উপ-সহকারি ভূমি কর্মকর্তা রহমত আলী জানান, কাজটি কীভাবে হলো, কার অর্থায়নে হলো জানি না একদিন দেখলাম ইট সিমেন্ট বালু নিয়ে এসে এসিল্যান্ড রাজমিস্ত্রি দিয়ে আমার অফিসের ডান দিকে ইটের প্রাচীর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ করলো। এর থেকে বেশি কিছু বলতে পারবো না।

উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, সরকারি নিয়মে দরপত্র আহবানের মাধ্যমে উপজেলা ভূমি অফিসের ফ্রন্ট ডেস্ক নির্মাণ ২টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস সংস্কার বাবদ ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ঠিকাদার নিয়োগ করে কাজ করা হয়েছে।

তবে দরপত্র আহবান বা কার্যাদেশ প্রদানের সময় ও তারিখ দিতে অপরাগতা প্রকাশ করে উপজেলা ভূমি অফিসের এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দরপত্র আহবানের মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগের মাধ্যমে কাজ করার বিধান থাকলেও এসিল্যান্ড স্যার নামে মাত্র ঠিকাদার নিয়োগ দিয়ে নিজের তত্ত্বাবধানে কাজটি করেছেন। কর্মরত শ্রমিকদের বেতন মুজুরি ও মালামাল ক্রয়ের টাকা আমাদের অফিসের লোক দিয়েই পরিশোধ করেছেন।

নির্মাণ কাজের রাজ মিস্ত্রি আমির আলী বলেন, এ কাজের ঠিকাদার আছে, কিন্তু তাকে আমি দেখিনি। আমাকে ভূমি অফিসের নাজির টাকা পরিশোধ করেছে।

উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি সোহাগ চন্দ্র সাহা নিজে কাজ করার কথা স্বীকার করে বলেন, আমি দরপত্রের কাজের চেয়েও অতিরিক্ত কাজ করেছি। তাই অনুদানও নিয়েছি। আপনারা সরেজমিনে গিয়ে দেখতে পারেন।