ঢাকা ০৩:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৮ মার্চ ২০২৫, ২৪ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
সংবাদকর্মী মামুনের ওপর হামলার প্রতিবাদে সাংবাদিকদের অবস্থান কর্মসূচী, সন্ত্রাশীকে দল থেকে বহিষ্কার অনলাইন বই বাজার: ঘরে বসেই যে ১০ ওয়েবসাইট থেকে কিনতে পারেন পছন্দের বই পদোন্নতি পেয়ে সচিব হলেন সাত কর্মকর্তা স্টারলিংক এলে আর কেউ ইন্টারনেট বন্ধ করতে পারবে না: শফিকুল আলম গণঅভ্যুত্থানের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে মাঠে থেকে কাজ করতেই পদত্যাগ করেছি: নাহিদ পীরগঞ্জে জাতীয় স্থানীয় সরকার দিবস পালিত ১৭ লাখ মৃত ভোটার কবর থেকে ভোট দিয়েছে : সিইসি দেশ টিভির এমডি আরিফ গ্রেপ্তার চ্যানেল ওয়ান সম্প্রচারে বাধা নেই : আপিল বিভাগ স্বাধীন, বস্তুনিষ্ঠ ও শক্তিশালী গণমাধ্যম গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছে কমিশন- গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ

অভিযান নিয়ে এতো টেনশন কেন?

মোস্তফা ফিরোজ:: সবাই যদি ভালো হয়, তাহলে খারাপ কারা? যাদের টাকা পয়সা নেই। ক্ষমতা নেই। তারাই কি অপরাধী? মোহামেডানের লোকমান হোসেন ভূ্ঁইয়া এক সময়ে বেগম জিয়ার নিরাপত্তা কর্মকর্তা ছিলেন। আওয়ামী লীগের সময়ে বিসিবি সভাপতি পাপনের আশীর্বাদে তিনি এখন মোহামেডান ও ক্রিকেট বোর্ডের প্রভাবশালী কর্মকর্তা। অষ্ট্রেলিয়ায় ৪০ কোটি টাকা পাচার, ক্লাবে ক্যাসিনো ভাড়া দেয়াসহ নানা অভিযোগে তিনি যখন আটক তখন পাপন সাহেব ইনিয়ে বিনিয়ে তার পক্ষে সাফাই গেয়ে বলছেন, তিনি মদ খান না। জুয়া খেলেন না। তিনি যে ক্যাসিনোর সাথে যুক্ত সেটা তিনি জানেন না। আবার ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে যখন সাঁড়াশি অভিযান শুরু হলো, গ্রেফতার হলো খালেদ ভূঁইয়া তখনতো যুবলীগ চেয়ারম্যান হুঙ্কার ছাড়লেন। তিনি বললেন, ঢাকার যুবলীগের প্রান পুরুষ সম্রাটের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।

আবার চট্টগ্রামে যখন ক্লাবে ক্লাবে জুয়ার বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হলো তখন স্থানীয় এমপি ও হুইপ শামসুল হক চৌধুরী তো ক্ষোভে ফেঁটে পড়লেন। বললেন, জুয়া বন্ধ হলে খেলা বন্ধ হয়ে যাবে। ছেলেরা রাস্তায় রাস্তায় ছিনতাই রাহাজানি শুরু করবে।

আবার টেন্ডার সম্রাট জি কে শামীমকে যখন ধরা হলো তখন অনেকে হাই হাই করে উঠলেন। বললেন,সর্বনাশ তার হাতে ৩/৪ হাজার কোটি টাকার সরকারি নির্মাণ কাজ। তাকে আটক হলে এসব স্থাপনার কি হবে? তার বিষয়ে আবার মিডিয়ার কারো কারো বিশেষ সহানুভূতির কথাও শোনা যাচ্ছে।
এসব মদাড়ু, জুয়াড়ু ও লুটেরা গোষ্ঠীর প্রতি অনেকেই আকারে ইঙ্গিতে সমর্থন দিচ্ছেন। কেন এমনটা হচ্ছে?

সবাই জানেন, নিজের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা কঠিন বিষয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেই কঠিন কাজটিতে যখন হাত দিলেন তখন সরকার ও ক্ষমতার সাথে যারা এতোদিন ওঠা বসা করেছে তাদেরই বেশি খুশি হবার কথা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে তাদের ভিতরে উদ্বেগ উৎকন্ঠা। তারা বলতে চাইছেন বেশি নাড়াচাড়া করার দরকার নেই। ওই ছাত্রলীগ যুবলীগ পর্যন্ত যা হবার হয়েছে। আর বেশি দূর বাড়ার দরকার নেই।

কেন সমস্যা কোথায়? এই সরকারকে যারা ভালোবাসেন তাদেরই তো উচিৎ দুর্নীতিমুক্ত সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হোক তারজন্য জোরেশোরে অভিযান চলুক। সরকার ও দুর্নীতিকে একসাথে ভালোবাসা যায় না। সেজন্য এই অভিযানে সর্বাত্মক সমর্থন দেয়া প্রয়োজন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে অনেকেই টেনশনে। কেন? কেন ভেতরে ভেতরে চাওয়া যে অভিযান শেষ হোক? তাহলে কি শর্ষের ভিতরে ভূত বসে আছে?

লেখক: প্রধান বার্তা সম্পাদক, বাংলাভিশন

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

সংবাদকর্মী মামুনের ওপর হামলার প্রতিবাদে সাংবাদিকদের অবস্থান কর্মসূচী, সন্ত্রাশীকে দল থেকে বহিষ্কার

অভিযান নিয়ে এতো টেনশন কেন?

আপডেট টাইম ০৭:৫১:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯

মোস্তফা ফিরোজ:: সবাই যদি ভালো হয়, তাহলে খারাপ কারা? যাদের টাকা পয়সা নেই। ক্ষমতা নেই। তারাই কি অপরাধী? মোহামেডানের লোকমান হোসেন ভূ্ঁইয়া এক সময়ে বেগম জিয়ার নিরাপত্তা কর্মকর্তা ছিলেন। আওয়ামী লীগের সময়ে বিসিবি সভাপতি পাপনের আশীর্বাদে তিনি এখন মোহামেডান ও ক্রিকেট বোর্ডের প্রভাবশালী কর্মকর্তা। অষ্ট্রেলিয়ায় ৪০ কোটি টাকা পাচার, ক্লাবে ক্যাসিনো ভাড়া দেয়াসহ নানা অভিযোগে তিনি যখন আটক তখন পাপন সাহেব ইনিয়ে বিনিয়ে তার পক্ষে সাফাই গেয়ে বলছেন, তিনি মদ খান না। জুয়া খেলেন না। তিনি যে ক্যাসিনোর সাথে যুক্ত সেটা তিনি জানেন না। আবার ক্যাসিনোর বিরুদ্ধে যখন সাঁড়াশি অভিযান শুরু হলো, গ্রেফতার হলো খালেদ ভূঁইয়া তখনতো যুবলীগ চেয়ারম্যান হুঙ্কার ছাড়লেন। তিনি বললেন, ঢাকার যুবলীগের প্রান পুরুষ সম্রাটের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।

আবার চট্টগ্রামে যখন ক্লাবে ক্লাবে জুয়ার বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হলো তখন স্থানীয় এমপি ও হুইপ শামসুল হক চৌধুরী তো ক্ষোভে ফেঁটে পড়লেন। বললেন, জুয়া বন্ধ হলে খেলা বন্ধ হয়ে যাবে। ছেলেরা রাস্তায় রাস্তায় ছিনতাই রাহাজানি শুরু করবে।

আবার টেন্ডার সম্রাট জি কে শামীমকে যখন ধরা হলো তখন অনেকে হাই হাই করে উঠলেন। বললেন,সর্বনাশ তার হাতে ৩/৪ হাজার কোটি টাকার সরকারি নির্মাণ কাজ। তাকে আটক হলে এসব স্থাপনার কি হবে? তার বিষয়ে আবার মিডিয়ার কারো কারো বিশেষ সহানুভূতির কথাও শোনা যাচ্ছে।
এসব মদাড়ু, জুয়াড়ু ও লুটেরা গোষ্ঠীর প্রতি অনেকেই আকারে ইঙ্গিতে সমর্থন দিচ্ছেন। কেন এমনটা হচ্ছে?

সবাই জানেন, নিজের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা কঠিন বিষয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেই কঠিন কাজটিতে যখন হাত দিলেন তখন সরকার ও ক্ষমতার সাথে যারা এতোদিন ওঠা বসা করেছে তাদেরই বেশি খুশি হবার কথা। কিন্তু দেখা যাচ্ছে তাদের ভিতরে উদ্বেগ উৎকন্ঠা। তারা বলতে চাইছেন বেশি নাড়াচাড়া করার দরকার নেই। ওই ছাত্রলীগ যুবলীগ পর্যন্ত যা হবার হয়েছে। আর বেশি দূর বাড়ার দরকার নেই।

কেন সমস্যা কোথায়? এই সরকারকে যারা ভালোবাসেন তাদেরই তো উচিৎ দুর্নীতিমুক্ত সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হোক তারজন্য জোরেশোরে অভিযান চলুক। সরকার ও দুর্নীতিকে একসাথে ভালোবাসা যায় না। সেজন্য এই অভিযানে সর্বাত্মক সমর্থন দেয়া প্রয়োজন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে অনেকেই টেনশনে। কেন? কেন ভেতরে ভেতরে চাওয়া যে অভিযান শেষ হোক? তাহলে কি শর্ষের ভিতরে ভূত বসে আছে?

লেখক: প্রধান বার্তা সম্পাদক, বাংলাভিশন