সারাদিন ডেস্ক:: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদের ফাঁসির জন্য ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের মঞ্চ প্রস্তুত। শনিবার (১১ এপ্রিল) রাতেই তার ফাঁসি কার্যকর হচ্ছে।
কারা সূত্র জানায়, কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের ফাঁসির মঞ্চ তৈরির পর এখন পর্যন্ত কোনো আসামির ফাঁসি কার্যকর হয়নি। বঙ্গবন্ধুর খুনির ফাঁসির মধ্য দিয়ে নতুন এই মঞ্চে ফাঁসির কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে।
এরইমধ্যে মঞ্চটি ধোয়া-মোছা করে তৈরি রাখা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ফাঁসির সময় নির্ধারণ করে আদেশ দেওয়ার পর মঞ্চটিতে মহড়া করা হবে। এরই মধ্যে কোন কোন জল্লাদ ফাঁসির কাজে অংশ নেবেন, তাও প্রাথমিকভাবে ঠিক করা হয়েছে বলে জানা গেছে। কারা সূত্র আরও জানায়, শুক্রবার মাজেদের স্ত্রী সালেহা বেগমসহ পরিবারের পাঁচ সদস্য তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন।
গত বুধবার রাতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে পাঠানো প্রাণভিক্ষা খারিজের চিঠি পৌঁছায় কারাগারে। তখনই ফাঁসি কার্যকরের ব্যবস্থা নিতে শুরু করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ।
পরেরদিন বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, আবদুল মাজেদের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। প্রাণভিক্ষার আবেদন বাতিল হয়ে যাওয়ায় ফাঁসির আদেশ কার্যকরে আর কোনো বাধা থাকল না। এখন পরবর্তী প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তার ফাঁসির দণ্ড কার্যকর করা হবে।
এর আগে ২৩ বছর ধরে পলাতক আবদুল মাজেদকে মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বুধবার (৮ এপ্রিল) ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ এম হেলাল উদ্দিন চৌধুরী তাকে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তার ফাঁসির পরোয়ানা ইস্যু করেন। পরোয়ানা জারির আগে তাকে রায় পড়ে শোনানো হয়। এরপরই তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়ে আবেদন করেন। পরে সেই আবেদন নাকচ হয়।
প্রসঙ্গত, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারে খুন হন। ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি এই মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামির ফাঁসি কার্যকর হয়। তাঁরা হলেন কারাগারে থাকা আসামি মেজর বজলুল হুদা, আর্টিলারি মুহিউদ্দিন, লে. কর্নেল সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান ও ল্যান্সার মহিউদ্দিন আহমেদ। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাত আসামি পলাতক থাকেন। তাঁরা হলেন খন্দকার আবদুর রশিদ, রিসালদার মোসলেমউদ্দিন, শরিফুল হক ডালিম, এ এম রাশেদ চৌধুরী, নূর চৌধুরী, আবদুল আজিজ পাশা ও ক্যাপ্টেন আবদুল মাজেদ। আজিজ পাশা ২০০২ সালে জিম্বাবুয়েতে মারা যান।
১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট ভোরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সবাইকে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের বাসভবনে হত্যা করা হয়। কিছু বিপথগামী সেনাসদস্য রাষ্ট্রীয় ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেন। এর মধ্যে ক্যাপ্টেন মাজেদ বঙ্গবন্ধুকে হত্যাকারীদের অন্যতম একজন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর মাজেদকে সেনেগালে বাংলাদেশ দূতাবাসে তৃতীয় সচিব পদে চাকরি দিয়েছিল বঙ্গবন্ধু হত্যা-পরবর্তী সরকার।