পীর হাবিবুর রহমান::করোনার মহাপ্রলয়ে মৃত্যু ও ভয়ের বিভীষিকাময় অসহ্য দমবন্ধ জীবন এতটা অসহায়, এতটা বিরক্তি বিষাদের যে মাঝে মাঝে মনে হয় এমনিতেই না মরে যাই। এমনিতেই হৃদরোগী, এখন মেজাজও চড়া। একমাত্র রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ছাড়া মন্ত্রিসভার সংখ্যাগরিষ্ঠের ওপর কোনো ভরসা নেই। শেখ হাসিনা কথা বললে জনগণ সাহস মনোবল শক্তি আশা ও সত্য পায়। একমাত্র তিনিই পরম বিশ্বাস ভরসার জায়গায়। কিন্তু এমন অথর্ব দুর্বল অর্ধেক অরাজনৈতিক ব্যবসায়ী মন্ত্রিসভা এ দেশে কখনো আসেনি। বিশেষ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপনের চরম ব্যর্থতার লজ্জা মানার মতোন নয়। চীনের করোনার ভয়াবহতার পর দেশের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী সমন্বয়ে পিপিই, মাস্ক, আইসিইউ, ভেনটিলেশনে প্রস্তুতি না নেওয়ার ব্যর্থতা ক্ষমা করার মতোন নয়। সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ সবাই নির্লজ্জ ব্যর্থতা নিয়ে চেয়ারে বসে আছেন। তবু কেউ জনগণের কাছে ক্ষমাও চাননি, উল্টো গা জ্বালা ধরা মিথ্যাচার, তৃপ্তির কথা শুনিয়ে সত্য গোপনের চেষ্টা করেছেন, প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে সত্য উন্মোচন করিয়েছেন।
কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ডে তালা মেরে রাখা হয় বলে খবর এসেছে। একটা নির্দিষ্ট সময়ে খাবারের জন্য মাইকিং করে ওয়ার্ডের দরজায় খাবার ও ওষুধ রেখে দেওয়া হয়। রোগীর যত কষ্টই হোক আর শ্বাসকষ্টই থাকুক তখনই সেগুলো আনতে হয়। বক্সে রোগীদের নাম লেখা থাকে। নিজ দায়িত্বেই ওষুধ খেতে হয়! কুর্মিটোলা হাসপাতালে টয়লেটে গিয়ে রোগী পড়ে মরে ছিল। কেউ জানেই না কখন মারা গেছে। ছয় তলা থেকে নেমে পাঁচ তলায় গিয়ে খাবার পানি আনতে হয়। অন্য যে কোনো দরকারেও নিচে নামতে হয় রোগীকেই! মুগদায় মারা যাওয়া সিটি ব্যাংকের তরুণ কর্মকর্তার দুবার পরীক্ষায় নেগেটিভ এলেও মৃত্যুর পর পজিটিভ এসেছে! সারা দেশের মানুষ চিকিৎসাসেবা পায় না। স্বাস্থ্যমন্ত্রী, সচিব, মহাপরিচালক একটা হাসপাতালও পরিদর্শন করেন না। মার্চে মন্ত্রী একবার গিয়েছিলেন, তারপর কোথাও না কেউ! সারা দেশেও না! কেন? তিন শর মতোন চিকিৎসক আক্রান্ত। ৬৬০ জন স্বাস্থ্যকর্মী। মন্ত্রী ও কর্তারা কী করছেন? চিকিৎসকরা সুরক্ষা না পেলে মানুষ সেবা পাবে কী করে? আর কত সময় নষ্ট? সামনে ভয়ঙ্কর পরিণতি নয় তো? লকডাউনেরও ইতি ঘটেছে। এর মধ্যেও টাকার গরমিল, জেএমআইর ভেজাল মাস্ক বাণিজ্য!