দিনাজপুর: জেলার কয়েকটি উপজেলায় ৪০টি গ্রামের মুসল্লি সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে দিনাজপুর কমিউনিটি পার্টি সেন্টারে ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়াও দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার অমরপুর, ইসুবপুর এবং কাহারোল উপজেলায় ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা। দিনাজপুর পার্টি সেন্টারে মাওলানা সাইফুল্লাহ’র ইমামতিতে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এই জামাতে প্রায় ২ শতাধিক মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন। নিয়ম অনুয়ারী ইমাম কিছুক্ষণ বয়ান করেন। ঈদের নামাজের নিয়ম বলে দেন, এরপর নামাজ শুরু হয়। এরপর খুতবা পাঠ করেন। শেষে বিশেষ মোনাজাতের মধ্যদিয়ে ঈদের নামাজ শেষ হয়।
কোতয়ালী থানার ওসি মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, দিনাজপুরের পার্টি সেন্টারে অস্থায়ী ভিত্তিতে ঈদগাহ তৈরি করে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা।
পবিত্র ঈদুল ফিতরের জামাত
লক্ষ্মীপুর: সৌদির সঙ্গে মিল রেখে প্রতি বছরের ন্যায় লক্ষ্মীপুরের ১০টি গ্রামে বৃহস্পতিবার ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। জেলার সদর উপজেলার বশিকপুর, রামগঞ্জ উপজেলার নোয়াগাঁও, কাঞ্চনপুর, বারোঘরিয়া, বিঘা, হোটাটিয়া, শরশোই, জয়পুরা এবং রায়পুর উপজেলার কলাকোপা গ্রামের মানুষ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে এ দিনের প্রথম প্রহর থেকেই ঈদ উদযাপন শুরু করেছেন। সকাল ৯টা থেকেই এসব গ্রামে ঈদের নামাজের পৃথক জমাতে স্থানীয় মুসল্লিরা যোগ দেন। ৫ সহস্রাধিক মুসল্লি পৃথক জামাতে অংশ নিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিশিষ্ট সূফি সাধক হযরত মাওলানা ইসহাক (রাঃ) এর অনুসারী হিসেবে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখেই ঈদ উদযাপনসহ ধর্মীয় সকল আচার-অনুষ্ঠান পালন করে আসছেন তারা। গত ৪০ বছর ধরে লক্ষ্মীপুরের এসব গ্রামের মুসল্লিরা এ নিয়ম রক্ষা করে চলছেন। রাষ্ট্রীয় হিসেবে, এখানে আগাম ঈদ উদযাপন চললেও জেলার রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দসহ প্রতিবেশী গ্রামের বাসিন্দারাও তাদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়ে মিলত হন।
সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ
চট্টগ্রাম: জেলার আনোয়ারা উপজেলার দুই গ্রামসহ সাতকানিয়া, চন্দনাইশ, বাঁশখালী, পটিয়া, বোয়ালখালী, হাটহাজারী, রাউজান ও ফটিকছড়ির অর্ধশতাধিক গ্রামে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। সাতকানিয়া উপজেলার মির্জাখীল দরবার শরিফের অনুসারীরা সৌদির সঙ্গে মিল রেখে ঈদ পালন করেন। আনোয়ারা উপজেলার বরুমচড়া ও তৈলারদ্বীপ গ্রামে সকাল সাড়ে আটটায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। মির্জাখীল দরবার শরিফ মাঠে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
মৌলভীবাজার: জেলার শতাধিক পরিবার বৃহস্পতিবার ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। সকাল ৭টার দিকে মৌলভীবাজার শহরের সার্কিট হাউস এলাকার আহমেদ শাবিস্তা নামের বাসার ছাদে ঈদের এই জামাত অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে ইমামতি করেন আবদুল মাওফিক চৌধুরী। নামাজ শেষে দেশ-জাতির কল্যাণসহ ফিলিস্তিনের মুসলমানের জন্য দোয়া করা হয়।
লালমনিরহাট: সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে তিন ইউনিয়নের কয়েক শতাধিক পরিবার পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের মুন্সীপাড়া জামে মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা ইমান আলী।
সকাল থেকেই মসজিদে গিয়ে ঈদের নামাজ আদায়
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার, সুন্দ্রহবী, কাকিনা, চাপারহাট, চন্দ্রপুর, আমিনগঞ্জ ও মুন্সীপাড়া গ্রামের প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবারের মুসল্লিরা বৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন। প্রতি বছর সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে একদিন আগে রোজা ও ঈদ করেন এসব গ্রামের মুসল্লিরা। এদিকে করোনার কারণে ঈদের জামাত সরকারি নির্দেশনা মেনে মসজিদে নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা।
মুন্সীপাড়া জামে মসজিদের ইমাম ইমান আলী বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদে সকল মুসুল্লিরা জামাত আদায় করেছি।’ মুন্সীপাড়া ঈদগাহ মাঠের সভাপতি মাওলানা মাছুম বিল্লাহ্ বলেন, ‘সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে বিগত কয়েক বছর ধরে এই এলাকার মানুষ ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা, শবে-কদর, শবে মেরাজসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে আসছেন। সেই হিসেবে আজ ঈদুল ফিতর পালন করা হয়েছে।’
জামালপুর: জেলার সরিষাবাড়ীর দক্ষিণ বলারদিয়ার জামে মসজিদ ঈদগাহ মাঠে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে ১৩টি গ্রামের মানুষ ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন। দক্ষিণ বলারদিয়ার জামে মসজিদ মাঠে সকাল ৮টায় মাওলানা আজিম উদ্দিন ঈদুল ফিতরের নামাজে ইমামতি করেন।
ঈদুল ফিতরের জামাত
সাতক্ষীরা: সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে সাতক্ষীরার কয়েকটি এলাকায় আজ ঈদ উদযাপিত হচ্ছে। সকাল সাড়ে ৭টায় ভাদড়া, ভাড়–খালী, মাহমুদপুর ও বাউখোলাসহ ৬টি স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জামাতে নারীদের অংশগ্রহণও ছিল। এক যুগ ধরে সাতক্ষীরা সদর উপজেলাসহ ৩টি উপজেলার বেশকিছু এলাকায় সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপিত হচ্ছে।
বিরামপুর: সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার দুই ইউনিয়নে ঈদুল ফিতরের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নামাজে ১০টি গ্রামের প্রায় দেড় শতাধিক পরিবার অংশগ্রহণ করেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় বিনাইল ইউনিয়নের আয়ড়া বাজার জামে মসজিদে মাওলানা ইলিয়াস আলী ও জোতবানী ইউনিয়নের খয়েরবাড়ি-মির্জাপুর জামে মসজিদে মাওলানা দেলোয়ার হোসেন কাজী এ দুটি জামাতে নামাজ পড়ান।
খয়েরবাড়ি-মির্জাপুর জামে মসজিদে ঈদের জামাতের ইমাম মাওলানা দেলোয়ার হোসেন কাজী বলেন, সৌদি আরবের সাথে বাংলাদেশের সময়ের পার্থক্য মাত্র তিন ঘণ্টা। আর তিন ঘণ্টার কারণে পুরো দিনকে পাথর্ক্য করতে পারে না। তাই আমরা ঈদের নামাজ আদায় করলাম সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে। ১৯৯৭ সাল থেকে এভাবে নামাজ আদায়ের পরিকল্পনা থাকলেও ২০১৩ সাল থেকেই আমরা সৌদি আরবের সাথে মিল রেখে ঈদের নামাজ আদায় করছি। বিগত বছরের তুলনায় এবারের জামাতে মুসল্লি উপস্থিতি বেশি হয়েছে।