ঢাকা ১০:০৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সপ্তাহে যেভাবে দেয়া হবে কোটি টিকা

নিজস্ব প্রতিবেদক:: বিশ্বের যেসব স্থানে অধিক হারে করোনা টিকা নিশ্চিত করা গেছে, সেখানেই সংক্রমণের হার কমে এসেছে। এ লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় সারাদেশে টিকাদান কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। দেশব্যাপী বৃহৎ আকারে টিকাদান কার্যক্রম চালানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

জানা যায়, আগামী ৭ আগস্ট থেকে এক যোগে শহর থেকে গ্রাম সর্বত্র টিকার ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হবে। এই ক্যাম্পেইনের আওতায় এক সপ্তাহে এক কোটি মানুষকে টিকা প্রদান করবে বলে জানিয়েছে সরকার। তবে টিকার মজুদ সংকটসহ দ্রুত সময়ে বৃহৎ পরিসরে টিকা প্রদানের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ থাকলেও নিরবিচ্ছিন্নভাবে এই কার্যক্রম পরিচালনার আশা করছে সরকারের সংশ্লিষ্টরা। টিকার মজুদের যে সংকট রয়েছে তা শিগগিরই মিটে যাবে বলেও প্রত্যাশা তাদের।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর (এমএনসি এন্ড এএএইচ) ডা. মো. শামসুল হক  বলেন, ৭ আগস্ট থেকে এক সপ্তাহে এক কোটি মানুষকে করোনা টিকা দেয়া হবে। এ লক্ষ্যে সার্বিক প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। করোনা টিকাদানের বৃহৎ এ উৎসব পরিচালনার সার্বিক বিষয় মন্ত্রী (স্বাস্থ্য) প্রেস ব্রিফিং করে জানাবেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্বল্প সময়ে অধিক মানুষকে টিকা প্রদানের পরিকল্পনা সফল করতে সরকারের সংশ্লিষ্টদের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক হচ্ছে। বৈঠক পূর্বে টিকাদান কার্যক্রমে পরিচালনায় যেসব সমস্যা তৈরি হয়েছিল, সেগুলো মাথায় রেখে পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মতে, ভিটামিন ‘এ’ ক্যাম্পেইনসহ বৃহৎ পরিসরে বিভিন্ন ক্যাম্পেইন পরিচালনার পূর্বের সফল অভিজ্ঞতা রয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে করোনা টিকা পরিচালনা করা হবে। পাশাপাশি বিগত ৬ মাসে করোনা টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনায় যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তা কাজে লাগানো হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শহর থেকে গ্রাম সর্বত্র ক্যাম্পেইনের আওতায় থাকবে। সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রতি ওয়ার্ডে একটি স্থায়ী ও দুটি করে অস্থায়ী কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। উপজেলা ও পৌরসভাতেও প্রতিটি ওয়ার্ডে স্থাপিত হবে কেন্দ্র। এছাড়া গ্রাম পর্যায়ের মানুষদের এই ক্যাম্পেইনের আওতায় আনতে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদের কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। প্রত্যেকটি কেন্দ্রে থাকবে ভ্যাকসিনেশন টিম।

জানা গেছে, ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের মতো করোনা টিকা ক্যাম্পেইন সফল করার জন্য জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে অন্তর্ভূক্ত করা হবে। ক্যাম্পেইন সফল করতে মাইকিংসহ প্রচারণা চালানো হবে।

সূত্র জানায়, সারাদেশে বিদ্যমান ইপিআইয়ের দক্ষ জনবল দিয়ে ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হবে। উপজেলা পর্যায়ে বিদ্যমান সাব-ব্লক অনুযায়ী ভ্যাকসিনেশন সেশন পরিচালনা করা হবে। এক্ষেত্রে এক্সেল শিট-ভিত্তিক নিবন্ধনের মাধ্যমে ক্যাম্পেইন পরিচালিত হবে। এছাড়া সুরক্ষা ওয়েব পোর্টাল/অ্যাপের মাধ্যমে সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও গ্রামাঞ্চলের ওয়ার্ড ভিত্তিক নিবন্ধনের ব্যবস্থা করা হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকা, মডার্না, ফাইজার ও সিনোফার্মের টিকা দেওয়া হচ্ছে। প্রত্যেকটি টিকারই দুটি ডোজ নিতে হয়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে করোনার গণ-টিকাদান শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত (২আগস্ট, দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত) ৯১ লাখ ৮ হাজার ১৪৪ জনকে প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৫৮ লাখ ২০ হাজার ৩৩ জন, সিনোফার্মের ২৪ লাখ ৭৩ হাজার ৬৩১ জন, ফাইজার ৫০ হাজার ২৫৫ জন এবং মডার্নার ৭ লাখ ৬৪ হাজার ২২৫জন।

অন্যদিকে এখন অব্দি দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৪৩ লাখ ৫১ হাজার ৬৬৭ জন। এরমধ্যে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৪২ লাখ ৯৯ হাজার ৮৫৯ জন, সিনোফার্মের ৪৯ হাজার ৫৫৮ জন এবং ফাইজার ২২৫০ জন। এখনও কেউ মডার্নার দ্বিতীয় ডোজ নেননি। বর্তমানে শহর এলাকায় মডার্না আর শহরের বাইরে সিনোফার্মের টিকা দেয়া দেয়া হচ্ছে।

ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে সরকারের কেনা তিন কোটি অক্সফোর্ডের অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার মধ্যে গত ২৫ জানুয়ারি প্রথম চালানে ৫০ লাখ ডোজ, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০ লাখ ডোজ এবং ভারত সরকারের উপহার হিসেবে ২১ জানুয়ারি ও ২৬ মার্চ দুই দফায় ৪২ লাখ ডোজ আসে। এসব টিকা ব্যবহার করা হয়েছে। ভারত টিকা পাঠানো স্থগিত করলেও কোভ্যাক্সের আওতায় গত ২৪ জুলাই জাপান থেকে ২ লাখ ৪৫ হাজার ২০০ ডোজ এবং ৩১ জুলাই ৭ লাখ ৮১ হাজার ৩২০ ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা এসেছে। শিগগিরই অ্যাস্ট্রাজেনেকার আরো টিকা দেশে আসার প্রত্যাশা করছে সরকার।

এদিকে চীন থেকে কেনা সিনোফার্মের টিকার মধ্যে ৩ জুলাই ১০ লাখ ডোজ, ৪ জুলাই ১০ লাখ ডোজ, ১৭ জুলাই ২০ লাখ ডোজ এবং ২৯ ও ৩০ জুলাই ৩০ লাখ ডোজ টিকা এসেছে। এছাড়াও চীন সরকারের উপহার হিসেবে গত ১২ মে ৫ লাখ ডোজ ও ১৩ জুন ৬ লাখ ডোজ টিকা আসে। চীন থেকে কেনা সিনোফার্মের আরো টিকা আসার কথা রয়েছে।

এছাড়া কোভ্যাক্সের আওতায় মডার্নার টিকার ৩ জুলাই ১৩ লাখ ডোজ, ৪ জুলাই ১২ লাখ ডোজ, ১৯ জুলাই ৩০ লাখ ডোজ এসেছে। কোভ্যাক্সের আওতায় ফাইজার-বায়োএনটেক ৩১ মে ১ লাখ ৬২০ ডোজ টিকা আসে।

সরকারের টিকার রোডম্যাপ অনুযায়ী, চীন থেকে সিনোফার্মের ৩ কোটি, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৩ কোটি, কোভ্যাক্স থেকে ৭ কোটি ডোজ, রাশিয়ার টিকার ১ কোটি, জনসন অ্যান্ড জনসনের ৭ কোটি ডোজ আসবে। সব মিলিয়ে মোট প্রায় ২১ কোটি ডোজ টিকা আসবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য কম সময়ে বেশি সংখ্যক জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় আনার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে একটি চালান পৌঁছানোর আগেই বিদ্যমান মজুত টিকা দ্রুত ব্যবহার করে কোল্ড স্পেস ও ড্রাই স্টোর স্পেস ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস জানায়, সোমবার দুপুর আড়াটা পর্যন্ত টিকার জন্য ১ কোটি ৬১ লাখ ৮ জন মানুষ নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে নিবন্ধন করেছেন ১ কোটি ৫৮ লাখ ২৭ হাজার ৩৯৩ জন এবং পাসপোর্ট ব্যবহার করে নিবন্ধন করেছেন ২ লাখ ৭২ হাজার ৬১৫ জন।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

সপ্তাহে যেভাবে দেয়া হবে কোটি টিকা

আপডেট টাইম ০১:৩৫:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ অগাস্ট ২০২১
নিজস্ব প্রতিবেদক:: বিশ্বের যেসব স্থানে অধিক হারে করোনা টিকা নিশ্চিত করা গেছে, সেখানেই সংক্রমণের হার কমে এসেছে। এ লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় সারাদেশে টিকাদান কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। দেশব্যাপী বৃহৎ আকারে টিকাদান কার্যক্রম চালানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

জানা যায়, আগামী ৭ আগস্ট থেকে এক যোগে শহর থেকে গ্রাম সর্বত্র টিকার ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হবে। এই ক্যাম্পেইনের আওতায় এক সপ্তাহে এক কোটি মানুষকে টিকা প্রদান করবে বলে জানিয়েছে সরকার। তবে টিকার মজুদ সংকটসহ দ্রুত সময়ে বৃহৎ পরিসরে টিকা প্রদানের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ থাকলেও নিরবিচ্ছিন্নভাবে এই কার্যক্রম পরিচালনার আশা করছে সরকারের সংশ্লিষ্টরা। টিকার মজুদের যে সংকট রয়েছে তা শিগগিরই মিটে যাবে বলেও প্রত্যাশা তাদের।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর (এমএনসি এন্ড এএএইচ) ডা. মো. শামসুল হক  বলেন, ৭ আগস্ট থেকে এক সপ্তাহে এক কোটি মানুষকে করোনা টিকা দেয়া হবে। এ লক্ষ্যে সার্বিক প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। করোনা টিকাদানের বৃহৎ এ উৎসব পরিচালনার সার্বিক বিষয় মন্ত্রী (স্বাস্থ্য) প্রেস ব্রিফিং করে জানাবেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্বল্প সময়ে অধিক মানুষকে টিকা প্রদানের পরিকল্পনা সফল করতে সরকারের সংশ্লিষ্টদের মধ্যে দফায় দফায় বৈঠক হচ্ছে। বৈঠক পূর্বে টিকাদান কার্যক্রমে পরিচালনায় যেসব সমস্যা তৈরি হয়েছিল, সেগুলো মাথায় রেখে পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের মতে, ভিটামিন ‘এ’ ক্যাম্পেইনসহ বৃহৎ পরিসরে বিভিন্ন ক্যাম্পেইন পরিচালনার পূর্বের সফল অভিজ্ঞতা রয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে করোনা টিকা পরিচালনা করা হবে। পাশাপাশি বিগত ৬ মাসে করোনা টিকাদান কার্যক্রম পরিচালনায় যে অভিজ্ঞতা হয়েছে তা কাজে লাগানো হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শহর থেকে গ্রাম সর্বত্র ক্যাম্পেইনের আওতায় থাকবে। সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রতি ওয়ার্ডে একটি স্থায়ী ও দুটি করে অস্থায়ী কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। উপজেলা ও পৌরসভাতেও প্রতিটি ওয়ার্ডে স্থাপিত হবে কেন্দ্র। এছাড়া গ্রাম পর্যায়ের মানুষদের এই ক্যাম্পেইনের আওতায় আনতে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদের কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। প্রত্যেকটি কেন্দ্রে থাকবে ভ্যাকসিনেশন টিম।

জানা গেছে, ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইনের মতো করোনা টিকা ক্যাম্পেইন সফল করার জন্য জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে অন্তর্ভূক্ত করা হবে। ক্যাম্পেইন সফল করতে মাইকিংসহ প্রচারণা চালানো হবে।

সূত্র জানায়, সারাদেশে বিদ্যমান ইপিআইয়ের দক্ষ জনবল দিয়ে ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হবে। উপজেলা পর্যায়ে বিদ্যমান সাব-ব্লক অনুযায়ী ভ্যাকসিনেশন সেশন পরিচালনা করা হবে। এক্ষেত্রে এক্সেল শিট-ভিত্তিক নিবন্ধনের মাধ্যমে ক্যাম্পেইন পরিচালিত হবে। এছাড়া সুরক্ষা ওয়েব পোর্টাল/অ্যাপের মাধ্যমে সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও গ্রামাঞ্চলের ওয়ার্ড ভিত্তিক নিবন্ধনের ব্যবস্থা করা হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকা, মডার্না, ফাইজার ও সিনোফার্মের টিকা দেওয়া হচ্ছে। প্রত্যেকটি টিকারই দুটি ডোজ নিতে হয়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে করোনার গণ-টিকাদান শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত (২আগস্ট, দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত) ৯১ লাখ ৮ হাজার ১৪৪ জনকে প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৫৮ লাখ ২০ হাজার ৩৩ জন, সিনোফার্মের ২৪ লাখ ৭৩ হাজার ৬৩১ জন, ফাইজার ৫০ হাজার ২৫৫ জন এবং মডার্নার ৭ লাখ ৬৪ হাজার ২২৫জন।

অন্যদিকে এখন অব্দি দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৪৩ লাখ ৫১ হাজার ৬৬৭ জন। এরমধ্যে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৪২ লাখ ৯৯ হাজার ৮৫৯ জন, সিনোফার্মের ৪৯ হাজার ৫৫৮ জন এবং ফাইজার ২২৫০ জন। এখনও কেউ মডার্নার দ্বিতীয় ডোজ নেননি। বর্তমানে শহর এলাকায় মডার্না আর শহরের বাইরে সিনোফার্মের টিকা দেয়া দেয়া হচ্ছে।

ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে সরকারের কেনা তিন কোটি অক্সফোর্ডের অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার মধ্যে গত ২৫ জানুয়ারি প্রথম চালানে ৫০ লাখ ডোজ, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০ লাখ ডোজ এবং ভারত সরকারের উপহার হিসেবে ২১ জানুয়ারি ও ২৬ মার্চ দুই দফায় ৪২ লাখ ডোজ আসে। এসব টিকা ব্যবহার করা হয়েছে। ভারত টিকা পাঠানো স্থগিত করলেও কোভ্যাক্সের আওতায় গত ২৪ জুলাই জাপান থেকে ২ লাখ ৪৫ হাজার ২০০ ডোজ এবং ৩১ জুলাই ৭ লাখ ৮১ হাজার ৩২০ ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা এসেছে। শিগগিরই অ্যাস্ট্রাজেনেকার আরো টিকা দেশে আসার প্রত্যাশা করছে সরকার।

এদিকে চীন থেকে কেনা সিনোফার্মের টিকার মধ্যে ৩ জুলাই ১০ লাখ ডোজ, ৪ জুলাই ১০ লাখ ডোজ, ১৭ জুলাই ২০ লাখ ডোজ এবং ২৯ ও ৩০ জুলাই ৩০ লাখ ডোজ টিকা এসেছে। এছাড়াও চীন সরকারের উপহার হিসেবে গত ১২ মে ৫ লাখ ডোজ ও ১৩ জুন ৬ লাখ ডোজ টিকা আসে। চীন থেকে কেনা সিনোফার্মের আরো টিকা আসার কথা রয়েছে।

এছাড়া কোভ্যাক্সের আওতায় মডার্নার টিকার ৩ জুলাই ১৩ লাখ ডোজ, ৪ জুলাই ১২ লাখ ডোজ, ১৯ জুলাই ৩০ লাখ ডোজ এসেছে। কোভ্যাক্সের আওতায় ফাইজার-বায়োএনটেক ৩১ মে ১ লাখ ৬২০ ডোজ টিকা আসে।

সরকারের টিকার রোডম্যাপ অনুযায়ী, চীন থেকে সিনোফার্মের ৩ কোটি, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৩ কোটি, কোভ্যাক্স থেকে ৭ কোটি ডোজ, রাশিয়ার টিকার ১ কোটি, জনসন অ্যান্ড জনসনের ৭ কোটি ডোজ আসবে। সব মিলিয়ে মোট প্রায় ২১ কোটি ডোজ টিকা আসবে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য কম সময়ে বেশি সংখ্যক জনগোষ্ঠীকে টিকার আওতায় আনার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে একটি চালান পৌঁছানোর আগেই বিদ্যমান মজুত টিকা দ্রুত ব্যবহার করে কোল্ড স্পেস ও ড্রাই স্টোর স্পেস ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস জানায়, সোমবার দুপুর আড়াটা পর্যন্ত টিকার জন্য ১ কোটি ৬১ লাখ ৮ জন মানুষ নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে নিবন্ধন করেছেন ১ কোটি ৫৮ লাখ ২৭ হাজার ৩৯৩ জন এবং পাসপোর্ট ব্যবহার করে নিবন্ধন করেছেন ২ লাখ ৭২ হাজার ৬১৫ জন।