ঢাকা ০৬:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
দুর্নীতির অভিযোগে পীরগঞ্জ পাইলট স্কুলের প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত ড. মো. হারুনুর রশীদ পরিচালিত সেলিনা হোসেনের ‘কাকতাড়ুয়া বুধা’ মুক্তি পেয়েছে ভাল মানুষ থেকেইে ভাল মানুষ তৈরী হয়—ঠাকুরগাঁওয়ে আল-হাসানাহ স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরুস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে সাবেক এমপি জাহিদুর রহমান ঠাকুরগাঁয়ে যুবলীগ নেতার পলিথিন কারখানা বন্ধ, মালামাল জব্দ সাগর-রুনি হত্যা মামলা র‌্যাব থেকে তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইয়ের কাছে সংস্কারের পরেই নির্বাচন: ড. ইউনূস বশিরউদ্দীন ও ফারুকীকে কার বুদ্ধিতে নিলেন, প্রশ্ন মান্নার ভূমি সেবায় দুর্নীতি-অনিয়মে তাৎক্ষণিক শাস্তির ব্যবস্থা ভোট কারচুপির তদন্ত সাবেক ডিসি-এসপি-ইউএনওদের ঘুম হারাম আসিফ নজরুলকে হেনস্তা,দূতাবাসের কাউন্সেলরকে দেশে ফেরত, চাকরি হারাচ্ছেন স্টাফ

ঠাকুরগাঁও হাসপাতালে চুরি নিয়মিত রুটিন

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : আফরোজা বেগমের চোখ দিয়ে পানি ঝড়ছিল। এমন সময় পাশে গিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলো আপনার কি হয়েছে ? তিনি ডুকরে ডুকরে কাঁদছেন আর বলছেন আমার শেষ হয়ে গেছে। আমার খালা হাসপাতালে কিডনি জনিত সমস্যায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। আমি খালার ঔষধপত্র কেনার জন্য বাড়ি থেকে ৫ হাজার টাকা নিয়ে আসি।, সে সময় ডাক্তার ওয়ার্ডে রাউন্ড দিচ্ছিল। তালাবদ্ধ গেটের সামনে দাঁড়িয়েছিলাম। হঠাৎ দেখি আমার ভ্যানিটি ব্যাগের চেইন খোলা, সেখানে টাকা এবং  আমার পরিবারের জাতীয় পরিচয় পত্র ছিল, তা চুরি হয়ে গেছে।

ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে চুরির ঘটনা যেন এক নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপারে পরিনত হয়েছে। আর এর শিকার হচ্ছেন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজনসহ অসহায় মানুষেরা। তবে এর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদাসিনতাকে দায়ি করছেন তারা।

পঞ্চগড়ের বোদা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগীর স্বজন সাহেদা বেগম বলেন আমি খাবার পানি আনতে যাই, এসে দেখি হাসপাতালে ডাক্তার রাউন্ড দিচ্ছে। ওয়ার্ডের মূল গেট তালা বদ্ধ। সকলে দাঁড়িয়ে আছে, আমিও দাঁড়িয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ দেখি ভ্যানিটি ব্যাগের চেইন খুলে টাকা-পয়সা নিয়ে গেছে। আমি দুপুরে খাবো সেই টাকা নেই, এখন রোগীর জন্য ঔষধ কিনবো, না কি নিজে খাবো ? হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে যদি এমন ঘটনা ঘটে তাহলে আমরা যাবো কোথায় ?  

ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের বিহারিপাড়া মহল্লার বাসিন্দা রহিমা বেগম বলেন আমার বোন শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। আমি আমার খালাকে দেখার জন্য আসি, সে সময় ডাক্তার ওয়ার্ডে ভিজিট দিচ্ছিল। তালাবদ্ধ গেটের সামনে দাঁড়িয়েছিলাম। হঠাৎ দেখি আমার ভ্যানিটি ব্যাগের চেইন খোলা, সেখানে টাকা পয়সা যা ছিল সব নিয়ে গেছে।

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার রফিকুল ইসলাম বলেন আমার ভাই হাসপাতালে ভর্তি আছে। সে জন্য আমি কয়েকদিন ধরে আছি । কিন্তু আজ দুপুরে ঔষধ কিনে চার তলায় লিফটে থেকে নামার সময় দেখি আমার মানি ব্যাগ নেই। আমরা গরীব মানুষ চিকিৎসা নিতে এসে যদি এমন অবস্থা হয়, তাহলে আমরা যাবো কোথায় ?

মুসলিম নগর মাদ্রাসাপাড়া মহল্লার বাসিন্দা সহিদুল ইসলাম বলেন শুধু আজকে নয়, প্রতিদিনই চুরির ঘটনা ঘটেছে। আর এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন রোগীর স্বজনরা। একই কথা বলেন হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী জাকির হোসেন, আল-আমিনসহ অনেকে।

শহরের সরকাপাড়া মহল্লার ইব্রাহীম আলম বলেন যেখানে নিয়মিত মানুষ সেবা নিচ্ছে, সেখানে দৃষ্টি দিয়ে না দিয়ে কিছু জায়গায় আজাইরা সরকার কোটি কোটি টাকা গোচ্চা দিচ্ছে। শহরের সব জায়গায় সিসি ক্যামেরা আছে কিন্তু হাসপাতালেই নেই। চুরির বিষয়টা যেন কোন বিষয়েই মনে করছেন না কর্তৃর্পক্ষ। তিনি বলেন সহায় সম্বল হারানো মানুষদের কথা চিন্তা করে কর্তৃপক্ষ যেন প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। একই কথা বলেন শহরের সোহেল ইসলাম, রমজান আলীসহ অনেকে।

ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. ফিরোজ জামান জুয়েল বলেন আমি এখন ব্যস্ত আছি, আমাদের ডিরেক্টর মহোদয় আসছেন, পরে আপনাকে ফোন দিয়ে জেনে নেবো।  

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

দুর্নীতির অভিযোগে পীরগঞ্জ পাইলট স্কুলের প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত

ঠাকুরগাঁও হাসপাতালে চুরি নিয়মিত রুটিন

আপডেট টাইম ১২:২৮:৩৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : আফরোজা বেগমের চোখ দিয়ে পানি ঝড়ছিল। এমন সময় পাশে গিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলো আপনার কি হয়েছে ? তিনি ডুকরে ডুকরে কাঁদছেন আর বলছেন আমার শেষ হয়ে গেছে। আমার খালা হাসপাতালে কিডনি জনিত সমস্যায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। আমি খালার ঔষধপত্র কেনার জন্য বাড়ি থেকে ৫ হাজার টাকা নিয়ে আসি।, সে সময় ডাক্তার ওয়ার্ডে রাউন্ড দিচ্ছিল। তালাবদ্ধ গেটের সামনে দাঁড়িয়েছিলাম। হঠাৎ দেখি আমার ভ্যানিটি ব্যাগের চেইন খোলা, সেখানে টাকা এবং  আমার পরিবারের জাতীয় পরিচয় পত্র ছিল, তা চুরি হয়ে গেছে।

ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে চুরির ঘটনা যেন এক নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপারে পরিনত হয়েছে। আর এর শিকার হচ্ছেন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজনসহ অসহায় মানুষেরা। তবে এর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদাসিনতাকে দায়ি করছেন তারা।

পঞ্চগড়ের বোদা থেকে চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগীর স্বজন সাহেদা বেগম বলেন আমি খাবার পানি আনতে যাই, এসে দেখি হাসপাতালে ডাক্তার রাউন্ড দিচ্ছে। ওয়ার্ডের মূল গেট তালা বদ্ধ। সকলে দাঁড়িয়ে আছে, আমিও দাঁড়িয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ দেখি ভ্যানিটি ব্যাগের চেইন খুলে টাকা-পয়সা নিয়ে গেছে। আমি দুপুরে খাবো সেই টাকা নেই, এখন রোগীর জন্য ঔষধ কিনবো, না কি নিজে খাবো ? হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে যদি এমন ঘটনা ঘটে তাহলে আমরা যাবো কোথায় ?  

ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের বিহারিপাড়া মহল্লার বাসিন্দা রহিমা বেগম বলেন আমার বোন শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। আমি আমার খালাকে দেখার জন্য আসি, সে সময় ডাক্তার ওয়ার্ডে ভিজিট দিচ্ছিল। তালাবদ্ধ গেটের সামনে দাঁড়িয়েছিলাম। হঠাৎ দেখি আমার ভ্যানিটি ব্যাগের চেইন খোলা, সেখানে টাকা পয়সা যা ছিল সব নিয়ে গেছে।

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার রফিকুল ইসলাম বলেন আমার ভাই হাসপাতালে ভর্তি আছে। সে জন্য আমি কয়েকদিন ধরে আছি । কিন্তু আজ দুপুরে ঔষধ কিনে চার তলায় লিফটে থেকে নামার সময় দেখি আমার মানি ব্যাগ নেই। আমরা গরীব মানুষ চিকিৎসা নিতে এসে যদি এমন অবস্থা হয়, তাহলে আমরা যাবো কোথায় ?

মুসলিম নগর মাদ্রাসাপাড়া মহল্লার বাসিন্দা সহিদুল ইসলাম বলেন শুধু আজকে নয়, প্রতিদিনই চুরির ঘটনা ঘটেছে। আর এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন রোগীর স্বজনরা। একই কথা বলেন হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী জাকির হোসেন, আল-আমিনসহ অনেকে।

শহরের সরকাপাড়া মহল্লার ইব্রাহীম আলম বলেন যেখানে নিয়মিত মানুষ সেবা নিচ্ছে, সেখানে দৃষ্টি দিয়ে না দিয়ে কিছু জায়গায় আজাইরা সরকার কোটি কোটি টাকা গোচ্চা দিচ্ছে। শহরের সব জায়গায় সিসি ক্যামেরা আছে কিন্তু হাসপাতালেই নেই। চুরির বিষয়টা যেন কোন বিষয়েই মনে করছেন না কর্তৃর্পক্ষ। তিনি বলেন সহায় সম্বল হারানো মানুষদের কথা চিন্তা করে কর্তৃপক্ষ যেন প্রয়োজনিয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। একই কথা বলেন শহরের সোহেল ইসলাম, রমজান আলীসহ অনেকে।

ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. ফিরোজ জামান জুয়েল বলেন আমি এখন ব্যস্ত আছি, আমাদের ডিরেক্টর মহোদয় আসছেন, পরে আপনাকে ফোন দিয়ে জেনে নেবো।