তালেবানের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার গঠনের জন্য মোল্লাহ বারাদার জিহাদী নেতৃবৃন্দ ও রাজনীতিবিদদের সাথে কথা বলবেন।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়, কয়েক সপ্তাহের মধ্যে রাষ্ট্র পরিচালনায় একটি নতুন সরকার কাঠামো প্রকাশ করবে আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালেবান। শনিবার সশস্ত্র সংগঠনটির এক মুখপাত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ তথ্য জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত আশরাফ গানি সরকারকে হটিয়ে গত রোববার কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। পরে সরকার গঠন নিয়ে তারা সাবেক আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। তবে কবে তালেবানরা সরকার গঠন করবে, তার সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ এখনো জানা যায়নি।
ইতোমধ্যে তালেবান ঘোষণা দিয়েছে, তাদের দেশ গণতান্ত্রিক উপায়ে চলবে না; ইসলামী শরিয়া আইনে চলবে। নারী অধিকার ইস্যুতে তালেবানদের বক্তব্য, ইসলামী শরিয়ার ভিত্তিতেই আফগানিস্তানে নারীর অধিকার দেয়া হবে।
এক তালেবান কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘তালেবানদের মধ্যে আইনী, ধর্মীয় এবং পররাষ্ট্রনীতি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি প্রশাসনিক পরিকাঠামো আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে প্রকাশ করা হবে।’
তালেবানের হাতে কাবুলের পতনের তিনদিনের মধ্যেই আফগানিস্তানে ফিরেন সংগঠনটির রাজনৈতিক শাখার প্রধান মোল্লাহ আব্দুল গনি বারাদার। কাতারের দোহা থেকে একটি বিশেষ বিমানে মঙ্গলবার আরও কয়েকজন জ্যেষ্ঠ তালেবান নেতাকে নিয়ে তিনি কান্দাহারে নামেন।
মার্কিন হামলার মুখে ২০০১ সালে তালেবানের অন্য নেতাদের সাথে প্রথমে কাবুল, তারপর দেশ ছেড়ে পাকিস্তানে পালান মোল্লাহ বারাদার। এরপর সন্ত্রাসের মামলায় আট বছর পাকিস্তানের কারাগারে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত দীর্ঘ ২০ বছরের নির্বাসিত জীবন আর কারাবাসের পর মঙ্গলবার তিনি দেশে ফিরেন।
বিবিসি বলছে, কাবুলে নতুন সরকার যে মূলত তালেবানের সরকার হবে বা সেই সরকারে যে তালেবানেরই একচেটিয়া প্রাধান্য থাকবে – এ নিয়ে তেমন কোন সন্দেহ আর নেই। তালেবানদের সঙ্গে হাক্কানি নেটওয়ার্কের নেতারাও সম্ভাব্য সরকারে থাকতে পারেন।
যদিও হিবাতুল্লাহ আখুনজাদা তালেবানের আমির বা শীর্ষ নেতা, কিন্তু এখন পর্যন্ত যে ইঙ্গিত তা হলো – কাবুলে আসন্ন সরকারের প্রধান হতে চলেছেন তার ডেপুটি মোল্লাহ বারাদার।
রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে চলে যাওয়ার পর রোববার দোহায় বসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তালেবানের সাদা পতাকা সামনে নিয়ে বারাদারই যুদ্ধে বিজয়ের ঘোষণা দেন। বিজয়ের এ ঘোষণা কিন্তু হিবাতুল্লাহ আখুনজাদার কাছ থেকে আসেনি।
কাবুলে রাস্তায় তালেবানের সশস্ত্র সদস্যরা। ছবি: এপি
যুক্তরাষ্ট্রে ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডের আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক এবং আফগান রাজনীতি ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক ড. আসিম ইউসুফজাই বিবিসিকে বলেন, ‘আফগানিস্তানে তালেবানের সরকারই আসছে এবং বারাদারই যে তাদের ইসলামী আমিরাতের প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন, এ নিয়ে আমার খুব একটা সন্দেহ নেই।