বৃহস্পতিবার প্রতিটি ডিমের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১২ টাকা, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৬৫ টাকা এবং প্রতি কেজি আলু সর্বোচ্চ ৩৬ টাকা নির্ধারণ করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে বাজারে একটি পণ্যও নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না।
স্থানীয় বাজারে দাম কমাতে ৪ প্রতিষ্ঠানকে ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার।
কোম্পানি ৪টি হল– মেসার্স মিম এন্টারপ্রাইজ, টাইগার এন্টারপ্রাইজ, প্রাইম এনার্জি এবং অর্ণব ট্রেডিং। রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার প্রতিটি ডিমের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১২ টাকা, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৬৫ টাকা এবং প্রতি কেজি আলু সর্বোচ্চ ৩৬ টাকা নির্ধারণ করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তবে বাজারে একটি পণ্যও নির্ধারিত দামে বিক্রি হচ্ছে না।
ঢাকার খুচরা বাজারে দেখা গেছে, প্রতি ডজন ডিম ১৫০ টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছে না। সে হিসেবে প্রতিটি ডিম ১২.৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি পেঁয়াজের দাম ৯০ টাকা থেকে কিছুটা কমে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সেই হিসেবে সরকার নির্ধারিত দামের তুলনায় এখনো ২৩ শতাংশ বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে। কোথাও কোথাও অবশ্য ৮৫ টাকাতেও পেঁয়াজ বিক্রি করতে দেখা গেছে।
কয়েক মাস আগে ডিমের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে বাজার মনিটরিংয়ের ঘোষণা দেওয়ার পর আবারও কমতে শুরু করে এই নিত্যপণ্যের দাম। তবে তখন ডিমের দাম বেড়ে প্রতি পিস ১৫ টাকা পর্যন্ত হয়েছে। যদিও সরকার প্রতি পিস ডিমের দাম নির্ধারণ করেছে ১২ টাকা।
বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ গণমাধ্যমকে জানান, যে চারটি কোম্পানিকে ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে তাদেরকে নির্দিষ্ট করে সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি। তবে যত দ্রুত সম্ভব আমদানি করতে বলা হয়েছে।
আমদানি করা ডিম ১২ টাকার বেশি দামে বিক্রি করা যাবে না বলেও জানান সচিব।
এছাড়া আলুর দামে কোন পরিবর্তন নেই। প্রতি কেজি আলু বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। যা সরকার নির্ধারিত দামের তুলনায় ৩৮ শতাংশ বেশি।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সবচেয়ে বেশি অভিযান পরিচালনা করছে সারাদেশের আলুর হিমাগারগুলোতে। কিন্তু তাতেও কোন ধরনের প্রভাব পড়ছে না।
মুন্সিগঞ্জের এক হিমাগারে ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযানে রসো বাবু নামের একজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান। সে সময় এই আলুর বেপারী জানান, তিনি মাসখানেক আগেও আলু ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন। কিন্তু কোন ধরনের খরচ না বাড়লেও কী কারণে এই আলু ৩৭ টাকা কেজি দরে বর্তমানে বিক্রি করছেন তার ব্যাখ্যা চাওয়া হলে- তা তিনি দিতে পারেননি।
পরবর্তীতে হিসেব করে দেখা যায়, এই মৌসুমে ১০ হাজার বস্তা হিমাগারে রেখে তিনি অতিরিক্ত ৬০ লাখ টাকা বাড়তি মুনাফা করেছেন। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসকের তত্ত্বাবধানে হিমাগারে থাকা তার আলুগুলো ২৭ টাকা দরে বিক্রির এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান গণমাধ্যমকে জানান, রসো বাবুর মত ব্যবসায়ীরাই সারাদেশে আলুর বাজারে অস্থিরতা তৈরি করেছেন। অথচ আলুর যথেষ্ট মজুদ রয়েছে।