ঢাকা ০৬:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

নিমগাছের গুন

মোসলিমা খাতুন,সারাদিন ডেস্ক:: নিমগাছের প্রায় প্রতিটি অংশই কাজে লাগে। রূপচর্চায়ও রয়েছে নিমগাছের কিছু অংশের ব্যবহার। নিমপাতার স্বাদ তেতো হলেও গুণে কিন্তু মিষ্টি। ত্বকের নানা সমস্যার সমাধানে এটি ব্যবহার করা হয়। বিশেষত জীবাণুর কারণে হওয়া বিভিন্ন সমস্যায় দারুণ কার্যকর এই পাতা। এমনটাই জানালেন বিশেষজ্ঞরা।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চর্মরোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এস এম বখতিয়ার কামাল বলেন, একজিমা, ফোড়ার মতো গোটা (বয়েল), ত্বকের আলসার, রিং ওয়ার্ম নামক ছত্রাকের সংক্রমণসহ নানা সমস্যায় নিমপাতা কার্যকর। এমনকি ত্বক পুড়ে যাওয়ার পরও যদি পোড়া অংশে জীবাণুর সংক্রমণ হয়, নিমপাতা উপকারী ভূমিকা রাখবে।

হারমনি স্পা-র আয়ুর্বেদিক রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা জানালেন, অ্যান্টিসেপটিক গুণের কারণেই এই প্রাকৃতিক উপাদানটি ব্রণ, ফুসকুড়ি বা চুলকানির মতো সমস্যায় ব্যবহৃত হয়।

ত্বকের সমস্যায়

ত্বকের নানা সমস্যা সমাধানে নিমপাতা বেটে নিয়ে লাগানো যায়। চাইলে আবার নিমপাতা রোদে শুকিয়ে নিতে পারেন। রোদে রাখতে রাখতে একেবারে মচমচে হয়ে গেলে ব্লেন্ডারে গুঁড়া করে বয়ামে রেখে দিন। প্রয়োজনমতো সেখান থেকে খানিকটা নিমপাতা গুঁড়া নিয়ে পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে ব্যবহার করতে পারেন।

সমপরিমাণ নিমপাতা ও কাঁচা হলুদ একসঙ্গে বেটে ব্রণের স্থানে লাগাতে পারেন। ব্রণ কমে যাওয়ার পাশাপাশি ত্বকের উজ্জ্বলতাও বাড়বে।

যেভাবেই ব্যবহার করা হোক না কেন, আক্রান্ত স্থান ছাড়া অন্য কোনো স্থানে নিমপাতা ব্যবহার করা উচিত নয়। যেমন: ব্রণের জন্য ব্যবহার করলে শুধু ব্রণের স্থানেই লাগাতে হবে, পুরো মুখে নয়।

ত্বকে নিমপাতা লাগানোর ২০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। আক্রান্ত স্থান ভালো হয়ে যাওয়া পর্যন্ত নিয়মিত নিমপাতা লাগানো যায়।

স্নানে নিমপাতা

নিমপাতা মেশানো পানিতে গোসল করলে ত্বকের রোগ-জীবাণু থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। বালতির পানিতে কিছু নিমপাতা মিশিয়ে নিয়ে গোসলের শেষে পুরো পানিটুকু মাথায় ও শরীরে ঢেলে নিন। ত্বকে সমস্যা না থাকলেও সপ্তাহে একবার এভাবে নিমপাতা মেশানো পানি ব্যবহার করতে পারেন গোসলের সময়।

মাথার ত্বকে ছোট গোটা

নিমপাতা বাটা লাগাতে পারেন আক্রান্ত স্থানে। চাইলে টকদইয়ের সঙ্গে মিশিয়েও নিমপাতা ব্যবহার করা যায়। এ ক্ষেত্রে ২ টেবিল চামচ টকদইয়ের সঙ্গে এক টেবিল চামচ নিমপাতা বাটা দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিতে পারেন। তবে এ ক্ষেত্রে আক্রান্ত স্থানের আশপাশের অন্য কোনো স্থানে নিমপাতা লাগানো উচিত নয়। এ ছাড়া নিমপাতার রস আর নারকেল তেল একসঙ্গে মিশিয়ে নিয়ে মাথার ত্বকের নির্দিষ্ট স্থানে মালিশ করতে পারেন।

নিমপাতা নিয়মিত?

দীর্ঘদিন নিয়মিত নিমপাতার ব্যবহার ত্বকের জন্য ভালো নয় বলেই জানালেন রাহিমা সুলতানা। এটিকে বরং শরীর ও মাথার ত্বকের নানা সমস্যার সমাধান হিসেবেই গ্রহণ করা উচিত। কোনো সমস্যা না থাকলে নিমপাতা বাটা ব্যবহার না করাই ভালো।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

ঠাকুরগাঁয়ে যুবলীগ নেতার পলিথিন কারখানা বন্ধ, মালামাল জব্দ

নিমগাছের গুন

আপডেট টাইম ০৭:৩৫:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ মার্চ ২০১৮

মোসলিমা খাতুন,সারাদিন ডেস্ক:: নিমগাছের প্রায় প্রতিটি অংশই কাজে লাগে। রূপচর্চায়ও রয়েছে নিমগাছের কিছু অংশের ব্যবহার। নিমপাতার স্বাদ তেতো হলেও গুণে কিন্তু মিষ্টি। ত্বকের নানা সমস্যার সমাধানে এটি ব্যবহার করা হয়। বিশেষত জীবাণুর কারণে হওয়া বিভিন্ন সমস্যায় দারুণ কার্যকর এই পাতা। এমনটাই জানালেন বিশেষজ্ঞরা।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চর্মরোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এস এম বখতিয়ার কামাল বলেন, একজিমা, ফোড়ার মতো গোটা (বয়েল), ত্বকের আলসার, রিং ওয়ার্ম নামক ছত্রাকের সংক্রমণসহ নানা সমস্যায় নিমপাতা কার্যকর। এমনকি ত্বক পুড়ে যাওয়ার পরও যদি পোড়া অংশে জীবাণুর সংক্রমণ হয়, নিমপাতা উপকারী ভূমিকা রাখবে।

হারমনি স্পা-র আয়ুর্বেদিক রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা জানালেন, অ্যান্টিসেপটিক গুণের কারণেই এই প্রাকৃতিক উপাদানটি ব্রণ, ফুসকুড়ি বা চুলকানির মতো সমস্যায় ব্যবহৃত হয়।

ত্বকের সমস্যায়

ত্বকের নানা সমস্যা সমাধানে নিমপাতা বেটে নিয়ে লাগানো যায়। চাইলে আবার নিমপাতা রোদে শুকিয়ে নিতে পারেন। রোদে রাখতে রাখতে একেবারে মচমচে হয়ে গেলে ব্লেন্ডারে গুঁড়া করে বয়ামে রেখে দিন। প্রয়োজনমতো সেখান থেকে খানিকটা নিমপাতা গুঁড়া নিয়ে পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে ব্যবহার করতে পারেন।

সমপরিমাণ নিমপাতা ও কাঁচা হলুদ একসঙ্গে বেটে ব্রণের স্থানে লাগাতে পারেন। ব্রণ কমে যাওয়ার পাশাপাশি ত্বকের উজ্জ্বলতাও বাড়বে।

যেভাবেই ব্যবহার করা হোক না কেন, আক্রান্ত স্থান ছাড়া অন্য কোনো স্থানে নিমপাতা ব্যবহার করা উচিত নয়। যেমন: ব্রণের জন্য ব্যবহার করলে শুধু ব্রণের স্থানেই লাগাতে হবে, পুরো মুখে নয়।

ত্বকে নিমপাতা লাগানোর ২০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। আক্রান্ত স্থান ভালো হয়ে যাওয়া পর্যন্ত নিয়মিত নিমপাতা লাগানো যায়।

স্নানে নিমপাতা

নিমপাতা মেশানো পানিতে গোসল করলে ত্বকের রোগ-জীবাণু থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। বালতির পানিতে কিছু নিমপাতা মিশিয়ে নিয়ে গোসলের শেষে পুরো পানিটুকু মাথায় ও শরীরে ঢেলে নিন। ত্বকে সমস্যা না থাকলেও সপ্তাহে একবার এভাবে নিমপাতা মেশানো পানি ব্যবহার করতে পারেন গোসলের সময়।

মাথার ত্বকে ছোট গোটা

নিমপাতা বাটা লাগাতে পারেন আক্রান্ত স্থানে। চাইলে টকদইয়ের সঙ্গে মিশিয়েও নিমপাতা ব্যবহার করা যায়। এ ক্ষেত্রে ২ টেবিল চামচ টকদইয়ের সঙ্গে এক টেবিল চামচ নিমপাতা বাটা দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিতে পারেন। তবে এ ক্ষেত্রে আক্রান্ত স্থানের আশপাশের অন্য কোনো স্থানে নিমপাতা লাগানো উচিত নয়। এ ছাড়া নিমপাতার রস আর নারকেল তেল একসঙ্গে মিশিয়ে নিয়ে মাথার ত্বকের নির্দিষ্ট স্থানে মালিশ করতে পারেন।

নিমপাতা নিয়মিত?

দীর্ঘদিন নিয়মিত নিমপাতার ব্যবহার ত্বকের জন্য ভালো নয় বলেই জানালেন রাহিমা সুলতানা। এটিকে বরং শরীর ও মাথার ত্বকের নানা সমস্যার সমাধান হিসেবেই গ্রহণ করা উচিত। কোনো সমস্যা না থাকলে নিমপাতা বাটা ব্যবহার না করাই ভালো।