আজম রেহমান,সারাদিন ডেস্ক::জাতীয় নির্বাচনের পর এবারে আসন্ন উপজেলা পরিষদের নির্বাচন নিয়ে মাঠে নামতে শুরু করেছেন বিভিন্ন দলের নেতা-কর্মীরা। একাদশ জাতীয় নির্বাচনের সারাদেশের পরিবেশ বিবেচনায় বিএনপি এই সরকারের অধীনে আর কোন নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবেনা বলে বিএনপি মহাসচিব ঘোষনা দিলেও স্থানীয় নেতা-কর্মীরা এ আসনে জাতীয় নির্বাচনে জয় পাওয়ায় অন্যান্য নির্বাচনের প্রতিও তারা অধিক আশাবাদী হয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বিএনপি’র বর্তমান উপজলা চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম জিয়া ইতিমধ্যে গ্রাম গঞ্জ চষে বেড়াচ্ছেন আবারো নির্বাচিত হবার আশায়। ব্যাক্তিগত ইমেজ ভাল থাকায় এবং জনগনের মাঝে গ্রহনযোগ্যতা তৈরী হওয়ায় তিনি আশাাবাদী পূন:র্নিবাচিত হবেন। আর এ উপজেলায় সরকারী দল আওয়ামীলীগের ভোট ব্যাংক এবং সাংগাঠনিক অবস্থা ভাল থাকায় তারাও আশা করছেন বিগত নির্বাচনে হেরে যাওয়া থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীতে উপজেলা চেয়ারম্যান পদটি নিজেদের ঘড়ে তুলবেন। তবে আওয়ামীলীগ বড় দল হওয়ায় এখানে প্রার্থী চুড়ান্ত করনে বরাবরই সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। ফলে নিজেদের মধ্যে মন কষাকষি ভোটে বিরুপ প্রভাব ফেলে থাকে।
২০১৪ইং সালের ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা ইকরামুল হককে কয়েক হাজার ভোটে হারিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন বিএনপি’র উপজেলা কমিটির সম্পাদক প্রভাষক জিয়াউল ইসলাম জিয়া। এই নির্বাচনে জাতীয় পার্টি প্রার্থী না দেয়ায় বিএনপি প্রার্থীর জয় অনেকটা সহজ হয়।
এ উপজেলায় আ’লীগ ও আ’লীগ বিরোধী ভোট প্রচলিত। প্রায় প্রতিটি নির্বাচনে আওয়ামীলীগর বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ হতে দেখা যায় বিরোধী শিবিরের ভোটার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে। বিশেষ করে বিএনপি’র সাথে জামায়াত ও জাতীয় পার্টির মধ্যে একটা অলিখিত জোট সৃষ্টি হয়। সারাদেশের জোট মহাজোটের বাইরে স্থানীয় এই ঐক্য দীর্ঘীদন ধরেই লক্ষনীয়। এবারের একাদশ জাতীয় নির্বাচনেও পীরগঞ্জ পাইলট হাইস্কুল ভোট কেন্দ্রে আ’লীগ ছাত্রলীগ কর্মীদের হাতে জাপা প্রার্থী হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ হেনস্থা হবার পর পাশ্ববর্তী রানীশংকৈল উপজেলায় তার সমর্থকদের বিএনপিতে ভোট দেয়ার জন্য নির্দেশ দেন। ফলে রানীশংকৈল উপজেলায় বিপুল ভোটে বিএনপি পার্থী এগিয়ে যায় এবং নির্বাচিত হন।
উপজেলা নির্বাচনের বৈতরনী পার হতে হলে এ উপজেলায় হেবিওয়েট প্রার্থী প্রয়োজন হবে। একসাখে প্রার্থীর পরিচিতি, এলাকায় গ্রহনযোগ্যতা, ভোট ব্যাংক, দলীয় সহযোগীতা এবং সর্বপরি সবদিক মেনটেন করার উপরই বিজয় নির্ভর করবে।প্রার্থী নির্বাচনে ভুল হলে আবারো বিএনপির ঘরে যাবে আসনটি। তাই এসব দিক মাথায় রেখে তারুন্যের প্রতিক, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও ঠিকাদার উপজেলা আ’লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক রেজওয়ানুল হক বিপ্লব ইতিমধ্যে মাঠে নেমেছেন এবং ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করা শুরু করেছেন।
এক সাাক্ষাতকারে এই তরুন নেতা বলেন দলীয় মনোনয়ন পেলে তিনি নির্বিঘেœ নির্বাচিত হবেন। রেজওয়ানুল হক বিপ্লব পীরগঞ্জ সরকারী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস থাকা অবস্থায় সাংগাঠনিকভাবে বিভিন্ন কার্যক্রমে সফলতা দেখিয়ে এলাকায় সাধারন মানুষের নজরে আসেন। এরপর থেকে তিনি রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে জড়িয়ে এলাকাবাসীর সুখ দু:খে এগিয়ে যান। তিনি বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত। তিনি পীরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সহ.সভাপতি ছিলেন। এছাড়া বর্তমানে উপজেলা আ’লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বের পাশাপাশি ঠাকুরগাঁও জেলা কমিউনিটি পুলিশের সদস্য সচিব হিসেবে প্রায় ১ যুগ ধরে জেলার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের সহযোগী হয়ে কাজ করছেন। এছাড়া তিনি উপজেলার ইট ভাটা মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক, বথপালিগাও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি হিসেবে জেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যুৎসাহী নির্বাচিত হন। তিনি প্রায় ২ যুগ ধরে স্থানীয় পাবলিক ক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বথপালিগাও মাদ্রাসা ও এতিমখানার সভাপতি, সাংস্কৃতিক সংগঠন পীরগঞ্জ পাঠচক্রের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক, ঠাকুরগাঁও চেম্বার এন্ড কমার্স ইন্ডাষ্ট্রির পরিচালক, এলাকার একমাত্র পত্রিকা সাপ্তাহিক প্রান্তকথা’র সম্পাদক ও প্রকাশক, উপজেলা ট্রাক্টর মালিক সমিতি ও পীরগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক এবং ইকরা মহিলা কওমি মাদ্রাসা, ও জয়কৃষ্টপুর জামে মসজিদের সভাপতি হিসেবে দীর্ঘীদন ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এছাড়াও এলাকার অসংখ্য সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িয়ে নানাভাবে সাহায্য সহযোগীতা করে সমাজসেবায় অবদান রেখে চলেছেন।
এক স্বাক্ষাতকারে তিনি সংবাদ সারাদিন কে বলেন, দলের মনোনয়ন পেলে তিনি জয়লাভ করবেন এবং উপজেলাবাসীর জন্য উন্নত সেবা এবং উন্নত আধুনিক জীবনযাপনের লক্ষে কাজ করবেন এবং দেশরত্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে নিজেকে উৎসর্গ করবেন।