মাউশি সূত্র জানায়, সারাদেশে ১০ হাজার ৫০৩ জন সহকারী শিক্ষক বিভিন্ন বিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন। এদের মধ্যে ৫ হাজার দুশোর বেশি শিক্ষককে সিনিয়র শিক্ষক পদে পদোন্নতি দিতে গত ১ ডিসেম্বর অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে ৬ হাজার ১৫৫ সহকারী শিক্ষকের খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয়। তবে এরপর থেকেই খসড়া তালিকা নিয়ে শিক্ষকদের নানা অভিযোগ আসতে থাকে।
বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহাব উদ্দীন সালমী বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, খসড়া তালিকায় এ বিধিমালা অনুসরণ না করায় এখানে অনেকের নাম বাদ পড়েছে। এখন পদোন্নতির জন্য ৮ বছরের শিক্ষকতা ও বিএড চাওয়া হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এখানে নানা অস্পষ্টতা আছে যা দূর করে যারা পদোন্নতির যোগ্য তারাই পদোন্নতি পাবেন।
তবে রাজধানীর প্রসিদ্ধ একটি স্কুলের সহকারী শিক্ষক বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, আত্তীকৃত বিদ্যালয়ের ৯ জন শিক্ষকের নাম খসড়া তালিকায় প্রকাশ করা হয়েছে যার কোন ভিত্তিই নেই।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সরকারি হাই স্কুলের একাধিক শিক্ষক বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, যারা সময়মত বিএড করেননি তাদের ক্ষেত্রে কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
এছাড়াও ৫ বছরের মধ্যে যেসব শিক্ষক ভর্তি হয়েছেন কিন্তু ফল প্রকাশিত হয়েছে ৫ বছর পর তাদের ক্ষেত্রে কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ এবং আদালতে বিএড সংক্রান্ত রায় বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
মাউশির এক কর্মকর্তা নাম না প্রকাশ করার শর্তে বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, খসড়া পদোন্নতির তালিকায় ৬১৪৫ থেকে ৬১৫৩ পর্যন্ত আত্তীকৃত শিক্ষককে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সংবিধানের ৭ম সংশোধনীর রায়ের পর ১৯৮৩ সালের আত্তীকরণ বিধিমালা বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু বাতিল বিধিমালায় আত্তীকৃতদের অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে মাউশির একটি স্থিতি অবস্থা ২০২০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর জারি হয়।
সিনিয়র শিক্ষক পদে নাম অর্ন্তভুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগ জানিয়ে এক শিক্ষক বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ২০১১ সালের মে মাসের ১৫ তারিখে ১৯৮৩ সালের বিধিমালা বাতিল হয়। অথচ গ্রেডেশন তালিকায় আত্তীকরণ করা শিক্ষক যারা আছেন তাদের আত্তীকরণ ২০১২ সাল থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে। বিধিমালা বাতিল হওয়ার পর এসব শিক্ষক কীভাবে আত্তীকরণ করা হলো বলেও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) অধ্যাপক মো. বেলাল হোসেন বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, এখন পর্যন্ত এক হাজারের বেশি আবেদন (অভিযোগ) আমরা পেয়েছি।
আত্তীকৃত ৯ জন শিক্ষকের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা হয়তো থেকে গেছে। এখন এটা যদি আইনী বিধি-বিধানে না থাকে তবে তা বাদ দেয়া হবে।
বিধিমালা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের নিয়োগ বিধিমালা আছে। সিনিয়র শিক্ষক পদটি ২০১৮ সালে সৃষ্টি করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমাদের আগের কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তবে এখন যে নিয়োগ বিধিমালা আছে তা একত্র করে কাজ করবে অভিজ্ঞ কমিটি।
বিএড বিধিমালা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যেসব বিষয়ে আমাদের স্পষ্ট কোন কিছু নেই; সে বিষয়ে আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে স্পষ্টিকরণ চাইবো। দরকার হলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পর্যন্ত যেতে হতে পারে।
মাধ্যমিকের এই পরিচালক আরো বলেন, একটা কথা বলতে পারি, বিধি-বিধানের বাইরে কোনো কিছু করা হবে না।