স্টাফ রিপোর্টার, ঠাকুরগাঁও :: ২৭ এপ্রিল দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ে নিজেদের অপকর্ম আড়াল করতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আনিত অভিযোগ গুলো খন্ডন করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটির পক্ষে মস্তাকিমা আক্তার পাল্টা সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ১৫ নং দেবীপুর ইউনিয়নের কালেশ্বরগাঁও সরকার পাড়ায় প্রভাবশালী শাহজালাল সুমনের সংঘবদ্ধ সহযোগীদের দ্বারা মস্তাকিমা আক্তারের পরিবারের উপর নানামুখী অত্যাচারে অতিষ্ঠ পরিবারটি বারবার আইনের আশ্রয় নিয়েও প্রতিপক্ষের পেশিশক্তির প্রভাবের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে। প্রভাবশালী চক্রটি নানাভাবে অসহায় পরিবারটির কাজ-কর্মে বাধার সৃষ্টি করলেও উল্টো সমাজে ভাল মানুষের মুখোশ পড়তে স্থানীয় সাংবাদিকদের একাংশকে নিয়ে লোকদেখানো সাংবাদিক সম্মেলন করে নিজেকে স্বচ্ছ ও নির্দোশ প্রমানের চেষ্টা করেছেন। গত ২৬ এপ্রিল শাহজালালের পরিবারের পক্ষে মিঠু আহম্মেদ মিলন আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে ডাহা মিথ্যে বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তার এই সাজানো নাটকের মহড়ার পর ক্ষতিগ্রস্ত মোস্তাকিমা ২৭ এপ্রিল একটি পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে শাহজালালের মনগড়া বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান।
সম্মেলনে বলা হয়, শাহাজালাল ওরফে সুমন ও তার পরিবার তাদের অপরাধ ঢাকতে শান্তি প্রিয় ঠাকুরগাঁও সদর থানা পুলিশ ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বক্তব্য উপস্থাপন করেছে। পক্ষান্তরে বাস্তব সত্য হলো, শাহাজালাল ওরফে সুমন পিতা মৃত- ইসমাইল হোসেন সাং- কালেশ্বরগাঁও, ১৫ নং দেবীপুর ইউনিয়ন, থানা ও জেলা- ঠাকুরগাঁও পেশায় একজন, প্রোগ্রাম অফিসার ওয়ান ষ্টপ ক্রাইসিস সেল (ওসিসি), আধুনিক সদর হাসপাতাল, ঠাকুরগাঁও পদে দীর্ঘদিন যাবৎ নিজ থানা ও জেলায় কর্মরত থেকে সরকারী চাকুরীকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে নিরীহ পরিবারসহ এলাকার স্কুল শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, কৃষক ও মৎস্যজীবিসহ একাধিক লোকের জমি ও পুকুর জবর দখলসহ একাধিক অপকর্মে লিপ্ত আছে। সম্মেলনে, শাহজালাল গংদের সন্ত্রাসী, ভূমিদস্যু, দুর্নিতীবাজ, দাঙ্গাবাজ, জাল দলিল তৈরিকারী, মামলাবাজ, পরসম্পদ লোভী ও ধুরন্ধর ব্যক্তি বলে আখ্যায়িত করা হয়। তার ৪০/৫০ জনের সহযোগী সন্ত্রাসী বাহীনির দ্বারা অসহায় পরিবার সহ এলাকাবাসী বিভিন্ন ভাবে প্রতারিত ও নির্যাতিত হয়ে আসছে।
প্রতিপক্ষগণ মূল ঘটনা আড়াল করে ঠাকুরগাঁও থানা পুলিশকে মিথ্যা চাঁদাবাজি ও হয়রানির অভিযোগ এনে এবং আমার অপর ছোট ভাইসহ আমার পরিবারকে জড়িয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে মিথ্যা লিখিত বক্তব্য পেশ করেন, যা নিজেদের অন্যায়কে আড়াল করার কৌশল ছাড়া কিছু নয়।
সম্মেলনে আরো বলা হয়, শাহাজালাল ওরফে সুমন গং ভূয়া ও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে দলিল তৈরি করে আমার বাবার ক্রয়কৃত ও দীর্ঘদিন যাবৎ ভোগদখলকৃত জমি জমা নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি করে। বিবাদী শাহাজাল গং আমাদের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ আদালত, ঠাকুরগাঁও এ একটি দেওয়ানী মামলা দায়ের করেন যাহার মামলা নং- ০৩/১৭(অন্য)। বিজ্ঞ আদালত আমাদের জমির যাবতীয় কাগজপত্র যাচাইঅন্তে দু’পক্ষের আইনজীবির শুনানি শেষে অত্র মামলা খারিজ করিয়া দিয়ে আমাদের পক্ষে একতরফা রায় প্রদান করেন। রায়ের আদেশ পাওয়ার পরে শাহজালাল গং ক্ষিপ্ত হইয়া একের পর এক আমাদের জমির ফসল নষ্ট, ফসল পুড়িয়ে দেয়া সহ জমি জবর দখলের চেষ্টা ও মারধর করতে থাকে। এ নিয়ে আমার বড় ভাই ছিদ্দিকুর রহমান বাদী হইয়া থানা ও আদালতে শাহজালাল গংদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। বর্তমানে উক্ত মামলাগুলি বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন আছে।
গত কয়েক দিন আগে শাহজালাল ওরফে সুমন গং আমাদের জমির গম কাটার জন্য পায়তারা করলে, আমার বড় ভাই সিদ্দিকুর রহমান বাদী হইয়া বিজ্ঞ আদালতে ১৪৪/১৪৫ ধারায় মামলা করেন। যার মামলা নং-২৩৯/২০২১। বিজ্ঞ আদালত আমাদের অভিযোগ আমলে নিয়ে শাহজালাল ওরফে সুমন গংদের বিরুদ্ধে ১৪৪ ধারা জারি করেন এবং ঠাকুরগাঁও সদর থানার মাধ্যমে শাহজালাল গংদের প্রতি নিষেধাজ্ঞার নোটিশ প্রদান করেন। বিজ্ঞ আদালতের আদেশ অমান্য করে গত ২২/০৪/২০২১ তারিখে সকাল অনুমান ১০:২০ ঘটিকায় শাহজালালের নির্দেশে তার পরিবারের লোকজন দেশীও অস্ত্র নিয়ে আমাদের জমির গম কাটতে থাকলে আমার ভাবি আনিছা বেগম ও সেলিনা বেগম গম কাটতে বাধা দিলে প্রতিপক্ষরা তাদেরকে মারপিট করিয়া রক্তাক্ত জখমসহ শ্লীলতাহানী করে। এ সময় আমি নিরুপায় হয়ে পুলিশের জরুরি সেবা ৯৯৯ নাম্বারে ফোন দিলে পুলিশ এসে আমাদের রক্ষা করে এবং ঘটনাস্থল থেকে প্রতিপক্ষদের মধ্য থেকে তিন জনকে আটক করে। এ সময় পুলিশের সহায়তায় আহতদের চিকিৎসার জন্য ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করান। এ ব্যাপারে আমার বড় ভাই ছিদ্দিকুর রহমান বাদী হইয়া ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং- ৩২তাং ২২/০৪/২০২১।
সর্বপরি আইনকে উপেক্ষা করে সন্ত্রাশী ও পেশি শক্তির প্রভাব খাটিয়ে নিরীহ মানুষের সম্পত্তি দখল করাই এই শাহজালাল সুমন গংদের ভাল মানুষির আচরনের বিপরীত একটি দিকমাত্র। এ বিষয়ে সুষ্টু ও শান্তিপুর্ন তদন্ত সাপক্ষে দোষী শাহজালাল সুমন ও তার অপকর্মের দোষরদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা জরুরী হয়ে পড়েছে।