বিএনপি ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যে বক্তব্য দিয়েছেন তার সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ তো ভেতর থেকে ভেঙে চুপসে গেছে। সেখানে নানাপন্থী এবং সিনিয়র-জুনিয়রের নানা ধারা। যে কারণে তারা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারেনি, পুলিশের ওপর নির্ভরশীল হয়ে রাতের আঁধারে জাল ভোট দিয়ে ব্যালটবাক্স পূর্ণ করতে হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘পুলিশি ক্ষমতা যখন থাকবে না তখন তো আওয়ামী লীগের বাতি জ্বালানোর লোকও খুঁজে পাওয়া যাবে না। বিএনপির মধ্যে কোনো বিভেদ নেই। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে দলের তৃণমূল থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত সকল নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ। এই ঐক্যে ফাটল ধরাতে পারেনি বলেই ওবায়দুল সাহেবের বুকে বড় জ্বালা। এ জন্য তিনি বিএনপির ছিদ্র খুঁজতে আর্তচিৎকার করছেন। ওবায়দুল কাদের সাহেবকে মনে রাখার জন্য বলবো- শকুনের দোয়ায় গরু মরে না।’
শনিবার সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
‘প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে যে ভোটের জন্য ধন্যবাদ দিয়েছেন এটা জনগণের সঙ্গে হাসি-তামাশা ছাড়া আর কিছুই না’ মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী তার তামাশার ভাষণে জনগণের সঙ্গে ঠাট্টা করেছেন। জনগণ জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণকে সম্পূর্ণরুপে প্রত্যাখ্যান করেছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন। তিনি তার ভাষণে যারা তাকে ভোট দিয়েছেন এবং যারা দেননি তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। দেশের আসল মালিক জনগণের প্রকৃত ভোট দেয়ার অধিকার ও সাংবিধানিক দাবিকে উপহাস করার নতুন মাত্রা যোগ করলেন ২৯ ডিসেম্বর রাতের ভোটের প্রধানমন্ত্রী।’
এদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পদ থেকে তারেক রহমানকে সরে দাঁড়ানোর যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটাকে দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেন রিজভী।
রিজভী বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাথে গতকাল তার আত্মীয়স্বজনরা দেখা করতে গিয়েছিলেন। কারাগারে বেগম খালেদা জিয়ার বাস করার জায়গাটির কোনো পরিবর্তন হয়নি। অস্বাস্থ্যকর, স্যাঁতসেতে ও ধুলাবালিতে আকীর্ণ কক্ষটিতে তাকে বাস করতে বাধ্য করা হচ্ছে। বারবার এ বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও তারা ভ্রুক্ষেপহীন থেকেছে। তার অসুস্থতার কথা বিবেচনা না করে তাকে ঘনঘন আদালতে হাজির হতে বাধ্য করা হচ্ছে। আদালতে অপরিসর এবং বসার অনুপযোগী এমন একটি পরিবেশে তাকে নিয়ে আসা হয়। বারবার বেগম জিয়া এ নিয়ে প্রতিবাদ করলেও কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কর্ণপাত করেনি। এটাও ধারাবাহিক জুলুমের একটি অংশ। আমি দলের পক্ষ থেকে বেগম জিয়ার প্রতি সরকারের এ ধরনের ঘৃণ্য আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে দেশনেত্রীর সুচিকিৎসা নিশ্চিত ও নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।’