আজম রেহমান:: ঠাকুরগাঁওয়ের গরীব এতিম পরিবারের মেয়ে, মোছাঃ উম্মে কুলসুম (মনি) করোনায় কর্মহীন,অসহায় এবং অভুক্ত মানুষের জন্য চাকুরিতে আবেদনের জমানো টাকা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দিয়ে এক দৃষ্টান্ত একেছে।
বৃহস্পতিবার মোছাঃ উম্মে কুলসুম (মনি) সরকারি চাকুরির আবেদনের জন্য তার সঞ্চয়কৃত ২৫মাসের জমানো ২৫ হাজার টাকা ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ড. একেএম কামরুজ্জামান সেলিমের হাতে করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ অসহায় দরিদ্রদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দেবার জন্য তুলে দেয়।
এসময় জেলা প্রশাসক ড.কে এম কামরুজ্জামান সেলিম আবেগ আপ্লাত হয়ে বলেন, এতিম মেয়ে মনি সরকারি চাকুরির আবেদনের জন্য ২৫ মাস ধরে জমানো টাকা এভাবে অসহায় দরিদ্য মানুষের জন্য দেওয়াটা আমি অনুকরণীয় বলে মনে করছি। তিনি একজন স্বাস্থ্য সহকারি হয়ে তিনার হৃদয়ে যে করোনার বিষয়টি আঘাত করেছে এবং দেশের ক্রান্তিকালে দুস্থ্য গরিব অসহায়দের জন্য ভেবেছে এটাই বিশাল বড় পাওয়া।
দেশের এই সংকটের মুহুর্তে অনেক বড় বড় ডাক্তারগণ যখন চিকিৎসা কেন্দ্রে গিয়ে সেবা দিতে নারাজ সে সময়ে স্বাস্থ্য সহকারি মনি’র এই অবদান আমরা সবসময় মনে রাখবো।
ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড বথপালিগাঁও মৃত- মোশারুল ইসলাম ও মোছাঃ রেহানা বেগমের প্রথম কন্যা মনি, পরিবারে তার একটি ছোট ভাই আছে। এই সংকটে মেয়ের এমন দানে গর্বিত মাতা।
মোছাঃ উম্মে কুলসুম (মনি) জানান, আমি টিভিতে দেখেছি গরিব মানুষরা অসহায়ভাবে দিন যাপন করছেন। তারা অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে। তাই আমি আমার ২৫ মাসের জমানো টাকা ও বিভিন্ন সময় উপহারের জমানো টাকা এসব হতদরিদ্র গরিব মানুষদের জন্য দিয়ে দিলাম। এবং আমি মেডিক্যাল অ্যাসিস্টেন্ট পাশ করে বিএডিসির রেজিস্টেশন নাম্বারও আছে, নাম মাত্র একটি বে-সরকারি এজিওতে চুক্তি ভিত্তিক কাজ করছি। আমি করোনা পরিস্থিতিতে দেশের যে কোন সরকারি কমিউনিটি ক্লেনিক, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সেচ্ছা শ্রমে কাজ করতে চাই।
এমন অবদানে অভিভুত ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষ। অনেকেই বলছেন, এটি যেমন গর্বের তেমনি সমাজের বিত্তবানদের জন্যে লজ্জারও বটে। একজন বেকার নারীর দেখানো পথে সমাজের নিম্নআয়ের মানুষদের পাশে বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানান তারা।