ঢাকা ০২:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
পীরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৯ ডাক্তারের পদ শূন্য, দায়িত্বরত ৩ জন ৪ বিঘা জমি নিয়ে দুই পক্ষের বিবাদ ১৫ বছর ধরে : সংঘর্ষে আহত অর্ধশত, ১৪৪ ধারা জারি গাজায় গনহত্যার প্রতিবাদে ঠাকুরগায়ের পীরগঞ্জে আল-হাসানার শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন প্রতিবাদসভা আওয়ামীপন্থি ৯৩ আইনজীবীর আদালতে আত্মসমর্পণ, জামিন আবেদন আনন্দবাজারের প্রতিবেদন, ঢাকার প্রস্তাব দ্বিধায় দিল্লি সত্যের মুখোমুখি আসিফ নজরুল পীরগঞ্জে মাস ব্যাপী হস্ত কুটির শিল্প মেলার উদ্বোধন পীরগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের ঈদ পূণর্মিলনী অনুষ্ঠান সম্পন্ন যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক প্রতিবেদন সংখ্যালঘুদের দমিয়ে ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র বানানোর চেষ্টা পবিত্র শবে কদর আজ

শিশুরা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে : মনিরুল ইসলাম

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেছেন, শিশুদের থেকে অনেক সময় শিক্ষা নিতে হয়। শিক্ষার্থীরা আমাদের চোখে আঙুল দেখিয়ে দিয়েছে কী করতে হবে। আমরা তাদের দাবি বাস্তবায়নে কাজ করছি। তাদের ঘরে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করছি।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেছেন।
মনিরুল ইসলাম বলেন, নিহত পরিবারের প্রতি আমি সমবেদনা জানাই। আমরা তাদের সন্তান ফিরিয়ে দিতে পারব না, তবে সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। শিক্ষার্থীদের প্রতি আমার অনুরোধ, তারা যেন ঘরে ফিরে যায়। অভিভাবক ও শিক্ষকদের প্রতি আমি একই অনুরোধ জানাচ্ছি।
মনিরুল ইসলাম বলেন, গতকাল বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠক করেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইতোমধ্যে সব দাবি মেনে নেওয়ার কথা বলেছেন। সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। ট্রাফিক পুলিশ তৎপর রয়েছে। সড়কে যানবাহন কয়েকবার করে চেকিং করা হচ্ছে।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেয়ার বিষয়ে সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনার পর পুলিশের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা জোরদার করা হয়েছে। বিআরটিএ ও পুলিশ যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষা করছে। তবে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে লাইসেন্স পরীক্ষার কারণে গাড়ির দীর্ঘ জটলা সৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে মুমূর্ষু রোগী, হজযাত্রী, বিদেশগামীদের ভোগান্তি হচ্ছে। তাই তাদেরকে অনুরোধ করে বলব, আপনারা চলে যান।
কোমলমতি শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলন প্রশাসন ও বিআরটিএ’র জন্য চপেটাঘাত কীনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম বলেন,  মাঝে মাঝে আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের থেকেও শিক্ষা নিতে হয়। তারা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে যেসব বিষয় দেখিয়ে দিয়েছে সেগুলো আমরা বাস্তবায়ন করবো।
অতিরিক্ত কমিশার মনিরুল ইসলাম বলেন, আমরা কিন্তু শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে এখন পর্যন্ত কোনো অস্ত্র প্রয়োগ করিনি। লেথাল, সেমি-লেথাল বা নন-লেথাল অস্ত্র ব্যবহার করিনি। আমরা তাদের আন্দোলনকে মানবিক এবং সহানুভূতির সঙ্গে দেখছি।
কোনো ধরনের উস্কানিতে কান না দিতে শিক্ষার্থীদের আহবান জানিয়ে অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে এক পুলিশ সদস্যকে এক ছাত্রের গলা চেপে ধরতে দেখা গেছে। কিন্তু ছবিটি ২০১৩ সালের আর এ ঘটনায় এএসআই পলাশ চন্দ্র শাস্তির  মুখোমুখি হয়েছিলেন। আরেকটি ছবিতে এক ছাত্রীকে পুলিশের লাঠিচার্জ করতে দেখা গেছে, সেই ছবিটিও ২০১২ সালের। এ থেকে প্রমানিত হয়, কেউ আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে ছাত্রদের উস্কানি দিচ্ছে। সে সব স্বার্থান্বেষীরা এ পর্যন্ত তিনশো গাড়ি ভাংচুর করেছে, যার মধ্যে পুলিশের ৫টি পিকআপ ভ্যানও রয়েছে। এ পর্যন্ত ৮টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। যারা উস্কানি দিয়ে এ ধরনের কাজ করছে, তাদেরকে চিহ্নিত করার কাজ চলছে বলেও জানান তিনি।
আন্দোলনরত শিশুদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ডিএমপি ও পুলিশ কথা দিচ্ছে- আপনাদের দাবি বাস্তবায়ন হবে। আপনারা কোনো কথায় বিভ্রান্ত হবেন না। যারা এই সুযোগে ছাত্রদের বিভ্রান্ত করছে, তাদেরও শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।
গত মঙ্গলবার শিশুদের ওপর লাঠিচার্জ করার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশের এ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, যদি কোনো পুলিশ সদস্য আইনের বাইরে গিয়ে কোনো কাজ করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ আন্দোলনে শিশুদের কথা মাথায় রেখে পুলিশ অনেক ক্ষেত্রে আইনের যথাযথ প্রয়োগ করেনি। ছাত্রদের বিষয়টি পুলিশ মানবিকভাবেই দেখেছে।
ছাত্রদের লাইসেন্স পরীক্ষার সময় অনেক পুলিশের গাড়িচালকের লাইসেন্স পাওয়া যায়নি, এ বিষয়ে জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, পুলিশের সকল ড্রাইভারেরই লাইসেন্স রয়েছে। অনেক সময় সঙ্গে নিয়ে যান না কিংবা অনেক সময় এমটি (মোটর ট্রান্সপোর্ট) বিভাগে তাদের লাইসেন্স জমা রাখেন। তাই হয়তো অনেক ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে তারা লাইসেন্স দেখাতে পারেননি।
পুলিশের এ উর্ধ্বতন কর্মকর্তা আরো বলেন, সড়ক ব্যবস্থাপনায় আগে অনিয়ম ছিল। আমরা সেসব অনিয়ম অনেক দূর করেছি। উল্টোপথে চলা অনেক  প্রভাবশালীর গাড়িও ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফুটপাতে গাড়ি চালানো বন্ধ করা হয়েছে। আমাদের আন্তরিকতা থাকা  সত্তে¡ও নাগরিকদের অসেচতনতার কারণে পুরোপুরি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা বিলম্বিত হচ্ছে।
Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

পীরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২৯ ডাক্তারের পদ শূন্য, দায়িত্বরত ৩ জন

শিশুরা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে : মনিরুল ইসলাম

আপডেট টাইম ০১:৫৯:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩ অগাস্ট ২০১৮
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেছেন, শিশুদের থেকে অনেক সময় শিক্ষা নিতে হয়। শিক্ষার্থীরা আমাদের চোখে আঙুল দেখিয়ে দিয়েছে কী করতে হবে। আমরা তাদের দাবি বাস্তবায়নে কাজ করছি। তাদের ঘরে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করছি।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেছেন।
মনিরুল ইসলাম বলেন, নিহত পরিবারের প্রতি আমি সমবেদনা জানাই। আমরা তাদের সন্তান ফিরিয়ে দিতে পারব না, তবে সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। শিক্ষার্থীদের প্রতি আমার অনুরোধ, তারা যেন ঘরে ফিরে যায়। অভিভাবক ও শিক্ষকদের প্রতি আমি একই অনুরোধ জানাচ্ছি।
মনিরুল ইসলাম বলেন, গতকাল বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বৈঠক করেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইতোমধ্যে সব দাবি মেনে নেওয়ার কথা বলেছেন। সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। ট্রাফিক পুলিশ তৎপর রয়েছে। সড়কে যানবাহন কয়েকবার করে চেকিং করা হচ্ছে।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেয়ার বিষয়ে সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনার পর পুলিশের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা জোরদার করা হয়েছে। বিআরটিএ ও পুলিশ যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষা করছে। তবে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে লাইসেন্স পরীক্ষার কারণে গাড়ির দীর্ঘ জটলা সৃষ্টি হচ্ছে। এর ফলে মুমূর্ষু রোগী, হজযাত্রী, বিদেশগামীদের ভোগান্তি হচ্ছে। তাই তাদেরকে অনুরোধ করে বলব, আপনারা চলে যান।
কোমলমতি শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলন প্রশাসন ও বিআরটিএ’র জন্য চপেটাঘাত কীনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম বলেন,  মাঝে মাঝে আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের থেকেও শিক্ষা নিতে হয়। তারা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে যেসব বিষয় দেখিয়ে দিয়েছে সেগুলো আমরা বাস্তবায়ন করবো।
অতিরিক্ত কমিশার মনিরুল ইসলাম বলেন, আমরা কিন্তু শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে এখন পর্যন্ত কোনো অস্ত্র প্রয়োগ করিনি। লেথাল, সেমি-লেথাল বা নন-লেথাল অস্ত্র ব্যবহার করিনি। আমরা তাদের আন্দোলনকে মানবিক এবং সহানুভূতির সঙ্গে দেখছি।
কোনো ধরনের উস্কানিতে কান না দিতে শিক্ষার্থীদের আহবান জানিয়ে অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে এক পুলিশ সদস্যকে এক ছাত্রের গলা চেপে ধরতে দেখা গেছে। কিন্তু ছবিটি ২০১৩ সালের আর এ ঘটনায় এএসআই পলাশ চন্দ্র শাস্তির  মুখোমুখি হয়েছিলেন। আরেকটি ছবিতে এক ছাত্রীকে পুলিশের লাঠিচার্জ করতে দেখা গেছে, সেই ছবিটিও ২০১২ সালের। এ থেকে প্রমানিত হয়, কেউ আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে ছাত্রদের উস্কানি দিচ্ছে। সে সব স্বার্থান্বেষীরা এ পর্যন্ত তিনশো গাড়ি ভাংচুর করেছে, যার মধ্যে পুলিশের ৫টি পিকআপ ভ্যানও রয়েছে। এ পর্যন্ত ৮টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। যারা উস্কানি দিয়ে এ ধরনের কাজ করছে, তাদেরকে চিহ্নিত করার কাজ চলছে বলেও জানান তিনি।
আন্দোলনরত শিশুদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ডিএমপি ও পুলিশ কথা দিচ্ছে- আপনাদের দাবি বাস্তবায়ন হবে। আপনারা কোনো কথায় বিভ্রান্ত হবেন না। যারা এই সুযোগে ছাত্রদের বিভ্রান্ত করছে, তাদেরও শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।
গত মঙ্গলবার শিশুদের ওপর লাঠিচার্জ করার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশের এ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, যদি কোনো পুলিশ সদস্য আইনের বাইরে গিয়ে কোনো কাজ করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ আন্দোলনে শিশুদের কথা মাথায় রেখে পুলিশ অনেক ক্ষেত্রে আইনের যথাযথ প্রয়োগ করেনি। ছাত্রদের বিষয়টি পুলিশ মানবিকভাবেই দেখেছে।
ছাত্রদের লাইসেন্স পরীক্ষার সময় অনেক পুলিশের গাড়িচালকের লাইসেন্স পাওয়া যায়নি, এ বিষয়ে জানতে চাইলে মনিরুল ইসলাম বলেন, পুলিশের সকল ড্রাইভারেরই লাইসেন্স রয়েছে। অনেক সময় সঙ্গে নিয়ে যান না কিংবা অনেক সময় এমটি (মোটর ট্রান্সপোর্ট) বিভাগে তাদের লাইসেন্স জমা রাখেন। তাই হয়তো অনেক ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে তারা লাইসেন্স দেখাতে পারেননি।
পুলিশের এ উর্ধ্বতন কর্মকর্তা আরো বলেন, সড়ক ব্যবস্থাপনায় আগে অনিয়ম ছিল। আমরা সেসব অনিয়ম অনেক দূর করেছি। উল্টোপথে চলা অনেক  প্রভাবশালীর গাড়িও ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফুটপাতে গাড়ি চালানো বন্ধ করা হয়েছে। আমাদের আন্তরিকতা থাকা  সত্তে¡ও নাগরিকদের অসেচতনতার কারণে পুরোপুরি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা বিলম্বিত হচ্ছে।