ঢাকা ০৫:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
ভাল মানুষ থেকেইে ভাল মানুষ তৈরী হয়—ঠাকুরগাঁওয়ে আল-হাসানাহ স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরুস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে সাবেক এমপি জাহিদুর রহমান ঠাকুরগাঁয়ে যুবলীগ নেতার পলিথিন কারখানা বন্ধ, মালামাল জব্দ সাগর-রুনি হত্যা মামলা র‌্যাব থেকে তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইয়ের কাছে সংস্কারের পরেই নির্বাচন: ড. ইউনূস বশিরউদ্দীন ও ফারুকীকে কার বুদ্ধিতে নিলেন, প্রশ্ন মান্নার ভূমি সেবায় দুর্নীতি-অনিয়মে তাৎক্ষণিক শাস্তির ব্যবস্থা ভোট কারচুপির তদন্ত সাবেক ডিসি-এসপি-ইউএনওদের ঘুম হারাম আসিফ নজরুলকে হেনস্তা,দূতাবাসের কাউন্সেলরকে দেশে ফেরত, চাকরি হারাচ্ছেন স্টাফ হাসিনাকে ফেরানোর উদ্যোগ, যা বলছে আনন্দবাজার পীরগঞ্জ পাইলট হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের রিরুদ্ধে এবার শিক্ষকদের ১২ দফা অভিযোগ

অশ্লীল যাত্রাপালার পক্ষে সাফাই গাইলেন এমপি দবিরুল

রানীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ-ঠাকুরগায়ের রানীশংকৈল উপজেলার শেষ প্রান্ত ভারতীয় সীমান্ত ঘেষা কাশিপ্রু ইউনিয়নের মহারাজা হাট নামক এলাকায় তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিশাল মাঠজুড়ে লেগেছে আনন্দ মেলা। এ মেলায় যাত্রা পালার নামে সচেতন মহলে অশ্লীলতার অভিযোগ উঠলেও এর পক্ষে গণমাধ্যমকর্মীদের নিকট সাফাই গাইলেন জেলা আ’লীগের সভাপতি ও ঠাকুরগাও-২ আসনের এমপি দবিরুল ইসলাম। গত ১৮ ডিসেম্বর ৪র্থ বারের মত মহারাজাহাট আনন্দ মেলার উদ্ধোধন করেন এমপি দবিরুল ইসলাম। তবে এ মেলা সেখানে হঠাৎ করেই শুরু হয়েছে,মেলা লাগার পিছনে কোন ইতিহাস ঐতিহ্যের কারন নেই। শুধু মাত্র বাণ্যিজিক ভিত্তিতেই মেলা হয় বলে মন্তব্য করেন স্থানীয় সচেতনমহল। উদ্ধোধনের কয়েকদিন পর থেকেই জেলা প্রশাসকের কিংবা সংশ্লিষ্ট কারো অনুমতি নিশ্চিত না করেই চলতে থাকে মেলার নামে অশ্লীল যাত্রা পালা।
জানা যায়, এমপি দবিরুলের মৌখিক নির্দেশেই তার ক্ষমতায় আনন্দ মেলার নামে চলছে অশ্লীলতা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মুঠোফোনে এ প্রতিবেদক এমপি দবিরুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আপাতত বন্ধ রয়েছে,তারপর গ্রামের লোকজন বিনোদনের সুযোগ পাই না। তাই অনেক কিছু ভেবে বিনোদনের আয়োজন করা হয়েছে। বিনোদন মানেই কি যাত্রা পালা প্রশ্নে বলেন,তাহলে আর কি,আর কি লাগে আপনার। অশ্লীলতা প্রশ্নে বলেন,অশ্লীল চললে পুলিশ বন্ধ করে দিবে। তারা তাদের ব্যবস্থা নিবে এটা পুলিশ প্রশাসনের ব্যাপার। অনুমতি প্রসঙ্গে বলেন,আমি ডিসির কাছে অনুমিত নিয়ে দিয়েছি।
এদিকে রানীশংকৈল থানার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার মোঃ নাহিদ হাসান ও অফিসার ইনর্চাজ আব্দুল মান্নান কেউ জেলা প্রশাসনের অনুমতির বিষয়টি লিখিত হয়েছে এমন নিশ্চিত করতে পারেন নি। তবে লিখিত অনুমোদন না থাকলেও মেলা কিন্তু ঠিকই চলছে।
সম্প্রতি সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়,মহারাজা কিন্ডার গার্ডেন, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঝে অবস্থিত বিশাল মাঠে সাজানো হয়েছে মেলা। এখানে বসানো হয়েছে একটি যাত্রা পালার প্যান্ডেল। পাশেই ২টি প্যান্ডেল মিনি সার্কাস ও যাদু প্রর্দশনী। এছাড়াও হাউজি খেলার জন্য তৈরী করা হয়েছে প্যান্ডেল,বসানো হয়েছে হরেক রকমের দোকান।
এলাকাবাসীর অভিযোগ মেলার নাম করে এখানে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের আনাগোনা বেড়েছে,রাতে মাইকের উচ্চ আওয়াজের কারনে ঘুমের সমস্যা চলমান ডিগ্রী ২য় বর্ষের পরীক্ষার্থীদের পড়াশুনা ও সামনে এস এস সি পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতি পড়াশুনায় চরম সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়াও মেলার অন্তরালে মাদকের আদান প্রদান চরম বিস্তার লাভ করেছে এবং চুরি অহরহ হচ্ছে বলে স্থানীয়দের সুত্রে জানা যায়।
এদিকে অভিভাবকদের অভিযোগ সুযোগ পেলেই আমাদের উত্তি বয়সের ছেলেরা জড়িয়ে যাচ্ছে এ অশ্লীলতায়। আমরা অনেক চিন্তায় রয়েছি। প্রতিবার মেলার নামে অশ্লীলতা চললেও কিছুই বলে না প্রশাসন। এতে আমরা পিতা মাতারা ছেলে মেয়েদের মুখের দিকে তাকাতে পারিনা চোখের সামনে এমন অশ্লীলতার মেলা চললে নিজের আর্ত্বসন্মান বোধ নিয়ে প্রশ্ন উঠে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, মিনি সার্কাস ও যাদু প্রর্দশনীর অন্তরালে চলছে অশ্লীল নৃত্য নাচ গান,এছাড়াও যাত্রা পালার নামে রাতভোর চলছে অশ্লীল নাচ গানের যাত্রা পালা। যাত্রা পালা নাচ গান ছাড়া চিত্ত বিনোদন মুলক বা দেখার মত আর কিছু নেই এ মেলায়।
কথা হয় মেলা দেখতে আসা শাহাজান আলীর সাথে,তিনি বলেন এসেছিলাম মেলা দেখতে তবে একা কারন মেলার যে অবস্থা তাতে পরিবার নিয়ে তো আসা সম্ভব নই। আরেক জন সালাম বলেন,এ মেলা কোন ঐতিহ্য নিয়ে হচ্ছে আমার জানা নেই। তবে এ রকম গ্রাম পল্লী এলাকায় মেলার নামে অশ্লীলতা উত্তি বয়সের ছেলে মেয়েরা খারাপের দিকে ধাপিত হবে বলে তিনি মনে করেন। একইভাবে অনেকের অভিযোগ রয়েছে মেলার নামে এ ধরনের অশ্লীলতা নিয়ে।
তারপরও স্থানীয় প্রশাসনের দুই কর্তা বাবু মেলার অনুমতির কাগজে কলমে হয়েছে কিনা নিশ্চিত করতে পারেন নি। অথচ মেলা চলছে দেদারশে। এছাড়াও তাদের কাছে নেই মেলা চলার অনুমোদনকৃত বৈধ কাগজ পত্রের কপি। অদৃশ্য কোন আদশে যেন চলছে এই মেলা। স্থানীয় প্রশাসন দর্শকের ভুমিকায় নিরব রয়েছেন।
মেলা কমিটির সভাপতি ও ৬নং কাশিপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ মুঠোফোনে বলেন,মেলা ও যাত্রা পালা চালানোর ১৫ দিনের অনুমতি পেয়েছি তাই চলছে।
ভারপ্রাপ্ত ইউএনও সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন,মেলার অনুমতির বিষয়টি আমি নিশ্চিত করতে পারছি না। তবে অনুমোদন না থাকলে মেলা বন্ধ করে দেওয়া হবে।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

ভাল মানুষ থেকেইে ভাল মানুষ তৈরী হয়—ঠাকুরগাঁওয়ে আল-হাসানাহ স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরুস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে সাবেক এমপি জাহিদুর রহমান

অশ্লীল যাত্রাপালার পক্ষে সাফাই গাইলেন এমপি দবিরুল

আপডেট টাইম ১২:৪৩:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৭

রানীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ-ঠাকুরগায়ের রানীশংকৈল উপজেলার শেষ প্রান্ত ভারতীয় সীমান্ত ঘেষা কাশিপ্রু ইউনিয়নের মহারাজা হাট নামক এলাকায় তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিশাল মাঠজুড়ে লেগেছে আনন্দ মেলা। এ মেলায় যাত্রা পালার নামে সচেতন মহলে অশ্লীলতার অভিযোগ উঠলেও এর পক্ষে গণমাধ্যমকর্মীদের নিকট সাফাই গাইলেন জেলা আ’লীগের সভাপতি ও ঠাকুরগাও-২ আসনের এমপি দবিরুল ইসলাম। গত ১৮ ডিসেম্বর ৪র্থ বারের মত মহারাজাহাট আনন্দ মেলার উদ্ধোধন করেন এমপি দবিরুল ইসলাম। তবে এ মেলা সেখানে হঠাৎ করেই শুরু হয়েছে,মেলা লাগার পিছনে কোন ইতিহাস ঐতিহ্যের কারন নেই। শুধু মাত্র বাণ্যিজিক ভিত্তিতেই মেলা হয় বলে মন্তব্য করেন স্থানীয় সচেতনমহল। উদ্ধোধনের কয়েকদিন পর থেকেই জেলা প্রশাসকের কিংবা সংশ্লিষ্ট কারো অনুমতি নিশ্চিত না করেই চলতে থাকে মেলার নামে অশ্লীল যাত্রা পালা।
জানা যায়, এমপি দবিরুলের মৌখিক নির্দেশেই তার ক্ষমতায় আনন্দ মেলার নামে চলছে অশ্লীলতা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে মুঠোফোনে এ প্রতিবেদক এমপি দবিরুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আপাতত বন্ধ রয়েছে,তারপর গ্রামের লোকজন বিনোদনের সুযোগ পাই না। তাই অনেক কিছু ভেবে বিনোদনের আয়োজন করা হয়েছে। বিনোদন মানেই কি যাত্রা পালা প্রশ্নে বলেন,তাহলে আর কি,আর কি লাগে আপনার। অশ্লীলতা প্রশ্নে বলেন,অশ্লীল চললে পুলিশ বন্ধ করে দিবে। তারা তাদের ব্যবস্থা নিবে এটা পুলিশ প্রশাসনের ব্যাপার। অনুমতি প্রসঙ্গে বলেন,আমি ডিসির কাছে অনুমিত নিয়ে দিয়েছি।
এদিকে রানীশংকৈল থানার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার মোঃ নাহিদ হাসান ও অফিসার ইনর্চাজ আব্দুল মান্নান কেউ জেলা প্রশাসনের অনুমতির বিষয়টি লিখিত হয়েছে এমন নিশ্চিত করতে পারেন নি। তবে লিখিত অনুমোদন না থাকলেও মেলা কিন্তু ঠিকই চলছে।
সম্প্রতি সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়,মহারাজা কিন্ডার গার্ডেন, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়,উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঝে অবস্থিত বিশাল মাঠে সাজানো হয়েছে মেলা। এখানে বসানো হয়েছে একটি যাত্রা পালার প্যান্ডেল। পাশেই ২টি প্যান্ডেল মিনি সার্কাস ও যাদু প্রর্দশনী। এছাড়াও হাউজি খেলার জন্য তৈরী করা হয়েছে প্যান্ডেল,বসানো হয়েছে হরেক রকমের দোকান।
এলাকাবাসীর অভিযোগ মেলার নাম করে এখানে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের আনাগোনা বেড়েছে,রাতে মাইকের উচ্চ আওয়াজের কারনে ঘুমের সমস্যা চলমান ডিগ্রী ২য় বর্ষের পরীক্ষার্থীদের পড়াশুনা ও সামনে এস এস সি পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতি পড়াশুনায় চরম সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়াও মেলার অন্তরালে মাদকের আদান প্রদান চরম বিস্তার লাভ করেছে এবং চুরি অহরহ হচ্ছে বলে স্থানীয়দের সুত্রে জানা যায়।
এদিকে অভিভাবকদের অভিযোগ সুযোগ পেলেই আমাদের উত্তি বয়সের ছেলেরা জড়িয়ে যাচ্ছে এ অশ্লীলতায়। আমরা অনেক চিন্তায় রয়েছি। প্রতিবার মেলার নামে অশ্লীলতা চললেও কিছুই বলে না প্রশাসন। এতে আমরা পিতা মাতারা ছেলে মেয়েদের মুখের দিকে তাকাতে পারিনা চোখের সামনে এমন অশ্লীলতার মেলা চললে নিজের আর্ত্বসন্মান বোধ নিয়ে প্রশ্ন উঠে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, মিনি সার্কাস ও যাদু প্রর্দশনীর অন্তরালে চলছে অশ্লীল নৃত্য নাচ গান,এছাড়াও যাত্রা পালার নামে রাতভোর চলছে অশ্লীল নাচ গানের যাত্রা পালা। যাত্রা পালা নাচ গান ছাড়া চিত্ত বিনোদন মুলক বা দেখার মত আর কিছু নেই এ মেলায়।
কথা হয় মেলা দেখতে আসা শাহাজান আলীর সাথে,তিনি বলেন এসেছিলাম মেলা দেখতে তবে একা কারন মেলার যে অবস্থা তাতে পরিবার নিয়ে তো আসা সম্ভব নই। আরেক জন সালাম বলেন,এ মেলা কোন ঐতিহ্য নিয়ে হচ্ছে আমার জানা নেই। তবে এ রকম গ্রাম পল্লী এলাকায় মেলার নামে অশ্লীলতা উত্তি বয়সের ছেলে মেয়েরা খারাপের দিকে ধাপিত হবে বলে তিনি মনে করেন। একইভাবে অনেকের অভিযোগ রয়েছে মেলার নামে এ ধরনের অশ্লীলতা নিয়ে।
তারপরও স্থানীয় প্রশাসনের দুই কর্তা বাবু মেলার অনুমতির কাগজে কলমে হয়েছে কিনা নিশ্চিত করতে পারেন নি। অথচ মেলা চলছে দেদারশে। এছাড়াও তাদের কাছে নেই মেলা চলার অনুমোদনকৃত বৈধ কাগজ পত্রের কপি। অদৃশ্য কোন আদশে যেন চলছে এই মেলা। স্থানীয় প্রশাসন দর্শকের ভুমিকায় নিরব রয়েছেন।
মেলা কমিটির সভাপতি ও ৬নং কাশিপুর ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ মুঠোফোনে বলেন,মেলা ও যাত্রা পালা চালানোর ১৫ দিনের অনুমতি পেয়েছি তাই চলছে।
ভারপ্রাপ্ত ইউএনও সোহাগ চন্দ্র সাহা বলেন,মেলার অনুমতির বিষয়টি আমি নিশ্চিত করতে পারছি না। তবে অনুমোদন না থাকলে মেলা বন্ধ করে দেওয়া হবে।