ঢাকা ১০:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

কুড়িগ্রামে টিসিবির সুফল পাচ্ছেন না ভোক্তারা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি::কুড়িগ্রামে টিসিবির সকল ডিলাররা পণ্য উত্তোলন না করায় সরকারের দেয়া ন্যায্য মূল্য পণ্য ক্রয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। টিসিবির দেয়া পাঁচটি পণ্য ডিলাররা বিক্রি শুরু করলেও প্রতিবারের ন্যায় এবারো অগোছালো আর অব্যবস্থাপনায় চলছে পণ্য বিক্রি। জেলার ২৪ জন ডিলারের মধ্যে মাত্র দুজন ডিলার পণ্য উত্তোলন করছেন।

সাধারণ মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য রমজান মাসে স্থানীয় বাজারের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ঠিক রাখতে সরকার ভর্তুকি দিয়ে ছয়টি পণ্য খোলাবাজারে বিক্রি শুরু করেছে। সারাদেশের ন্যায় কুড়িগ্রামেও শুরু হয়েছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)’র এই কার্যক্রম। তেল, চিনি, খেজুর, ছোলা এবং ডাল বিক্রয় করেছে প্রতিষ্ঠানটি। টিসিবির পণ্য বিক্রয় কার্যক্রম চলবে রমজানের শেষ দিন পর্যন্ত। এ পণ্যগুলো টিসিবির ট্রাক ও নিজস্ব বিক্রয় কেন্দ্র থেকে কেনার কথা থাকলেও জেলার শুধুমাত্র দুজন ডিলার ট্রাকে করে পণ্য বিক্রি করছে। গত বছরের তুলনায় ভোক্তাদের জন্য কম দরে এ বছর প্রতি কেজি চিনি ৪৭ টাকা, মসুর ডাল ৪৪ টাকা এবং সয়াবিন তেল ৮৫ টাকা, ছোলা ৬০ টাকা এবং খেজুর ১৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। টিসিবির ট্রাক থেকে প্রতিদিন চিনি চারশ কেজি, মসুর ডাল তিনশ কেজি, ছোলা তিনশ কেজি, খেজুর ৩০ কেজি, তেল পাঁচশ লিটার বিক্রি করা হবে। একজন ভোক্তা সর্বোচ্চ চার কেজি করে চিনি ও মসুর, ছোলা, ডাল, তেল ০৫ লিটার এবং খেজুর ০১ কেজি করে নিতে পাবে। কিন্তু সে নিয়ম না মেনেই খেজুর আধা কেজি এবং অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে ডিলার তেল বাধ্যতামূলক করায় অনেকেই পণ্য ক্রয় করতে বিমুখ হচ্ছেন। এছাড়াও খেজুরের মান নিয়েও রয়েছে ক্রেতাদের মাঝে প্রশ্ন। প্রচার প্রচারণা না থাকায় এবং জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে টিসিবির পণ্য বিক্রি করায় সাধারণ মানুষজন জানেন না সরকারের দেয়া ন্যায্য মূল্য জেলায় বিক্রি করা হচ্ছে।

টিসিবির পণ্য ক্রয় করতে আসা বুলেট, মজিবর, আকবর আলী, শহিদ আলী জানান, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে টিসিবির মাল বিক্রি হওয়ায় অনেক মানুষই জানে না এখানে কম দরে পণ্য পাওয়া যাচ্ছে। এখানে বিক্রি হওয়ায় যাদের প্রয়োজন তারা না পেয়ে পাচ্ছেন সামর্থ্যবান মানুষ।  ডিসি অফিসের স্টাফসহ উকিলরা এখান থেকে মাল কিনছেন।

তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, ব্যানারে ০১ কেজি করে খেজুর দেবার কথা। তা না দিয়ে আধা কেজি করে দিচ্ছে। এছাড়াও ডিলার বাধ্যতামূলক তেল কিনতে বলায় অনেকেই ফেরত যাচ্ছেন।

ভ্যান আলম, রবি, হোসেন আলী বলেন, বাহে আমরা জানি না সরকারের টিসিবি নামে কিছু আছে। কখনও দেখি নাই তা কই ক্যামনে। আর কেনা তো দূরত থাক।

টিসিবির ডিলার শাহিন বলেন, জনসম্মুখে টিসিবির পণ্য বিক্রি না করার ব্যাপারে বলেন, মানুষজন জানেন এখানে বিক্রি হয় তাই একটি নির্দিষ্ট জায়গায় পণ্য বিক্রি হচ্ছে। তেল বাধ্যতামূলক করা সম্পর্কে তিনি জানান বরাদ্দ বেশি থাকায় এই ব্যবস্থা। আর খেজুরের মান সঠিক রয়েছে দাবি ডিলারের।

পৌরবাজারের খুচরা ব্যবসায়ী আফজাল হোসেন বলেন, বর্তমান বাজারে ছোলা ৭০ টাকা, চিনি ৫২ টাকা, মসুর ডাল মাঝারি ৬০ টাকা, চিকন ডাল ৯৫ টাকা এবং খোলা তেল ৮০ এবং বোতলজাত ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টিসিবির পণ্য বিক্রি হচ্ছে কিনা আমার জানা নেই।

জেলা প্রশাসক সূত্রে জানা যায়, কুড়িগ্রামে টিসিবির ২৪ জন ডিলার রয়েছে। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ২জন, উলিুপর-নাগেশ^রী-চিলমারীতে ০১ জন করে, রাজারহাট-ভূরুঙ্গামারীতে ৩ জন করে, ফুলবাড়িতে ৬ জন এবং রৌমারী ৭ জন ডিলার রয়েছেন।

জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন বলেন, এখন পর্যন্ত ২ জন ডিলার টিসিবি পণ্য বিক্রি করছেন। আর বাকি ডিলাররা এখনো পণ্য উত্তোলন না করায় তাদের কার্যক্রম শুরু করেননি।

টিসিবির পণ্য সঠিকভাবে বিতরণ করার বিষয়ে তিনি বলেন, মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করে সরকারের দেয়া টিসিবির পণ্য যেন সাধারণ মানুষ ভোগ করতে পারেন সেই উদ্যোগ নেবার আশ^াস দেন তিনি।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

গণহত্যার পক্ষে কাজ করা গণমাধ্যমের বিচার হবে : উপদেষ্টা নাহিদ

কুড়িগ্রামে টিসিবির সুফল পাচ্ছেন না ভোক্তারা

আপডেট টাইম ০৪:৫৪:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০১৯

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি::কুড়িগ্রামে টিসিবির সকল ডিলাররা পণ্য উত্তোলন না করায় সরকারের দেয়া ন্যায্য মূল্য পণ্য ক্রয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। টিসিবির দেয়া পাঁচটি পণ্য ডিলাররা বিক্রি শুরু করলেও প্রতিবারের ন্যায় এবারো অগোছালো আর অব্যবস্থাপনায় চলছে পণ্য বিক্রি। জেলার ২৪ জন ডিলারের মধ্যে মাত্র দুজন ডিলার পণ্য উত্তোলন করছেন।

সাধারণ মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য রমজান মাসে স্থানীয় বাজারের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ঠিক রাখতে সরকার ভর্তুকি দিয়ে ছয়টি পণ্য খোলাবাজারে বিক্রি শুরু করেছে। সারাদেশের ন্যায় কুড়িগ্রামেও শুরু হয়েছে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)’র এই কার্যক্রম। তেল, চিনি, খেজুর, ছোলা এবং ডাল বিক্রয় করেছে প্রতিষ্ঠানটি। টিসিবির পণ্য বিক্রয় কার্যক্রম চলবে রমজানের শেষ দিন পর্যন্ত। এ পণ্যগুলো টিসিবির ট্রাক ও নিজস্ব বিক্রয় কেন্দ্র থেকে কেনার কথা থাকলেও জেলার শুধুমাত্র দুজন ডিলার ট্রাকে করে পণ্য বিক্রি করছে। গত বছরের তুলনায় ভোক্তাদের জন্য কম দরে এ বছর প্রতি কেজি চিনি ৪৭ টাকা, মসুর ডাল ৪৪ টাকা এবং সয়াবিন তেল ৮৫ টাকা, ছোলা ৬০ টাকা এবং খেজুর ১৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। টিসিবির ট্রাক থেকে প্রতিদিন চিনি চারশ কেজি, মসুর ডাল তিনশ কেজি, ছোলা তিনশ কেজি, খেজুর ৩০ কেজি, তেল পাঁচশ লিটার বিক্রি করা হবে। একজন ভোক্তা সর্বোচ্চ চার কেজি করে চিনি ও মসুর, ছোলা, ডাল, তেল ০৫ লিটার এবং খেজুর ০১ কেজি করে নিতে পাবে। কিন্তু সে নিয়ম না মেনেই খেজুর আধা কেজি এবং অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে ডিলার তেল বাধ্যতামূলক করায় অনেকেই পণ্য ক্রয় করতে বিমুখ হচ্ছেন। এছাড়াও খেজুরের মান নিয়েও রয়েছে ক্রেতাদের মাঝে প্রশ্ন। প্রচার প্রচারণা না থাকায় এবং জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে টিসিবির পণ্য বিক্রি করায় সাধারণ মানুষজন জানেন না সরকারের দেয়া ন্যায্য মূল্য জেলায় বিক্রি করা হচ্ছে।

টিসিবির পণ্য ক্রয় করতে আসা বুলেট, মজিবর, আকবর আলী, শহিদ আলী জানান, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে টিসিবির মাল বিক্রি হওয়ায় অনেক মানুষই জানে না এখানে কম দরে পণ্য পাওয়া যাচ্ছে। এখানে বিক্রি হওয়ায় যাদের প্রয়োজন তারা না পেয়ে পাচ্ছেন সামর্থ্যবান মানুষ।  ডিসি অফিসের স্টাফসহ উকিলরা এখান থেকে মাল কিনছেন।

তারা আরো অভিযোগ করে বলেন, ব্যানারে ০১ কেজি করে খেজুর দেবার কথা। তা না দিয়ে আধা কেজি করে দিচ্ছে। এছাড়াও ডিলার বাধ্যতামূলক তেল কিনতে বলায় অনেকেই ফেরত যাচ্ছেন।

ভ্যান আলম, রবি, হোসেন আলী বলেন, বাহে আমরা জানি না সরকারের টিসিবি নামে কিছু আছে। কখনও দেখি নাই তা কই ক্যামনে। আর কেনা তো দূরত থাক।

টিসিবির ডিলার শাহিন বলেন, জনসম্মুখে টিসিবির পণ্য বিক্রি না করার ব্যাপারে বলেন, মানুষজন জানেন এখানে বিক্রি হয় তাই একটি নির্দিষ্ট জায়গায় পণ্য বিক্রি হচ্ছে। তেল বাধ্যতামূলক করা সম্পর্কে তিনি জানান বরাদ্দ বেশি থাকায় এই ব্যবস্থা। আর খেজুরের মান সঠিক রয়েছে দাবি ডিলারের।

পৌরবাজারের খুচরা ব্যবসায়ী আফজাল হোসেন বলেন, বর্তমান বাজারে ছোলা ৭০ টাকা, চিনি ৫২ টাকা, মসুর ডাল মাঝারি ৬০ টাকা, চিকন ডাল ৯৫ টাকা এবং খোলা তেল ৮০ এবং বোতলজাত ৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টিসিবির পণ্য বিক্রি হচ্ছে কিনা আমার জানা নেই।

জেলা প্রশাসক সূত্রে জানা যায়, কুড়িগ্রামে টিসিবির ২৪ জন ডিলার রয়েছে। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ২জন, উলিুপর-নাগেশ^রী-চিলমারীতে ০১ জন করে, রাজারহাট-ভূরুঙ্গামারীতে ৩ জন করে, ফুলবাড়িতে ৬ জন এবং রৌমারী ৭ জন ডিলার রয়েছেন।

জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন বলেন, এখন পর্যন্ত ২ জন ডিলার টিসিবি পণ্য বিক্রি করছেন। আর বাকি ডিলাররা এখনো পণ্য উত্তোলন না করায় তাদের কার্যক্রম শুরু করেননি।

টিসিবির পণ্য সঠিকভাবে বিতরণ করার বিষয়ে তিনি বলেন, মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করে সরকারের দেয়া টিসিবির পণ্য যেন সাধারণ মানুষ ভোগ করতে পারেন সেই উদ্যোগ নেবার আশ^াস দেন তিনি।