ঢাকা ১০:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এরশাদের মতো রওশনও গৃহপালিত বিরোধী নেত্রী : ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (ছবি : ফাইল ফটো)

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাবেক বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী রওশন এরশাদ হয়েছেন বর্তমান সরকারের গৃহপালিত বিরোধী দলীয় নেত্রী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, এরশাদের জাতীয় পার্টি ছিল বর্তমান সরকারের গৃহপালিত বিরোধী দল। এখন এরশাদের মৃত্যুর পর রওশন এরশাদ হয়েছেন গৃহপালিত বিরোধী নেত্রী।

বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নিয়ে রবিবার সংসদে দেওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যের ও ঘোর বিরোধীতা করেন বিএনপি মহাসচিব।

রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে বলেন, ‘পঁচাত্তরে জাতির পিতার হত্যার পর জিয়া ক্ষমতা দখল করেন। তাকে অনুসরণ করে এরশাদ প্রথমে মার্শাল ল’জারি করেন। এরপর নিজেই ক্ষমতা দখল করেন। হাইকোর্ট এই দুজনের ক্ষমতা দখলকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন। এর ফলে এই দুজনের কাউকেই বৈধ রাষ্ট্রপতি বলা যায় না।’

তিনি বলেন, ‘অবৈধ যখন ঘোষণা করেছে, তখন তাদের দুজনের কেউই আর রাষ্ট্রপতি থাকে না, হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী তাদের রাষ্ট্রপতি হিসেবে উল্লেখ করা বৈধ নয়, এটাই বাস্তবতা। কারণ এই একটি রায়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখার সুযোগ হয়েছে।’

এ ছাড়া ১৯৮২ সালে এরশাদকে ক্ষমতা দখলের সুযোগ করে দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। বিনিময়ে এরশাদ সাহেব তাকে দুটি বাড়ি এবং নগদ ১০ লাখ টাকাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়েছেন বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া এসব বক্তব্যের পাল্টা জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, বরাবরই আওয়ামী লীগ এরশাদের কর্মকাণ্ডে সুবিধা নিয়েছে। এরশাদকে সঙ্গে নিয়েই এই দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছেন, মানুষের অধিকারকে কেড়ে নিয়েছেন। কারণ বরাবরই তিনি (শেখ হাসিনা) এরশাদকে সঙ্গে নিয়ে এলায়েন্স করেছেন। তাদের সঙ্গে নিয়ে তিনি গণতন্ত্রকে হত্যা করে, তাদের বিরোধীদলে বসিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, স্বৈরশাসক এরশাদ অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পরে সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনিই তখন বলেছিলেন ‘আই এম নট আনহ্যাপী’।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, এরশাদের ক্ষমতা দখলের সাথে বেগম খালেদা জিয়া কোনোভাবেই জড়িত কিংবা সংশ্লিষ্ট ছিলেন না। এ ধরনের মিথ্যা তথ্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করা যাবে না।

জিয়াউর রহমানকে নিয়ে সংসদে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকেও অসত্য বলে দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব।

খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে ফের আন্দোলনের ডাক দিয়ে ফখরুল বলেন, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমেই বেগম জিয়াকে জেলখানা থেকে মুক্ত করা হবে।

আওয়ামী লীগ সরকারকে গণবিরোধী ও জবরদখলকারী উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকারকে বিদায় না করা পর্যন্ত এদেশের গণতন্ত্র মুক্ত হবে না, দেশের মানুষেরও মুক্তি মিলবে না।

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিভেদ ভুলে সম্মিলিত সংগ্রামের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্ত আন্দোলন বেগবান করতে পারলেই হারানো গণতন্ত্র ফিরে আসবে, দেশের ১৬ কোটি মানুষেরও মুক্তি মিলবে।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন- মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান প্রমুখ।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

এরশাদের মতো রওশনও গৃহপালিত বিরোধী নেত্রী : ফখরুল

আপডেট টাইম ০৪:৫৯:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (ছবি : ফাইল ফটো)

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাবেক বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী রওশন এরশাদ হয়েছেন বর্তমান সরকারের গৃহপালিত বিরোধী দলীয় নেত্রী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, এরশাদের জাতীয় পার্টি ছিল বর্তমান সরকারের গৃহপালিত বিরোধী দল। এখন এরশাদের মৃত্যুর পর রওশন এরশাদ হয়েছেন গৃহপালিত বিরোধী নেত্রী।

বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নিয়ে রবিবার সংসদে দেওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যের ও ঘোর বিরোধীতা করেন বিএনপি মহাসচিব।

রবিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে বলেন, ‘পঁচাত্তরে জাতির পিতার হত্যার পর জিয়া ক্ষমতা দখল করেন। তাকে অনুসরণ করে এরশাদ প্রথমে মার্শাল ল’জারি করেন। এরপর নিজেই ক্ষমতা দখল করেন। হাইকোর্ট এই দুজনের ক্ষমতা দখলকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন। এর ফলে এই দুজনের কাউকেই বৈধ রাষ্ট্রপতি বলা যায় না।’

তিনি বলেন, ‘অবৈধ যখন ঘোষণা করেছে, তখন তাদের দুজনের কেউই আর রাষ্ট্রপতি থাকে না, হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী তাদের রাষ্ট্রপতি হিসেবে উল্লেখ করা বৈধ নয়, এটাই বাস্তবতা। কারণ এই একটি রায়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখার সুযোগ হয়েছে।’

এ ছাড়া ১৯৮২ সালে এরশাদকে ক্ষমতা দখলের সুযোগ করে দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। বিনিময়ে এরশাদ সাহেব তাকে দুটি বাড়ি এবং নগদ ১০ লাখ টাকাসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়েছেন বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া এসব বক্তব্যের পাল্টা জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, বরাবরই আওয়ামী লীগ এরশাদের কর্মকাণ্ডে সুবিধা নিয়েছে। এরশাদকে সঙ্গে নিয়েই এই দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছেন, মানুষের অধিকারকে কেড়ে নিয়েছেন। কারণ বরাবরই তিনি (শেখ হাসিনা) এরশাদকে সঙ্গে নিয়ে এলায়েন্স করেছেন। তাদের সঙ্গে নিয়ে তিনি গণতন্ত্রকে হত্যা করে, তাদের বিরোধীদলে বসিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, স্বৈরশাসক এরশাদ অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পরে সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনিই তখন বলেছিলেন ‘আই এম নট আনহ্যাপী’।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, এরশাদের ক্ষমতা দখলের সাথে বেগম খালেদা জিয়া কোনোভাবেই জড়িত কিংবা সংশ্লিষ্ট ছিলেন না। এ ধরনের মিথ্যা তথ্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করা যাবে না।

জিয়াউর রহমানকে নিয়ে সংসদে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকেও অসত্য বলে দাবি করেন বিএনপি মহাসচিব।

খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে ফের আন্দোলনের ডাক দিয়ে ফখরুল বলেন, ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমেই বেগম জিয়াকে জেলখানা থেকে মুক্ত করা হবে।

আওয়ামী লীগ সরকারকে গণবিরোধী ও জবরদখলকারী উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকারকে বিদায় না করা পর্যন্ত এদেশের গণতন্ত্র মুক্ত হবে না, দেশের মানুষেরও মুক্তি মিলবে না।

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিভেদ ভুলে সম্মিলিত সংগ্রামের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্ত আন্দোলন বেগবান করতে পারলেই হারানো গণতন্ত্র ফিরে আসবে, দেশের ১৬ কোটি মানুষেরও মুক্তি মিলবে।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন- মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান প্রমুখ।