ঢাকা ০৫:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
আমরা এমন একটি দেশ গড়তে চাই যে দেশে কোনো বৈষম্য থাকবে না- ঠাকুরগাঁওয়ে ডা. শফিকুর রহমান সকল ধর্মের মানুষদের নিয়ে ‌সম্প্রীতির ঐক্যতানে গাহি সাম্যের গান’ সমাবেশ উপজেলা প্রানিসম্পদ কর্মকর্তা ও ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের বদলীজনিত বিদায়ী সম্বর্ধনা অনুষ্ঠিত সীমান্ত হত্যা কখনোই মেনে নেওয়ার নয়: মির্জা ফখরুল আ. লীগ সাড়ে ১৫ বছর দেশের পরিবর্তে নিজেদেরকে সাজিয়েছে: জামায়াত আমির ‘সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের পেছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে’ ঠাকুরগাঁওয়ে আল-হাসানাহ স্কুলের ফলাফল প্রকাশ ও কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরুষ্কার বিতরন গণ-হত্যাকারী, সন্ত্রাশী, দুর্নীতিবাজদের বিএনপিতে জায়গা হবে না : মির্জা ফখরুল দুর্নীতির অভিযোগে পীরগঞ্জ পাইলট স্কুলের প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত ড. মো. হারুনুর রশীদ পরিচালিত সেলিনা হোসেনের ‘কাকতাড়ুয়া বুধা’ মুক্তি পেয়েছে

যে কারণে সুপার সাইক্লোন আমফানকে এত ভয়

নিজস্ব প্রতিবেদক::দেশে একদিকে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, অন্যদিকে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় আমফান সুপার সাইক্লোনে রূপান্তরিত হয়েছে।বর্তমান অবস্থান ও অনুযায়ী এটি বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় অঞ্চলের দিকেই ধেয়ে আসছে।সোমবার দিনের প্রথম ভাগেই ঘূর্ণিঝড় আমফান সর্বোচ্চ তীব্রতার একটি ‘সুপার সাইক্লোনে’ পরিণত হয়েছে বলে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ। সন্ধ্যা ছয়টায় আবহাওয়া অফিস থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে; কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১০১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে; মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

এই ঘূর্ণিঝড়টি বুধবার বিকেল থেকে সন্ধ্যে নাগাদ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত দীঘা থেকে শুরু করে বাংলাদেশের হাতিয়া দ্বীপের মধ্যবর্তী সমুদ্রতটের কোনও একটি জায়গা দিয়ে উপকূলে আছড়ে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মৌসুম শুরু আগে বঙ্গোপসাগরে এরকম ঝড় এই শতাব্দীতে প্রথম উল্লেখ করে এবিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি।

ভারতীয় আবহাওয়াবিদদের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,, তীব্রতার মাপকাঠিতে আমফান নামের এই ঘূর্ণিঝড় এর মধ্যেই অনেক রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।

দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ‘আমফান’ নামের ঘূর্ণিঝড়টি যে আজ সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ একটি ‘অতি প্রবল’ বা ‘এক্সট্রিমলি সিভিয়ার’ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে, ইন্ডিয়ান মেটিওরলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট তা টুইট করে জানিয়েছিল সকালেই। এর মাত্র ঘন্টা দুয়েকে বাদেই তারা আবার টুইট করে ঘোষণা করে – বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ সেটি একটি সুপার সাইক্লোনে বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে।

ভারতের আবহাওয়া বিভাগের মহাপরিচালক মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র বিবিসিকে জানান, আমফান নামে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া এই ঘূর্ণিঝড়টি থেকে ২০ মে বুধবার আমরা সবচেয়ে বড় বিপদের আশঙ্কা করছি। সেদিন বিকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে কোনও একটা সময় এটা উপকূলে আছড়ে পড়বে। মঙ্গলবার ১৯ মে থেকেই উপকূলীয় অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে। বুধবার ২০ মে সকাল থেকে তার সঙ্গে যোগ হবে তীব্র ঝড়ো বাতাস। ঝড়টি এখন উত্তর-উত্তর পূর্ব অভিমুখে এগোচ্ছে, বুধবার এটি পশ্চিমবঙ্গের দীঘা আর বাংলাদেশের হাতিয়ার মাঝামাঝি কোনও একটা এলাকা দিয়ে সমুদ্রতট অতিক্রম করবে।

তিনি বলেন, ডাঙায় আছড়ে পড়ার সময় বাতাসের বেগ ঘন্টায় ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটারের মতো হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ভারতের ন্যাশনাল ডিজ্যাস্টার রেসপন্স ফোর্সের অন্তত ৩৭টি দলকে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশাতে এই ঝড়ের মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে ওই বাহিনীর প্রধান জানিয়েছেন। বছরখানেক আগেই ওড়িশাতে আছড়ে পড়েছিল সাইক্লোন ফণী, তবে এবার আমফানের আঘাত থেকে ওই রাজ্যটি বেঁচে গেলেও যেতে পারে আশা করা যাচ্ছে। কিন্তু ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূলের একটা বিস্তীর্ণ অংশ নিয়ে তেমন একটা আশাবাদী হওয়া যাচ্ছে না – যার একটা বড় কারণ আমফানের তীব্রতা।

বিবিসিকে ভারতের বেসরকারি আবহাওয়া পূর্বাভাস সংস্থা স্কাইমেটের প্রধান মহেশ পালাওয়াট জানিয়েছেন, আমফান এর মধ্যেই ঘন্টায় দেড়শো কিলোমিটারেরও বেশি গতিবেগসম্পন্ন ঝড়ো বাতাস সঙ্গে ‘প্যাক’ করে নিয়েছে। মাত্র চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে এটা একটা ঘূর্ণিঝড় থেকে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে, সেটাও একটা রেকর্ড।

উপকূলের কাছাকাছি এলে এই ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা সামান্য কমবে, তবে তার পরেও এর বিধ্বংসী ক্ষমতাকে খাটো করে দেখার কোনও সুযোগ নেই বলেও জানান পালাওয়াট।

তিনি বলেন, স্থলভূমি থেকে শুকনো বাতাস এসে সিস্টেমটাকে কিছুটা দুর্বল করে দেয় – এই আমফানের ক্ষেত্রেও সেটাই ঘটবে। কিন্তু তার পরেও এটা একটা প্রচণ্ড সাংঘাতিক ঘূর্ণিঝড় – যার তান্ডব আর ক্ষয়ক্ষতি সাধনের ক্ষমতা মারাত্মক। ফলে পুরো উপকূলীয় এলাকা জুড়েই মানুষকে সাবধান থাকতে হবে।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

আমরা এমন একটি দেশ গড়তে চাই যে দেশে কোনো বৈষম্য থাকবে না- ঠাকুরগাঁওয়ে ডা. শফিকুর রহমান

যে কারণে সুপার সাইক্লোন আমফানকে এত ভয়

আপডেট টাইম ১১:৩২:৪৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মে ২০২০
নিজস্ব প্রতিবেদক::দেশে একদিকে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, অন্যদিকে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় আমফান সুপার সাইক্লোনে রূপান্তরিত হয়েছে।বর্তমান অবস্থান ও অনুযায়ী এটি বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের উপকূলীয় অঞ্চলের দিকেই ধেয়ে আসছে।সোমবার দিনের প্রথম ভাগেই ঘূর্ণিঝড় আমফান সর্বোচ্চ তীব্রতার একটি ‘সুপার সাইক্লোনে’ পরিণত হয়েছে বলে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ। সন্ধ্যা ছয়টায় আবহাওয়া অফিস থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১০৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে; কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১০১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে; মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

এই ঘূর্ণিঝড়টি বুধবার বিকেল থেকে সন্ধ্যে নাগাদ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত দীঘা থেকে শুরু করে বাংলাদেশের হাতিয়া দ্বীপের মধ্যবর্তী সমুদ্রতটের কোনও একটি জায়গা দিয়ে উপকূলে আছড়ে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মৌসুম শুরু আগে বঙ্গোপসাগরে এরকম ঝড় এই শতাব্দীতে প্রথম উল্লেখ করে এবিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি।

ভারতীয় আবহাওয়াবিদদের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,, তীব্রতার মাপকাঠিতে আমফান নামের এই ঘূর্ণিঝড় এর মধ্যেই অনেক রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।

দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া ‘আমফান’ নামের ঘূর্ণিঝড়টি যে আজ সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ একটি ‘অতি প্রবল’ বা ‘এক্সট্রিমলি সিভিয়ার’ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে, ইন্ডিয়ান মেটিওরলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট তা টুইট করে জানিয়েছিল সকালেই। এর মাত্র ঘন্টা দুয়েকে বাদেই তারা আবার টুইট করে ঘোষণা করে – বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ সেটি একটি সুপার সাইক্লোনে বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে।

ভারতের আবহাওয়া বিভাগের মহাপরিচালক মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র বিবিসিকে জানান, আমফান নামে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া এই ঘূর্ণিঝড়টি থেকে ২০ মে বুধবার আমরা সবচেয়ে বড় বিপদের আশঙ্কা করছি। সেদিন বিকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে কোনও একটা সময় এটা উপকূলে আছড়ে পড়বে। মঙ্গলবার ১৯ মে থেকেই উপকূলীয় অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে। বুধবার ২০ মে সকাল থেকে তার সঙ্গে যোগ হবে তীব্র ঝড়ো বাতাস। ঝড়টি এখন উত্তর-উত্তর পূর্ব অভিমুখে এগোচ্ছে, বুধবার এটি পশ্চিমবঙ্গের দীঘা আর বাংলাদেশের হাতিয়ার মাঝামাঝি কোনও একটা এলাকা দিয়ে সমুদ্রতট অতিক্রম করবে।

তিনি বলেন, ডাঙায় আছড়ে পড়ার সময় বাতাসের বেগ ঘন্টায় ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটারের মতো হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ভারতের ন্যাশনাল ডিজ্যাস্টার রেসপন্স ফোর্সের অন্তত ৩৭টি দলকে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশাতে এই ঝড়ের মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে ওই বাহিনীর প্রধান জানিয়েছেন। বছরখানেক আগেই ওড়িশাতে আছড়ে পড়েছিল সাইক্লোন ফণী, তবে এবার আমফানের আঘাত থেকে ওই রাজ্যটি বেঁচে গেলেও যেতে পারে আশা করা যাচ্ছে। কিন্তু ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূলের একটা বিস্তীর্ণ অংশ নিয়ে তেমন একটা আশাবাদী হওয়া যাচ্ছে না – যার একটা বড় কারণ আমফানের তীব্রতা।

বিবিসিকে ভারতের বেসরকারি আবহাওয়া পূর্বাভাস সংস্থা স্কাইমেটের প্রধান মহেশ পালাওয়াট জানিয়েছেন, আমফান এর মধ্যেই ঘন্টায় দেড়শো কিলোমিটারেরও বেশি গতিবেগসম্পন্ন ঝড়ো বাতাস সঙ্গে ‘প্যাক’ করে নিয়েছে। মাত্র চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে এটা একটা ঘূর্ণিঝড় থেকে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে, সেটাও একটা রেকর্ড।

উপকূলের কাছাকাছি এলে এই ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা সামান্য কমবে, তবে তার পরেও এর বিধ্বংসী ক্ষমতাকে খাটো করে দেখার কোনও সুযোগ নেই বলেও জানান পালাওয়াট।

তিনি বলেন, স্থলভূমি থেকে শুকনো বাতাস এসে সিস্টেমটাকে কিছুটা দুর্বল করে দেয় – এই আমফানের ক্ষেত্রেও সেটাই ঘটবে। কিন্তু তার পরেও এটা একটা প্রচণ্ড সাংঘাতিক ঘূর্ণিঝড় – যার তান্ডব আর ক্ষয়ক্ষতি সাধনের ক্ষমতা মারাত্মক। ফলে পুরো উপকূলীয় এলাকা জুড়েই মানুষকে সাবধান থাকতে হবে।