ঢাকা ০২:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভূয়া চিকিৎসকের ৩ মাসের কারাদণ্ড

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি::ডাক্তারী না পড়েই মাত্র ২০ বছর বয়সে তিনি রাতারাতি হয়ে গেছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। চেম্বার খুলে রীতিমতো চিকিৎসা দিচ্ছিলেন জটিল সব রোগের। চমকপ্রদ ভিজিটিং কার্ড বানিয়ে প্রতারণা করছিলেন চিকিৎসা নিতে আসা গরীব-অসহায় রোগীদের। কিন্তু তার এ প্রতারণা আর বেশিদুর এগোতে পারলো না, ধরা খেলেন ভ্রাম্যমাণ আদালতে। আদালতকে দেখাতে পারেননি কোন বৈধ কাগজপত্র। ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক জানালেন, এই ব্যক্তির ভুল চিকিৎসায় যে কোনো রোগীর মৃত্যুসহ যে কোনো বড় ক্ষয়ক্ষতি হতে পারতো,তবে সেসবের আগেই তাকে আইনের আওতায় আনা গেছে।
অবশেষে নিজ মুখে নিজের সকল দোষ স্বীকার করায় আদালত তাকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরগাঁওয়ের বড় খোঁচাবাড়ী হাট নামক এলাকায়। দণ্ডপ্রাপ্ত চিকিৎসক সোহাগ ইসলাম বাবু (২০) সদর উপজেলার কিসমত দৌলতপুর এলাকার মৃত-খলিলুর রহমান এর ছেলে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, বেশকিছু দিন ধরে সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের বড়খোঁচাবাড়ী এলাকায় বিশাল সাইনবোর্ড লাগিয়ে নিজেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দাবি করে এলাকার গরীব-অসহায় মানুষদের সাথে প্রতারণা করে আসছিলেন কথিত ডাঃ সোহাগ ইসলাম বাবু।
বিষয়টি জানতে পেরে আজ শনিবার (১৮ জুলাই) দুপুরে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ-আল-মামুন।
এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের জেরার মুৃখে কথিত ডাক্তার বাবু নিজের সকল দোষ স্বীকার করে বলেন, তার ভিজিটিং কার্ডে ডিপ্লোমা ডাক্তার লেখা থাকলেও তিনি ডিপ্লোমাধারী নন। এমনকি তার উল্লেখ করা সার্টিফিকেটগুলো পল্লী চিকিৎসকের, তবে তিনি ওসব সার্টিফিকেট অর্জন করেননি।
এসময় নির্বাহী অফিসার তার ব্যাগ চেক করলে বেড়িয়ে আসে আরও ভয়ানক তথ্য। তার ব্যাগ থেকে বের হয় রোগীর প্রেসক্রিপসনের সেট (কোন রোগ হলে কোন ওষুধ দেয়া হবে)। সেখানে রোগের লক্ষণ বিবরণ সহ কি ওষুধ দেয়া হবে তার তালিকা লেখা আছে। এই তালিকা তিনি যে ডাক্তারের কম্পাউন্ডার হিসেবে কাজ করেছেন তার করে দেয়া এবং সে মোতাবেক তিনি রোগীদের চিকিৎসা দিতেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ-আল-মামুন জানান, এ এলাকায় সেবা নিতে আসা রোগীদের বড় ধরনের কোন ক্ষতি হওয়ার আগেই আমরা অপরাধীকে ধরতে পেরেছি। অভিযুক্ত তার সব দোষ স্বীকার করায় তাকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানান তিনি।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

ভূয়া চিকিৎসকের ৩ মাসের কারাদণ্ড

আপডেট টাইম ০৪:১৯:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জুলাই ২০২০

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি::ডাক্তারী না পড়েই মাত্র ২০ বছর বয়সে তিনি রাতারাতি হয়ে গেছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। চেম্বার খুলে রীতিমতো চিকিৎসা দিচ্ছিলেন জটিল সব রোগের। চমকপ্রদ ভিজিটিং কার্ড বানিয়ে প্রতারণা করছিলেন চিকিৎসা নিতে আসা গরীব-অসহায় রোগীদের। কিন্তু তার এ প্রতারণা আর বেশিদুর এগোতে পারলো না, ধরা খেলেন ভ্রাম্যমাণ আদালতে। আদালতকে দেখাতে পারেননি কোন বৈধ কাগজপত্র। ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক জানালেন, এই ব্যক্তির ভুল চিকিৎসায় যে কোনো রোগীর মৃত্যুসহ যে কোনো বড় ক্ষয়ক্ষতি হতে পারতো,তবে সেসবের আগেই তাকে আইনের আওতায় আনা গেছে।
অবশেষে নিজ মুখে নিজের সকল দোষ স্বীকার করায় আদালত তাকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে ঠাকুরগাঁওয়ের বড় খোঁচাবাড়ী হাট নামক এলাকায়। দণ্ডপ্রাপ্ত চিকিৎসক সোহাগ ইসলাম বাবু (২০) সদর উপজেলার কিসমত দৌলতপুর এলাকার মৃত-খলিলুর রহমান এর ছেলে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্র জানায়, বেশকিছু দিন ধরে সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের বড়খোঁচাবাড়ী এলাকায় বিশাল সাইনবোর্ড লাগিয়ে নিজেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দাবি করে এলাকার গরীব-অসহায় মানুষদের সাথে প্রতারণা করে আসছিলেন কথিত ডাঃ সোহাগ ইসলাম বাবু।
বিষয়টি জানতে পেরে আজ শনিবার (১৮ জুলাই) দুপুরে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ-আল-মামুন।
এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের জেরার মুৃখে কথিত ডাক্তার বাবু নিজের সকল দোষ স্বীকার করে বলেন, তার ভিজিটিং কার্ডে ডিপ্লোমা ডাক্তার লেখা থাকলেও তিনি ডিপ্লোমাধারী নন। এমনকি তার উল্লেখ করা সার্টিফিকেটগুলো পল্লী চিকিৎসকের, তবে তিনি ওসব সার্টিফিকেট অর্জন করেননি।
এসময় নির্বাহী অফিসার তার ব্যাগ চেক করলে বেড়িয়ে আসে আরও ভয়ানক তথ্য। তার ব্যাগ থেকে বের হয় রোগীর প্রেসক্রিপসনের সেট (কোন রোগ হলে কোন ওষুধ দেয়া হবে)। সেখানে রোগের লক্ষণ বিবরণ সহ কি ওষুধ দেয়া হবে তার তালিকা লেখা আছে। এই তালিকা তিনি যে ডাক্তারের কম্পাউন্ডার হিসেবে কাজ করেছেন তার করে দেয়া এবং সে মোতাবেক তিনি রোগীদের চিকিৎসা দিতেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ-আল-মামুন জানান, এ এলাকায় সেবা নিতে আসা রোগীদের বড় ধরনের কোন ক্ষতি হওয়ার আগেই আমরা অপরাধীকে ধরতে পেরেছি। অভিযুক্ত তার সব দোষ স্বীকার করায় তাকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান চলমান থাকবে বলেও জানান তিনি।