ঢাকা ০৮:২১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভিজিডির চালে পোকা, গুদাম কর্মকর্তা বলেন ‌‌‌‘আমি নিজেও খাই’

গাইবান্ধা প্রতিনিধি:: গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ভিজিডির উপকার ভোগীদের মাঝে নিম্নমানের চাল বিতরণের অভিযোগ উঠেছে। খাওয়ার অনুপোযুগী এ চাল উপকারভোগীরা নিজেরা না খেয়ে গরু-ছাগলকে খাওয়াচ্ছেন।

তবে সাঘাটা উপজেলা বোনারপাড়া খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রওশন আলম বলেন, ‘চালের রঙ লালচে হওয়ার কারণ বেশি হিট পেয়েছে। তবে চালগুলো গুণগতমান কমেনি। সম্পূর্ণভাবে খাওয়ার উপযোগী। মাঝে মাঝে আমি নিজেও খাই।’

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার মুক্তিনগর ইউনিয়নের আলেয়া বেগম ও লাকী বেগম। অভাবের সংসারে সরকারিভাবে ভিজিডির ৩০ কেজি চাল তাদের জন্য সরকারের দেয়া আশীর্বাদ। কিন্তু এবার বোনারপাড়া খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে দেয়া চাল দেখতে ইউপি চত্বরে এসেছেন আলেয়া বেগম, লাকী বেগমসহ আরো অনেকে। চাল দেখে সবাই হতবাক। কারণ ধান ও আর চালের রঙয়ের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। কোনো চালের রঙ লালচে, কোনটি সবুজ, আবার কোনটি কালো।

মুক্তিনগর ইউনিয়নের আলেয়া বেগম বলেন, ‘সরকার করোনা মোকাবিলায় লকডাউন দিয়েছে। কিন্তু জনগণকে যে চাল দিচ্ছে তা খেলে করোনা ভাইরাস লাগবে না, অসুস্থ হয়ে কখন যে মরবো তার ঠিক নেই। এ চাল তো মানুষ খেতে পারবে না। গরু ছাগলকে এ চাল খাওয়ালেও অসুস্থ হবে। কারণ চালের মধ্যে পোকা নড়াচড়া করছে।’

একই ইউপির আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সরকারি চাল এতটা নিম্নমানের হবে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। সরকার মনে করে জনগণ ঠিকঠাক চাল পাচ্ছেন। কিন্তু এ চাল এতোটাই নিম্নমানের যে মানুষ খেতে পারবে না। সেটা হয়তো সরকার জানে না।’

সাঘাটা উপজেলার মুক্তিনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরশাদ আজিজ রোকন বলেন, ‘এবার ভিজিডির চালের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এতো নিম্নমানের চাল কখনো দেখিনি। এ চাল বিতরণের কারণে উপকারভোগীরা আমাদের গালমন্দ করছেন। বিষয়টি উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তাকে জানালেও কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো বিতরণের কথা বলেন। ফলে বাধ্য হয়ে চাল বিতরণ করি।’

সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সাঘাটা উপজেলার ১০ ইউনিয়নে মোট ভিজিডি’র উপকারভোগীর সংখ্যা ২০৮০ জন। এর মধ্যে মুক্তিনগর ইউনিয়ন পরিষদের ভিজিটির উপকার ভোগী মোট ২০৩ জন।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

ভিজিডির চালে পোকা, গুদাম কর্মকর্তা বলেন ‌‌‌‘আমি নিজেও খাই’

আপডেট টাইম ০২:১৩:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ মে ২০২১
গাইবান্ধা প্রতিনিধি:: গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ভিজিডির উপকার ভোগীদের মাঝে নিম্নমানের চাল বিতরণের অভিযোগ উঠেছে। খাওয়ার অনুপোযুগী এ চাল উপকারভোগীরা নিজেরা না খেয়ে গরু-ছাগলকে খাওয়াচ্ছেন।

তবে সাঘাটা উপজেলা বোনারপাড়া খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রওশন আলম বলেন, ‘চালের রঙ লালচে হওয়ার কারণ বেশি হিট পেয়েছে। তবে চালগুলো গুণগতমান কমেনি। সম্পূর্ণভাবে খাওয়ার উপযোগী। মাঝে মাঝে আমি নিজেও খাই।’

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার মুক্তিনগর ইউনিয়নের আলেয়া বেগম ও লাকী বেগম। অভাবের সংসারে সরকারিভাবে ভিজিডির ৩০ কেজি চাল তাদের জন্য সরকারের দেয়া আশীর্বাদ। কিন্তু এবার বোনারপাড়া খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে দেয়া চাল দেখতে ইউপি চত্বরে এসেছেন আলেয়া বেগম, লাকী বেগমসহ আরো অনেকে। চাল দেখে সবাই হতবাক। কারণ ধান ও আর চালের রঙয়ের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। কোনো চালের রঙ লালচে, কোনটি সবুজ, আবার কোনটি কালো।

মুক্তিনগর ইউনিয়নের আলেয়া বেগম বলেন, ‘সরকার করোনা মোকাবিলায় লকডাউন দিয়েছে। কিন্তু জনগণকে যে চাল দিচ্ছে তা খেলে করোনা ভাইরাস লাগবে না, অসুস্থ হয়ে কখন যে মরবো তার ঠিক নেই। এ চাল তো মানুষ খেতে পারবে না। গরু ছাগলকে এ চাল খাওয়ালেও অসুস্থ হবে। কারণ চালের মধ্যে পোকা নড়াচড়া করছে।’

একই ইউপির আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সরকারি চাল এতটা নিম্নমানের হবে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। সরকার মনে করে জনগণ ঠিকঠাক চাল পাচ্ছেন। কিন্তু এ চাল এতোটাই নিম্নমানের যে মানুষ খেতে পারবে না। সেটা হয়তো সরকার জানে না।’

সাঘাটা উপজেলার মুক্তিনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরশাদ আজিজ রোকন বলেন, ‘এবার ভিজিডির চালের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এতো নিম্নমানের চাল কখনো দেখিনি। এ চাল বিতরণের কারণে উপকারভোগীরা আমাদের গালমন্দ করছেন। বিষয়টি উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তাকে জানালেও কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো বিতরণের কথা বলেন। ফলে বাধ্য হয়ে চাল বিতরণ করি।’

সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর বলেন, ‘বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সাঘাটা উপজেলার ১০ ইউনিয়নে মোট ভিজিডি’র উপকারভোগীর সংখ্যা ২০৮০ জন। এর মধ্যে মুক্তিনগর ইউনিয়ন পরিষদের ভিজিটির উপকার ভোগী মোট ২০৩ জন।