ঢাকা ০৪:০২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যেসব সবজিতে মৃত্যুঝুঁকি!

ডেস্ক:: সবজি খেতে আমরা কমবেশি সবাই খুব পছন্দ করি। নাম জানা বা অজানা বিভিন্ন সবজি আমরা বিভিন্ন সময়ে খেয়ে থাকি। আমাদের দেশে প্রায় সব ধরনের সবজি পাওয়া যায়। সুস্থ থাকার জন্য আমাদের প্রতিনিয়ত খাবারে সবজি রাখতে হয়। সবজি বেশি খাওয়া সুস্বাস্থ্যের প্রতীক হিসেবে মানা হয়। কিন্তু এমন কিছু সবজি আছে যা বেশি খেলে মৃত্যু হতে পারে। এমন কিছু সবজি আছে যাতে বিষ থাকে। যে সবজিতে অনেক সময় মরণব্যাধি রোগ থাকে। কিছু সবজি রয়েছে যা মোটামুটি প্রতিদিন আমাদের খাবার মেন্যুতে থাকে। এমনকি রান্না ঘরেও থাকে এইসব সবজি। কিন্তু মৃত্যুনাশক এই সবজিগুলো কি তা জানা থাকলে আমরা সচেতন হতে পারি।

জেনে নিন কোন সবজি বেশি খেলে মৃত্যু ঘটতে পারে-

শিম বিচি: অনেকেরই পছন্দের সবজির তালিকায় আছে শিমের নাম। এটি খুবই সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। শিম, শিমের বিচি এবং শিমের পাতাও শাক হিসেবে খাওয়া যায়। শিমের বিচিতে রয়েছে উচ্চমানের ফাইবার প্রোটিন, যা শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজন। তবে শিমের বিচিতে ফাইটোহিমাটোগ্লুটানিন নামক বিষ থাকে। যা আপনাকে মারাত্মক অসুস্থ্য করে দিতে পারে। যার ফলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই রান্নার পূর্বে ১০ মিনিট সিদ্ধ করে তারপর রান্না করতে পারেন। সেক্ষেত্রে ক্ষতিকারক উপাদান আর থাকবে না।

আলু: প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আলু থাকে না এমন খুব কমই দেখা যায়। সহজলভ্যতা, শর্করা, আর নানা ধরনের খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুত করা যায় বিধায় পৃথিবীব্যাপী আলুর চাহিদা ব্যাপক। তবে সবুজ দাগযুক্ত আলু শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এতে সোলানাইন নামক বিষাক্ত পদার্থ থাকে যা রান্না এবং পোড়ানোর পরও দূর হয় না। বরং সবুজ দাগযুক্ত আলু ব্যবহার না করাই উত্তম। এছাড়া আলুর পাতা ও কাণ্ডে গ্লাইকো অ্যাল্কালয়েড থাকে। বাসায় অনেক দিন পর্যন্ত আলু রেখে দিলে এর মধ্যে গ্যাঁজ হয়ে যায়। এই গ্যাঁজে গ্লাইকো অ্যাল্কালয়েড থাকে যা আলোর সংস্পর্শে বৃদ্ধি পায়। সবুজ ও গ্যাঁজ হওয়া আলু খেলে ডায়রিয়া, মাথাব্যাথা, এমনকি কোমায় চলে যেতে পারে। ফলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

লাল মটরশুটি: স্বাস্থ্যসম্মত সবজি হিসেবে মটরশুটির খ্যাতি রয়েছে। এটি সারাবছর প্রস্তুতির জন্য আপনি প্রয়োজনীয় ভিটামিন বি পাবেন। কিন্তু লাল মটরশুটিতে রয়েছে বিষাক্ত পদার্থ। এ বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে এ ধরনের মটরশুটিকে ১০ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে সেদ্ধ করতে হয়। সেদ্ধ করা ছাড়া রান্না করলে এটি দুই থেকে তিনগুণ বেশি ক্ষতি করতে পারে।

টমেটো: টমেটো একটি দৃষ্টিনন্দন শীতের সবজি। এটি একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিসমৃদ্ধ সবজি। সবজি হিসেবে টমেটোর জুড়ি অনেক। টমেটো আমাদের দেশে সারা বছর পাওয়া যায়। এটি যেমন কাঁচা খাওয়া যায়, ঠিক একইভাবে রান্না করে বা রান্না সুস্বাদু করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। উদ্ভিদ বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে টমেটো একটি ফল হলেও, সবজি হিসেবেই সারা বিশ্বে টমেটো পরিচিত। সবজি এবং সালাদ হিসেবে ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ টমেটোর বেশ চাহিদা। তবে আলুর মতোই টমেটোর পাতা ও কাণ্ডেও গ্লাইকো অ্যাল্কালয়েড থাকে যা হজমে সমস্যা সৃষ্টি করে। কাঁচা সবুজ টমেটোতেও একই উপাদান আছে। তবে অল্প পরিমাণে খেলে সমস্যা নেই।

কামরাঙা: কামরাঙা কোনোভাবেই খালি পেটে খাওয়া চলবে না। ডায়ারিয়া হলে কামরাঙা খাওয়া চলবে না। কামরাঙা একটি অক্সালেট সমৃদ্ধ ভিটামিন সি জাতীয় ফল। সে কারণে যাদের কিডনির সমস্যা রয়েছে, তাদের কামরাঙা খেতে নিষেধ করছেন চিকিৎসা। স্বাভাবিক কিডনির যা কোনো ক্ষতি করে না। কিন্তু কারও কিডনি খারাপ হলে সেই বিষ কিডনির আরো ক্ষতি করতে পারে।

তাই সবজি খাওয়ার সময়ও পরিমাণ মতো খেতে হয়। আমরা সুস্বাস্থ্যের জন্য বেশি পরিমাণে সবজি খেয়ে যেনো প্রাণ না হারায় সে দিক থেকে সচেতন থাকতে হবে।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

যেসব সবজিতে মৃত্যুঝুঁকি!

আপডেট টাইম ০৩:১১:৫১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২০
ডেস্ক:: সবজি খেতে আমরা কমবেশি সবাই খুব পছন্দ করি। নাম জানা বা অজানা বিভিন্ন সবজি আমরা বিভিন্ন সময়ে খেয়ে থাকি। আমাদের দেশে প্রায় সব ধরনের সবজি পাওয়া যায়। সুস্থ থাকার জন্য আমাদের প্রতিনিয়ত খাবারে সবজি রাখতে হয়। সবজি বেশি খাওয়া সুস্বাস্থ্যের প্রতীক হিসেবে মানা হয়। কিন্তু এমন কিছু সবজি আছে যা বেশি খেলে মৃত্যু হতে পারে। এমন কিছু সবজি আছে যাতে বিষ থাকে। যে সবজিতে অনেক সময় মরণব্যাধি রোগ থাকে। কিছু সবজি রয়েছে যা মোটামুটি প্রতিদিন আমাদের খাবার মেন্যুতে থাকে। এমনকি রান্না ঘরেও থাকে এইসব সবজি। কিন্তু মৃত্যুনাশক এই সবজিগুলো কি তা জানা থাকলে আমরা সচেতন হতে পারি।

জেনে নিন কোন সবজি বেশি খেলে মৃত্যু ঘটতে পারে-

শিম বিচি: অনেকেরই পছন্দের সবজির তালিকায় আছে শিমের নাম। এটি খুবই সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। শিম, শিমের বিচি এবং শিমের পাতাও শাক হিসেবে খাওয়া যায়। শিমের বিচিতে রয়েছে উচ্চমানের ফাইবার প্রোটিন, যা শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজন। তবে শিমের বিচিতে ফাইটোহিমাটোগ্লুটানিন নামক বিষ থাকে। যা আপনাকে মারাত্মক অসুস্থ্য করে দিতে পারে। যার ফলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই রান্নার পূর্বে ১০ মিনিট সিদ্ধ করে তারপর রান্না করতে পারেন। সেক্ষেত্রে ক্ষতিকারক উপাদান আর থাকবে না।

আলু: প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আলু থাকে না এমন খুব কমই দেখা যায়। সহজলভ্যতা, শর্করা, আর নানা ধরনের খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুত করা যায় বিধায় পৃথিবীব্যাপী আলুর চাহিদা ব্যাপক। তবে সবুজ দাগযুক্ত আলু শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এতে সোলানাইন নামক বিষাক্ত পদার্থ থাকে যা রান্না এবং পোড়ানোর পরও দূর হয় না। বরং সবুজ দাগযুক্ত আলু ব্যবহার না করাই উত্তম। এছাড়া আলুর পাতা ও কাণ্ডে গ্লাইকো অ্যাল্কালয়েড থাকে। বাসায় অনেক দিন পর্যন্ত আলু রেখে দিলে এর মধ্যে গ্যাঁজ হয়ে যায়। এই গ্যাঁজে গ্লাইকো অ্যাল্কালয়েড থাকে যা আলোর সংস্পর্শে বৃদ্ধি পায়। সবুজ ও গ্যাঁজ হওয়া আলু খেলে ডায়রিয়া, মাথাব্যাথা, এমনকি কোমায় চলে যেতে পারে। ফলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

লাল মটরশুটি: স্বাস্থ্যসম্মত সবজি হিসেবে মটরশুটির খ্যাতি রয়েছে। এটি সারাবছর প্রস্তুতির জন্য আপনি প্রয়োজনীয় ভিটামিন বি পাবেন। কিন্তু লাল মটরশুটিতে রয়েছে বিষাক্ত পদার্থ। এ বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে এ ধরনের মটরশুটিকে ১০ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে সেদ্ধ করতে হয়। সেদ্ধ করা ছাড়া রান্না করলে এটি দুই থেকে তিনগুণ বেশি ক্ষতি করতে পারে।

টমেটো: টমেটো একটি দৃষ্টিনন্দন শীতের সবজি। এটি একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিসমৃদ্ধ সবজি। সবজি হিসেবে টমেটোর জুড়ি অনেক। টমেটো আমাদের দেশে সারা বছর পাওয়া যায়। এটি যেমন কাঁচা খাওয়া যায়, ঠিক একইভাবে রান্না করে বা রান্না সুস্বাদু করার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। উদ্ভিদ বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে টমেটো একটি ফল হলেও, সবজি হিসেবেই সারা বিশ্বে টমেটো পরিচিত। সবজি এবং সালাদ হিসেবে ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ টমেটোর বেশ চাহিদা। তবে আলুর মতোই টমেটোর পাতা ও কাণ্ডেও গ্লাইকো অ্যাল্কালয়েড থাকে যা হজমে সমস্যা সৃষ্টি করে। কাঁচা সবুজ টমেটোতেও একই উপাদান আছে। তবে অল্প পরিমাণে খেলে সমস্যা নেই।

কামরাঙা: কামরাঙা কোনোভাবেই খালি পেটে খাওয়া চলবে না। ডায়ারিয়া হলে কামরাঙা খাওয়া চলবে না। কামরাঙা একটি অক্সালেট সমৃদ্ধ ভিটামিন সি জাতীয় ফল। সে কারণে যাদের কিডনির সমস্যা রয়েছে, তাদের কামরাঙা খেতে নিষেধ করছেন চিকিৎসা। স্বাভাবিক কিডনির যা কোনো ক্ষতি করে না। কিন্তু কারও কিডনি খারাপ হলে সেই বিষ কিডনির আরো ক্ষতি করতে পারে।

তাই সবজি খাওয়ার সময়ও পরিমাণ মতো খেতে হয়। আমরা সুস্বাস্থ্যের জন্য বেশি পরিমাণে সবজি খেয়ে যেনো প্রাণ না হারায় সে দিক থেকে সচেতন থাকতে হবে।