ঢাকা ১০:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
১৫ বছর ধরে ‘নিখোঁজ’ বিএনপি নেতা চৌধুরী আলম, অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে যা জানা গেলো সরকারের ভেতরে সরকার ড. ইউনূসকে ‘জাতীয় সংস্কারক’ ও অভ্যুত্থানে নিহতদের ‘জাতীয় শহীদ’ ঘোষণার নির্দেশ কেন নয় পীরগঞ্জে হুসেইন মুহাম্মদ এর ৬ষ্ঠ মৃত্যু বার্ষিকী পালিত যুক্তরাষ্ট্র ও মালয়েশিয়ায় বেনজীরের সম্পদ ক্রোক, ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ সোহাগ কিলিং মিশন রজনী বোস লেনে হত্যা, হাসপাতালের সামনে নিয়ে চলে বর্বরতা ভিডিও সংকটে বাংলাদেশ, ইউনূস কী করবেন বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা বিএনপির সম্মেলন পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, ফলাফল স্থগিতের প্রতিবাদে বিক্ষোভ ঠাকুরগাঁয়ের মিনাপুর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত পীরগঞ্জে ১১০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কৃষি বিভাগের নারিকেলের চারা বিতরণ

গরু পাচারে বিজিবির সমর্থনের অভিযোগ প্রত্যাখান, কড়া প্রতিবাদ ঢাকার

কূটনৈতিক রিপোর্টার::গরু পাচারে বিজিবির সমর্থনের অভিযোগ সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রত্যাখান করা হয়েছে। একই সঙ্গে এর কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-এর
তরফে এ প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। গণমাধ্যমে পাঠানো বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো: শরিফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদ পত্রে বলা হয়েছে-গত ১৩ জুলাই ২০২০ তারিখে ভারতীয় দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রসে ‘‘BSF: Border Guard Bangladesh supports cattle smuggling’’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদে গত ০৬ জুলাই ২০২০ তারিখে বিএসএফ সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার এর ডিআইজি এস এস গুলেরিয়া স্বাক্ষরিত হিন্দি ভাষায় লিখিত এক সংবাদ বিবৃতির কথা উল্লেখ করে বলা হয়, বিএসএফ দাবি করছে ভারত থেকে গরু পাচারে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ(বিজিবি) সম্পূর্ণভাবে সমর্থন জানাচ্ছে।
বিজিবির প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, ভারতীয় দ্যা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ও বিবৃতিটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। প্রকৃতপক্ষে ভারতীয় চোরাকারবারীদের মাধ্যমে সীমান্ত এলাকায় ভারতের মাটিতে গরু সমাগম ও নদীপথে গরু পাচারে বিএসএফ এর নিষ্ক্রিয়তা/তৎপরতার অভাব নি:সন্দেহে বিভিন্ন প্রশ্নের অবতারনা করে। ভারতীয় গরু পাচারকারীরা অধিক মুনাফা লাভের আশায় বাংলাদেশে এভাবে গরু পাচার করার কাজে অতি উৎসাহী হয়।

এতে করে দেশীয় খামারিগুলো প্রায়শই ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এ প্রেক্ষিতে গরু চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবি অত্যন্ত কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে এবং বিজিবি কর্তৃক সীমান্তে গবাদীপশু চোরাচালান রোধে সীমান্ত এলাকায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন, পুলিশ, সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সর্বস্তরের জনগনকে নিয়ে জনসচেতনতামূলক সভা আয়োজন, সীমান্তবর্তী জনগণকে সাথে নিয়ে রাত্রিকালীন পাহারা দেওয়া ও সীমান্তে বিজিবি’র টহল বৃদ্ধিসহ কঠোর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

মূলতঃ গরু চোরাচালান প্রতিরোধে বিএসএফ এর ব্যর্থতাকে ঢাকার জন্যই ভারতীয় গণমাধ্যমে সংবাদটি প্রকাশ হতে পারে বলে অনুমেয় এমন মন্তব্য করে বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়- ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্টে আরও বলা হয়- চলতি জুলাই মাসের শেষে কোরবানির ঈদ উপলক্ষে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে গরু চোরাচালান বেড়েছে। অর্থাৎ গরু পাচারের পিছনে ধর্মীয় কারণের উপস্থিতির দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে কোরবানির ঈদে পশুর চাহিদার কথা উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে জানা গেছে বিগত বছরে ১ কোটির সামান্য কিছু বেশি পশু কোরবানির জন্য সারাদেশে ব্যবহৃত হয়েছে। এবছর বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে ধারণা করা হচ্ছে এ সংখ্যা ১ কোটির কিছু কম হবে। আসন্ন কোরবানির ঈদের জন্য আমাদের দেশে ১ কোটি ১৮ লক্ষ ৯৭ হাজার ৫০০টি পশু মজুদ রয়েছে যা প্রয়োজনের তুলনায় পর্যাপ্ত। তাই দেশীয় খামারীরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সে লক্ষে বিদেশী গরু হতে নির্ভরশীলতা কমিয়ে দেশীয় খামার থেকেই কোরবানির পশুর চাহিদা পূরণ করা হবে। এ প্রেক্ষিতে বিজিবি দেশের সীমান্তে গবাদী পশু চোরাচালানরোধে কঠোর নজরদারী বৃদ্ধি করেছে।

সংবাদে বিএসএফ সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার এর ডিআইজি এস এস গুলেরিয়ার বিবৃতির উদ্বৃতি দিয়ে এ-ও বলা হয়- প্রাণীগুলোকে পরম যত্নের সঙ্গে লালন-পালন করা হয়, কিন্তু কোরবানি ঈদের নামে উৎসর্গ করে জবাই করার অর্থ হলো নির্যাতন করা। বিজিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করে বলা হয়, উপরুল্লিখিত ‘কোরবানি ঈদের নামে উৎসর্গ করে জবাই করার অর্থ হলো নির্যাতন করা’ কথাটি ইসলাম ধর্মের বৃহত্তর ধর্মীয় উৎসব ‘ঈদ-উল-আজহা’ এর জন্য অবমাননাকর এবং ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত হানার সামিল। মূলতঃ ঈদ-উল-আজহার দিন মুসলিম বিশ্ব পশু কোরবানির মাধ্যমে কুপ্রবৃত্তি বিসর্জন করে মহান আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি অর্জন করে থাকে এবং গরীব অসহায় মানুষের মাঝে মাংস বিতরণের মাধ্যমে সোহার্দ্যের উদাহরণ তৈরী করে যা ইসলাম ধর্মে আত্মত্যাগের অন্যতম নিদর্শন।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

১৫ বছর ধরে ‘নিখোঁজ’ বিএনপি নেতা চৌধুরী আলম, অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে যা জানা গেলো

গরু পাচারে বিজিবির সমর্থনের অভিযোগ প্রত্যাখান, কড়া প্রতিবাদ ঢাকার

আপডেট টাইম ০৪:৪০:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ জুলাই ২০২০

কূটনৈতিক রিপোর্টার::গরু পাচারে বিজিবির সমর্থনের অভিযোগ সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রত্যাখান করা হয়েছে। একই সঙ্গে এর কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-এর
তরফে এ প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। গণমাধ্যমে পাঠানো বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো: শরিফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদ পত্রে বলা হয়েছে-গত ১৩ জুলাই ২০২০ তারিখে ভারতীয় দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রসে ‘‘BSF: Border Guard Bangladesh supports cattle smuggling’’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদে গত ০৬ জুলাই ২০২০ তারিখে বিএসএফ সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার এর ডিআইজি এস এস গুলেরিয়া স্বাক্ষরিত হিন্দি ভাষায় লিখিত এক সংবাদ বিবৃতির কথা উল্লেখ করে বলা হয়, বিএসএফ দাবি করছে ভারত থেকে গরু পাচারে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ(বিজিবি) সম্পূর্ণভাবে সমর্থন জানাচ্ছে।
বিজিবির প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, ভারতীয় দ্যা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ও বিবৃতিটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। প্রকৃতপক্ষে ভারতীয় চোরাকারবারীদের মাধ্যমে সীমান্ত এলাকায় ভারতের মাটিতে গরু সমাগম ও নদীপথে গরু পাচারে বিএসএফ এর নিষ্ক্রিয়তা/তৎপরতার অভাব নি:সন্দেহে বিভিন্ন প্রশ্নের অবতারনা করে। ভারতীয় গরু পাচারকারীরা অধিক মুনাফা লাভের আশায় বাংলাদেশে এভাবে গরু পাচার করার কাজে অতি উৎসাহী হয়।

এতে করে দেশীয় খামারিগুলো প্রায়শই ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এ প্রেক্ষিতে গরু চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবি অত্যন্ত কঠোর অবস্থান গ্রহণ করেছে এবং বিজিবি কর্তৃক সীমান্তে গবাদীপশু চোরাচালান রোধে সীমান্ত এলাকায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন, পুলিশ, সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও সর্বস্তরের জনগনকে নিয়ে জনসচেতনতামূলক সভা আয়োজন, সীমান্তবর্তী জনগণকে সাথে নিয়ে রাত্রিকালীন পাহারা দেওয়া ও সীমান্তে বিজিবি’র টহল বৃদ্ধিসহ কঠোর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

মূলতঃ গরু চোরাচালান প্রতিরোধে বিএসএফ এর ব্যর্থতাকে ঢাকার জন্যই ভারতীয় গণমাধ্যমে সংবাদটি প্রকাশ হতে পারে বলে অনুমেয় এমন মন্তব্য করে বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়- ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্টে আরও বলা হয়- চলতি জুলাই মাসের শেষে কোরবানির ঈদ উপলক্ষে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে গরু চোরাচালান বেড়েছে। অর্থাৎ গরু পাচারের পিছনে ধর্মীয় কারণের উপস্থিতির দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে কোরবানির ঈদে পশুর চাহিদার কথা উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে জানা গেছে বিগত বছরে ১ কোটির সামান্য কিছু বেশি পশু কোরবানির জন্য সারাদেশে ব্যবহৃত হয়েছে। এবছর বৈশ্বিক মহামারী করোনার কারণে ধারণা করা হচ্ছে এ সংখ্যা ১ কোটির কিছু কম হবে। আসন্ন কোরবানির ঈদের জন্য আমাদের দেশে ১ কোটি ১৮ লক্ষ ৯৭ হাজার ৫০০টি পশু মজুদ রয়েছে যা প্রয়োজনের তুলনায় পর্যাপ্ত। তাই দেশীয় খামারীরা যেন ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সে লক্ষে বিদেশী গরু হতে নির্ভরশীলতা কমিয়ে দেশীয় খামার থেকেই কোরবানির পশুর চাহিদা পূরণ করা হবে। এ প্রেক্ষিতে বিজিবি দেশের সীমান্তে গবাদী পশু চোরাচালানরোধে কঠোর নজরদারী বৃদ্ধি করেছে।

সংবাদে বিএসএফ সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার এর ডিআইজি এস এস গুলেরিয়ার বিবৃতির উদ্বৃতি দিয়ে এ-ও বলা হয়- প্রাণীগুলোকে পরম যত্নের সঙ্গে লালন-পালন করা হয়, কিন্তু কোরবানি ঈদের নামে উৎসর্গ করে জবাই করার অর্থ হলো নির্যাতন করা। বিজিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করে বলা হয়, উপরুল্লিখিত ‘কোরবানি ঈদের নামে উৎসর্গ করে জবাই করার অর্থ হলো নির্যাতন করা’ কথাটি ইসলাম ধর্মের বৃহত্তর ধর্মীয় উৎসব ‘ঈদ-উল-আজহা’ এর জন্য অবমাননাকর এবং ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত হানার সামিল। মূলতঃ ঈদ-উল-আজহার দিন মুসলিম বিশ্ব পশু কোরবানির মাধ্যমে কুপ্রবৃত্তি বিসর্জন করে মহান আল্লাহ তা’আলার সন্তুষ্টি অর্জন করে থাকে এবং গরীব অসহায় মানুষের মাঝে মাংস বিতরণের মাধ্যমে সোহার্দ্যের উদাহরণ তৈরী করে যা ইসলাম ধর্মে আত্মত্যাগের অন্যতম নিদর্শন।