ঢাকা ১২:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
আ.লীগের বড় রাজনৈতিক ভুল ছিল, বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে না পারা- হাছান মাহমুদ বিজয় ঘোষণা করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প আমির হোসেন আমু গ্রেপ্তার পল্টন হত্যার মাধ্যমে জামায়াতকে নিশ্চিহৃ করার ষঢ়যন্ত্র করা হয়েছিল- ঠাকুরগাঁও জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মো: বেলাল হোসেন প্রধান পল্টন হত্যা দিবস উপলক্ষে জামায়াতের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক মন্ত্রীদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে সরকারকে হটকারী সিদ্ধান্ত না নেওয়ার আহ্বান সাবেক ডিএমপি কমিশনার গোলাম ফারুক কে বিমানবন্দরে আটকে দিলো পুলিশ ঠাকুরগাঁওয়ে আল-হাসানাহ স্কুলের অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, গ্রেপ্তার ২

সংঘবদ্ধ চক্রে মন্ত্রী, নেতা ও ব্যবসায়ীরা

মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের সাবেক ও বর্তমান মন্ত্রী, সরকারি কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী জনশক্তি রপ্তানিকারকদের একটি চক্র মালয়েশিয়া গমনেচ্ছু বাংলাদেশিদের কাছ থেকে সরকারি খরচের অতিরিক্ত ৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

এই চক্রে বাংলাদেশের ১০টি জনশক্তি রপ্তানিকারী প্রতিষ্ঠান (রিক্রুটিং এজেন্সি) এবং মালয়েশিয়ার একটি কোম্পানি রয়েছে। বাংলাদেশের ১০ এজেন্সি হলো ইউনিক ইস্টার্ন প্রাইভেট লিমিটেড, ক্যারিয়ার ওভারসিজ, ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনাল, এইচএসএমটি হিউম্যান রিসোর্স, সানজারি ইন্টারন্যাশনাল, রাব্বি ইন্টারন্যাশনাল, প্যাসেজ অ্যাসোসিয়েটস, আমিন ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস, প্রান্তিক ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরিজম ও আল ইসলাম ওভারসিজ।

মালয়েশিয়ায় এই চক্রের প্রধান বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মালয়েশীয় নাগরিক মোহাম্মদ আমিন বিন আবদুন নূর। আমিন এবং ওই দেশের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আজমি খালিদ, শ্রম বিভাগের সাবেক পরিচালক টেংকু ওমরসহ কয়েকজন প্রভাবশালী মিলে সিনারফ্ল্যাক্স নামে একটি কোম্পানি তৈরি করেন। এই কোম্পানিকেই বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নেওয়ার দায়িত্ব দেয় মালয়েশিয়ার সরকার। তারা বাংলাদেশের নির্দিষ্ট ১০ এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী সংগ্রহ করে। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে চক্রটি সম্পর্কে জানা যায়।

২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুই দেশের মধ্যে জি টু জি প্লাস (সরকারি-বেসরকারি) সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। কর্মী নিয়োগের পুরো প্রক্রিয়া হয় অনলাইনে। এর এক বছর পর ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে কর্মী পাঠানো শুরু হয়। এই প্রক্রিয়ায় গত ১৭ মাসে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া গেছেন ১ লাখ ৭৯ হাজার ৩৩০ জন। জনপ্রতি তিন লাখ টাকা ধরলেও তাঁদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে ৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। সরকারি হিসাবে খরচ হওয়ার কথা সর্বোচ্চ ৬৭৩ কোটি টাকা। এই হিসাবে সিন্ডিকেটটি ৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকার মতো হাতিয়ে নিয়েছে দেড় বছরে।

বাংলাদেশের ১০ এজেন্সির মধ্যে ইউনিক ইস্টার্ন প্রাইভেট লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সমিতি বায়রার সাবেক সভাপতি ও ইউনিক গ্রুপের মালিক মো. নূর আলী। প্যাসেজ অ্যাসোসিয়েটসের মালিক আরিফ আলম। তিনি একজন মন্ত্রীর শ্যালক। ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনালের মালিক বায়রার মহাসচিব মো. রুহুল আমিন। রাব্বী ইন্টারন্যাশনালের মালিক বায়রার সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোহাম্মদ বশির।

প্রান্তিক ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরিজমের মালিক বায়রার সাবেক সভাপতি মো. গোলাম মোস্তফা। এর সঙ্গে যুক্ত আছেন ছাত্রলীগের একজন সাবেক সভাপতি এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের প্রথম সারির একজন নেতা। সানজারি ইন্টারন্যাশনালের মালিক শেখ আবদুল্লাহ। তাঁর সঙ্গে যুক্ত আছেন একজন মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক এক প্রটোকল কর্মকর্তা। ক্যারিয়ার ওভারসিজের মালিক রুহুল আমিন ও বদরুল আমিনরা তিন ভাই। এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আছেন সরকারের একজন মন্ত্রী এবং একটি অনলাইনভিত্তিক পত্রিকার সম্পাদক। আল ইসলাম ওভারসিজের মালিক জয়নাল আবেদীন জাফর। তিনি পদ্মা ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্সের পরিচালক। আইএসএমটি হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্টের পরিচালক তুহিন সিদ্দীকি। আমিন ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের মালিক মো. রুহুল আমিন।

বায়রা মহাসচিব মো. রুহুল আমিন ও ইউনিক ইস্টার্ন প্রাইভেট লিমিটেডের মালিক মো. নূর আলীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। প্রান্তিক ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরিজমের মালিক গোলাম মোস্তফাও ফোন ধরেননি।

সানজারি ইন্টারন্যাশনালের মালিক শেখ আবদুল্লাহ বলেন, একটি মহল চার হাজার কোটি টাকার গুজব তুলে মালয়েশিয়ার শ্রমিক পাঠানো বন্ধ করার পাঁয়তারা করছে। তাঁর এজেন্সির আড়ালে একজন মন্ত্রী ও একজন সাবেক কর্মকর্তার থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমার পেছনে কেউ নেই।’

সরকারি হিসাবে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর খরচ সাড়ে ৩৭ হাজার টাকা। কিন্তু এই সিন্ডিকেট কর্মীদের কাছ থেকে তিন থেকে চার লাখ টাকা করে হাতিয়ে নেয়। জনপ্রতি সর্বনিম্ন তিন লাখ টাকা করে ধরলে গত দেড় বছরে এই চক্র অতিরিক্ত হাতিয়ে নিয়েছে ৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।

মালয়েশিয়ার সংবাদপত্র দ্য স্টার-এর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যেতে প্রত্যেককে ৪ লাখ ১৯ হাজার ৮৪৫ টাকা (মালয়েশিয়ান ২০ হাজার রিঙ্গিত) দিতে হয়েছে।

বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি রপ্তানির এই চক্র গড়ে ওঠে মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের শাসনামলে। এ চক্রের বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী, সচিব নিজেদের অসহায়ত্ব তুলে ধরেন। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় একবার ৭৫০টির বেশি বৈধ এজেন্সির তালিকা মালয়েশিয়ায় পাঠিয়েছিল, যাতে এদের মাধ্যমে কর্মী নেওয়া যায়। কিন্তু মালয়েশিয়ার তখনকার সরকার সেই তালিকা অনুমোদন দেয়নি।

গত ৮ মে নাজিবের রাজনৈতিক জোটকে পরাজিত করে মাহাথির মোহাম্মদের নেতৃত্বাধীন জোট ক্ষমতায় আসে। শপথ নেওয়ার দেড় মাসের মাথায় মাহাথির মোহাম্মদের সরকার বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি রপ্তানির চলতি পদ্ধতি বন্ধের ঘোষণা দেয়।

প্রবাসীকল্যাণসচিব নমিতা হালদার বলেন, ‘চলতি পদ্ধতিতে কর্মী পাঠানো বন্ধের বিষয়টি গণমাধ্যমে জানতে পেরেছি। মালয়েশিয়া সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। বিষয়টি নিয়ে সরকারি পর্যায়ে কথা না বলে কোনো মন্তব্য করা যাবে না।’

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

আ.লীগের বড় রাজনৈতিক ভুল ছিল, বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে না পারা- হাছান মাহমুদ

সংঘবদ্ধ চক্রে মন্ত্রী, নেতা ও ব্যবসায়ীরা

আপডেট টাইম ০২:২৬:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুলাই ২০১৮

মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের সাবেক ও বর্তমান মন্ত্রী, সরকারি কর্মকর্তা এবং রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী জনশক্তি রপ্তানিকারকদের একটি চক্র মালয়েশিয়া গমনেচ্ছু বাংলাদেশিদের কাছ থেকে সরকারি খরচের অতিরিক্ত ৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

এই চক্রে বাংলাদেশের ১০টি জনশক্তি রপ্তানিকারী প্রতিষ্ঠান (রিক্রুটিং এজেন্সি) এবং মালয়েশিয়ার একটি কোম্পানি রয়েছে। বাংলাদেশের ১০ এজেন্সি হলো ইউনিক ইস্টার্ন প্রাইভেট লিমিটেড, ক্যারিয়ার ওভারসিজ, ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনাল, এইচএসএমটি হিউম্যান রিসোর্স, সানজারি ইন্টারন্যাশনাল, রাব্বি ইন্টারন্যাশনাল, প্যাসেজ অ্যাসোসিয়েটস, আমিন ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস, প্রান্তিক ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরিজম ও আল ইসলাম ওভারসিজ।

মালয়েশিয়ায় এই চক্রের প্রধান বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মালয়েশীয় নাগরিক মোহাম্মদ আমিন বিন আবদুন নূর। আমিন এবং ওই দেশের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আজমি খালিদ, শ্রম বিভাগের সাবেক পরিচালক টেংকু ওমরসহ কয়েকজন প্রভাবশালী মিলে সিনারফ্ল্যাক্স নামে একটি কোম্পানি তৈরি করেন। এই কোম্পানিকেই বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নেওয়ার দায়িত্ব দেয় মালয়েশিয়ার সরকার। তারা বাংলাদেশের নির্দিষ্ট ১০ এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী সংগ্রহ করে। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিজের (বায়রা) একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে চক্রটি সম্পর্কে জানা যায়।

২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে দুই দেশের মধ্যে জি টু জি প্লাস (সরকারি-বেসরকারি) সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। কর্মী নিয়োগের পুরো প্রক্রিয়া হয় অনলাইনে। এর এক বছর পর ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে কর্মী পাঠানো শুরু হয়। এই প্রক্রিয়ায় গত ১৭ মাসে বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া গেছেন ১ লাখ ৭৯ হাজার ৩৩০ জন। জনপ্রতি তিন লাখ টাকা ধরলেও তাঁদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে ৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা। সরকারি হিসাবে খরচ হওয়ার কথা সর্বোচ্চ ৬৭৩ কোটি টাকা। এই হিসাবে সিন্ডিকেটটি ৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকার মতো হাতিয়ে নিয়েছে দেড় বছরে।

বাংলাদেশের ১০ এজেন্সির মধ্যে ইউনিক ইস্টার্ন প্রাইভেট লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সমিতি বায়রার সাবেক সভাপতি ও ইউনিক গ্রুপের মালিক মো. নূর আলী। প্যাসেজ অ্যাসোসিয়েটসের মালিক আরিফ আলম। তিনি একজন মন্ত্রীর শ্যালক। ক্যাথারসিস ইন্টারন্যাশনালের মালিক বায়রার মহাসচিব মো. রুহুল আমিন। রাব্বী ইন্টারন্যাশনালের মালিক বায়রার সমাজকল্যাণ সম্পাদক মোহাম্মদ বশির।

প্রান্তিক ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরিজমের মালিক বায়রার সাবেক সভাপতি মো. গোলাম মোস্তফা। এর সঙ্গে যুক্ত আছেন ছাত্রলীগের একজন সাবেক সভাপতি এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের প্রথম সারির একজন নেতা। সানজারি ইন্টারন্যাশনালের মালিক শেখ আবদুল্লাহ। তাঁর সঙ্গে যুক্ত আছেন একজন মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক এক প্রটোকল কর্মকর্তা। ক্যারিয়ার ওভারসিজের মালিক রুহুল আমিন ও বদরুল আমিনরা তিন ভাই। এই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আছেন সরকারের একজন মন্ত্রী এবং একটি অনলাইনভিত্তিক পত্রিকার সম্পাদক। আল ইসলাম ওভারসিজের মালিক জয়নাল আবেদীন জাফর। তিনি পদ্মা ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্সের পরিচালক। আইএসএমটি হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্টের পরিচালক তুহিন সিদ্দীকি। আমিন ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের মালিক মো. রুহুল আমিন।

বায়রা মহাসচিব মো. রুহুল আমিন ও ইউনিক ইস্টার্ন প্রাইভেট লিমিটেডের মালিক মো. নূর আলীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। প্রান্তিক ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরিজমের মালিক গোলাম মোস্তফাও ফোন ধরেননি।

সানজারি ইন্টারন্যাশনালের মালিক শেখ আবদুল্লাহ বলেন, একটি মহল চার হাজার কোটি টাকার গুজব তুলে মালয়েশিয়ার শ্রমিক পাঠানো বন্ধ করার পাঁয়তারা করছে। তাঁর এজেন্সির আড়ালে একজন মন্ত্রী ও একজন সাবেক কর্মকর্তার থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমার পেছনে কেউ নেই।’

সরকারি হিসাবে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠানোর খরচ সাড়ে ৩৭ হাজার টাকা। কিন্তু এই সিন্ডিকেট কর্মীদের কাছ থেকে তিন থেকে চার লাখ টাকা করে হাতিয়ে নেয়। জনপ্রতি সর্বনিম্ন তিন লাখ টাকা করে ধরলে গত দেড় বছরে এই চক্র অতিরিক্ত হাতিয়ে নিয়েছে ৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।

মালয়েশিয়ার সংবাদপত্র দ্য স্টার-এর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যেতে প্রত্যেককে ৪ লাখ ১৯ হাজার ৮৪৫ টাকা (মালয়েশিয়ান ২০ হাজার রিঙ্গিত) দিতে হয়েছে।

বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি রপ্তানির এই চক্র গড়ে ওঠে মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের শাসনামলে। এ চক্রের বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী, সচিব নিজেদের অসহায়ত্ব তুলে ধরেন। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় একবার ৭৫০টির বেশি বৈধ এজেন্সির তালিকা মালয়েশিয়ায় পাঠিয়েছিল, যাতে এদের মাধ্যমে কর্মী নেওয়া যায়। কিন্তু মালয়েশিয়ার তখনকার সরকার সেই তালিকা অনুমোদন দেয়নি।

গত ৮ মে নাজিবের রাজনৈতিক জোটকে পরাজিত করে মাহাথির মোহাম্মদের নেতৃত্বাধীন জোট ক্ষমতায় আসে। শপথ নেওয়ার দেড় মাসের মাথায় মাহাথির মোহাম্মদের সরকার বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি রপ্তানির চলতি পদ্ধতি বন্ধের ঘোষণা দেয়।

প্রবাসীকল্যাণসচিব নমিতা হালদার বলেন, ‘চলতি পদ্ধতিতে কর্মী পাঠানো বন্ধের বিষয়টি গণমাধ্যমে জানতে পেরেছি। মালয়েশিয়া সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। বিষয়টি নিয়ে সরকারি পর্যায়ে কথা না বলে কোনো মন্তব্য করা যাবে না।’