ঢাকা ০৪:৪৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

রাজধানীমুখি মানুষের অবনতি নাকি উন্নতি, পর্ব -২ (শেষ পর্ব)

মোঃ মানিক হোসেন ——————— নতুন শহরে সংসারটাকে নতুন করে সাজাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মনির সাহেবের স্ত্রী। স্বামী অফিসে, ছেলে- মেয়ে স্কুলে, ঘর গোছাতে সাহায্য করার মতো কেউ কাছে নেই। অবশ্য এতে কষ্ট অনুভব করছেন না তিনি। গ্রামের বাড়ীতে প্রতিবেশীদের সহযোগিতা পেতেন তাই আজ গ্রামের কথা মনে পরছে তার। ঘরের কাজ শেষ করে তৃপ্তির নিঃস্বাস নিয়ে, বারান্দার বেলকনিতে এক কাপ চা হাতে সাজানো গোছানো শহরটাকে দেখছেন তিনি। কতসুন্দর শহর, তবে ব্যস্ততা এখানে অনেক বেশী। সবাই অবিরত ছুটে চলেছেন জীবন, জীবিকা আর আধুনিকতার পিছনে। আসরের আযান হচ্ছে – তাই দ্রুত চা শেষ করে নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে রুমে আসলেন তিনি। নামাজ শেষ হতেই দরজার কলিং বেল বেজে উঠলো। ছেলে -মেয়ে স্কুল হতে ফিরেছে।

★মনির সাহেবের মেয়ে মাইসা, বয়স -১৫ বছর, ক্লাস নাইনের ছাত্রী, মেধাবী, নম্র, ভদ্র এবং ধার্মিক। মায়ের সব গুনে গুণান্বিত সে। অপরদিকে মনির সাহেবের ছেলে মিতুল, বয়স ১৩ বছর, সপ্তম শ্রেনীতে পড়ে। একটু চঞ্চল স্বভাবের। ছাত্র হিসেবে মোটামুটি ভালো। যাহোক, তারা দুজন একই স্কুলে পড়ে। স্কুলে একসাথে আসা- যাওয়া করে। স্কুল থেকে ফিরে ভাইবোন ফ্রেস হয়ে ডাইনিং এ আসে মাইসাঃ মা অনেক ক্ষুধা পেয়েছে। মাঃ আসছি তোরা বস। মা খাবার নিয়ে আসেন এবং পরিবেশন করেন। মাঃ কেমন লাগছে তোদের নতুন স্কুল?  মিতুলঃ অনেক সুন্দর মা।  মাইসাঃ স্যারেরা অনেক সুন্দর করে ক্লাশ নেন। তবে – মা, তবে কি মা? মাইসাঃ এখানের সবাই একটু আলাদা রকমের, মাঃ যেমন? মাইসাঃ ছেলে মেয়ে সবাই একসাথে চলাফেরা করে। আমাদের গ্রামের স্কুলে এমনটি ছিলনা। মা, এটাতো গ্রাম নয় মা এখানে সবাই মিলেমিশে থাকে। যাহোক তোরা খেয়ে ছাদে আয়, আমি ছাদে গেলাম, ওখানে কাপড় শুকোতে দিয়েছি নিয়ে আসতে হবে। মনির সাহেবের স্ত্রী ছাদে গিয়ে ছাদ থেকে বিকেলের রাজধানী দেখছেন আর মনে মনে মাইসার কথাটা ভাবছেন। পাশের বাড়ীর ভাবির ডাকে স্বাভাবিক হলেন তিনি। ভাবিঃ কেমন আছেন? আপনারা ৫ম তলায় উঠেছেন তাইনা? জি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি, আপনি ? ভাবিঃ দিন চলে যাচ্ছে আর কি, ভাই কি অফিস হতে ফিরেছেন ? জি না, উনি মাগরিবের নামাজের পর আসেন। ভাবিঃ আপনারা আসছেন তো ৫ দিন হলো তা কোথায় কোথায় ঘুড়তে গেছিলেন ? একদিন বেড়িয়েছিলাম। রাজলক্ষি মার্কেটে গেছিলাম। ভাবিঃ ওখানে অনেক সুন্দর সুন্দর ড্রেস পাওয়া যায়। আচ্ছা আপনার মেয়েকে অমন সেকেলে ড্রেস পরতে দেন কেন? আশেপাশে তাকিয়ে দেখেন বাচ্চারা কতো সুন্দর সুন্দর ড্রেস পরে বেড়াচ্ছে। না মানে, আমরা আসলে এসব পোশাকে অভ্যস্ত নই। ভাবিঃ কি যে বলেন ভাবি, আশেপাশে তাকিয়ে দেখেন, এখানে সবার সাথে মানিয়ে চলতে হবে। আজ এশার নামাজ পড়ে আপনাকে নিয়ে নীচে হাঁটতে যাবো। এতো সুন্দর একটা জায়গায থেকে ঘরে বন্দি হয়ে থাকলে কি হবে? ঠিক আছে ভাবি ওদের আব্বু আসুক উনাকে বলে তারপর যাবো। ভাবিঃ সব বিষয়ে বরকে বলতে নেই, নীজের বলে কিছু থাকতে হয়। আমরা সব ভাবিরা বর এবং সন্তান বাহিরে থাকলে মাঝে মাঝেই বেড়িয়ে পড়ি, পার্কে যাই, গল্পগুজব করি, ফুচকা খাই, জীবন তো একটাই নাকি? আচ্ছা ভাবি আমি তাহলে আসছি, রাতে হাটতে যাবো কিন্তুু। ঠিক আছে। ভাবির কথাগুলো ভাবতে ভাবতে কাপড় নিয়ে বাসায় ফিরলেন তিনি।

৩ সপ্তাহ পরঃ- ——— মাইসাঃ বাবা আমার একটা এন্ড্রয়েড ফোন লাগবে।ক্লাশের সবাই এন্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করে। ঠিক আছে মা এই মাসের বেতন পেলে কিনে দিবো। মাইসাঃ আজতো মাত্র ৭ তারিখ। মাস শেষ হতে তো আনেক দিন বাকি,আমার কালকেই ফোন লাগবে। ঠিক আছে মা কালই পাবে। মাইসাঃ Thank you Baba. মনির সাহেব কিছুটা অবাক হলেন মেয়ের কথায়, আগে কখনও এভাবে তার সাথে কথা বলেনি মাইসা। তাছাড়া মাইসা এসব কি পোষাক পড়েছে।আগের মাইসা আর এখনের মাইসাার মধ্যে পার্থক্য লক্ষনীয়। এই শুনছো, আমি একটু পাশের ভাবিদের সাথে মার্কেটে যাচ্ছি। ঠিক আছে যাও, তাড়াতাড়ি ফিরবেতো? চেষ্টা করবো, দেরী হলে খাবার রাখা আছে খেয়ে নিও। আজ সত্যিই অবাক মনির সাহেব, এটা কি তার পরিবার। স্ত্রী, সন্তান সবাই যেন অচেনা আজ। তাদের কথাবার্তা, চালচলন, পোশাক সবকিছুই পাল্টে গেছে। তবে কি সত্যিই জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল রাজধানীমুখি হওয়া।

সম্মানিত পাঠকবৃন্দ মনির সাহেবের মতো অনেকে আছেন যারা কিছু করতে / বলতে না পারার দুঃখ বুকে চাপা দিয়ে রেখেছেন। শহরের সাথে মানানসই হতে স্ত্রী, সন্তান আধুনিকতার নামে বেহায়াপনার স্বর্গে হারিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। রাজধানীতে যারা আছেন কিংবা কখনও এসেছেন তারা দেখছেন/দেখেছেন। এখানে অভিজাত এলাকাগুলোতে নারীদের চলাচল, তাদের পোশাক, তাদের সময় জ্ঞান। রাত ১২ টার পর ভদ্র মহিলারা (অভিজাত পরিবারের সদস্যা তাই ভদ্র মহিলা বলতে বাধ্য হলাম) ব্যায়াম করার নামে বিকৃত পোশাকে পথে বের হয়, আমার /আপনার গ্রাম থেকে আসা স্ত্রী, সন্তানেরা এসব দেখে কি চুপ থাকতে পারবে? তাদের কি ইচ্ছে করবেনা স্বাধীন বাংলায় স্বাধীন ভাবে চলতে? পারিবারিক শিক্ষা এখানে কতক্ষন ঢাল হিসাবে কাজ করবে ? আচ্ছা মেয়েদের কথা বাদ দিলাম, আমরা পুরুষেরা ঢাকার এসব কালচার দেখতে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে গ্রামের লজ্জাবতী স্ত্রীকে কি সেকেলে মনে করছিনা? আমাদের সন্তানদের কি আমরা শহুরে রাজকন্যা হিসাবে দেখতে আগ্রহী হয়ে উঠছিনা ? আপনারা হয়তো বলবেন এখন গ্রামও এক্ষেত্র পিছিয়ে নেই। আমিও আপনাদের সাথে একমত, তবে উৎপত্তিস্থল কিন্তুু রাজধানী।

রাজধানীতে বিভিন্ন দেশের মানুষ বসবাস করেন, তাদের কালচার বিভিন্ন হবে এটা স্বাভাবিক, তাদের দেখে অন্যরা শিখবে এটাকে অ-স্বাভাবিক কিভাবে বলি আপনারাই বলুন। আজ আমরা পরিবারকে ভালো রাখার জন্য, ছেলে-মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য মরিয়া হয়ে রাজধানীমুখি হচ্ছি। ছেলে-মেয়েকে হয়তো শিক্ষিত করতে পারছি কিন্তুু বিনিময়ে যা হারাচ্ছি তা কি পুরনীয়? রাজধানীর সবাই নষ্ট কালচারে আসক্ত আমি তা বলছিনা কিন্তু সংখ্যাটা যদি কম বলি তবে অনেক বেশী বলা হবে বলে আমি মনে করি।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

ঠাকুরগাঁয়ে যুবলীগ নেতার পলিথিন কারখানা বন্ধ, মালামাল জব্দ

রাজধানীমুখি মানুষের অবনতি নাকি উন্নতি, পর্ব -২ (শেষ পর্ব)

আপডেট টাইম ০৫:০৪:৫৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ জানুয়ারী ২০২১

মোঃ মানিক হোসেন ——————— নতুন শহরে সংসারটাকে নতুন করে সাজাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মনির সাহেবের স্ত্রী। স্বামী অফিসে, ছেলে- মেয়ে স্কুলে, ঘর গোছাতে সাহায্য করার মতো কেউ কাছে নেই। অবশ্য এতে কষ্ট অনুভব করছেন না তিনি। গ্রামের বাড়ীতে প্রতিবেশীদের সহযোগিতা পেতেন তাই আজ গ্রামের কথা মনে পরছে তার। ঘরের কাজ শেষ করে তৃপ্তির নিঃস্বাস নিয়ে, বারান্দার বেলকনিতে এক কাপ চা হাতে সাজানো গোছানো শহরটাকে দেখছেন তিনি। কতসুন্দর শহর, তবে ব্যস্ততা এখানে অনেক বেশী। সবাই অবিরত ছুটে চলেছেন জীবন, জীবিকা আর আধুনিকতার পিছনে। আসরের আযান হচ্ছে – তাই দ্রুত চা শেষ করে নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে রুমে আসলেন তিনি। নামাজ শেষ হতেই দরজার কলিং বেল বেজে উঠলো। ছেলে -মেয়ে স্কুল হতে ফিরেছে।

★মনির সাহেবের মেয়ে মাইসা, বয়স -১৫ বছর, ক্লাস নাইনের ছাত্রী, মেধাবী, নম্র, ভদ্র এবং ধার্মিক। মায়ের সব গুনে গুণান্বিত সে। অপরদিকে মনির সাহেবের ছেলে মিতুল, বয়স ১৩ বছর, সপ্তম শ্রেনীতে পড়ে। একটু চঞ্চল স্বভাবের। ছাত্র হিসেবে মোটামুটি ভালো। যাহোক, তারা দুজন একই স্কুলে পড়ে। স্কুলে একসাথে আসা- যাওয়া করে। স্কুল থেকে ফিরে ভাইবোন ফ্রেস হয়ে ডাইনিং এ আসে মাইসাঃ মা অনেক ক্ষুধা পেয়েছে। মাঃ আসছি তোরা বস। মা খাবার নিয়ে আসেন এবং পরিবেশন করেন। মাঃ কেমন লাগছে তোদের নতুন স্কুল?  মিতুলঃ অনেক সুন্দর মা।  মাইসাঃ স্যারেরা অনেক সুন্দর করে ক্লাশ নেন। তবে – মা, তবে কি মা? মাইসাঃ এখানের সবাই একটু আলাদা রকমের, মাঃ যেমন? মাইসাঃ ছেলে মেয়ে সবাই একসাথে চলাফেরা করে। আমাদের গ্রামের স্কুলে এমনটি ছিলনা। মা, এটাতো গ্রাম নয় মা এখানে সবাই মিলেমিশে থাকে। যাহোক তোরা খেয়ে ছাদে আয়, আমি ছাদে গেলাম, ওখানে কাপড় শুকোতে দিয়েছি নিয়ে আসতে হবে। মনির সাহেবের স্ত্রী ছাদে গিয়ে ছাদ থেকে বিকেলের রাজধানী দেখছেন আর মনে মনে মাইসার কথাটা ভাবছেন। পাশের বাড়ীর ভাবির ডাকে স্বাভাবিক হলেন তিনি। ভাবিঃ কেমন আছেন? আপনারা ৫ম তলায় উঠেছেন তাইনা? জি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি, আপনি ? ভাবিঃ দিন চলে যাচ্ছে আর কি, ভাই কি অফিস হতে ফিরেছেন ? জি না, উনি মাগরিবের নামাজের পর আসেন। ভাবিঃ আপনারা আসছেন তো ৫ দিন হলো তা কোথায় কোথায় ঘুড়তে গেছিলেন ? একদিন বেড়িয়েছিলাম। রাজলক্ষি মার্কেটে গেছিলাম। ভাবিঃ ওখানে অনেক সুন্দর সুন্দর ড্রেস পাওয়া যায়। আচ্ছা আপনার মেয়েকে অমন সেকেলে ড্রেস পরতে দেন কেন? আশেপাশে তাকিয়ে দেখেন বাচ্চারা কতো সুন্দর সুন্দর ড্রেস পরে বেড়াচ্ছে। না মানে, আমরা আসলে এসব পোশাকে অভ্যস্ত নই। ভাবিঃ কি যে বলেন ভাবি, আশেপাশে তাকিয়ে দেখেন, এখানে সবার সাথে মানিয়ে চলতে হবে। আজ এশার নামাজ পড়ে আপনাকে নিয়ে নীচে হাঁটতে যাবো। এতো সুন্দর একটা জায়গায থেকে ঘরে বন্দি হয়ে থাকলে কি হবে? ঠিক আছে ভাবি ওদের আব্বু আসুক উনাকে বলে তারপর যাবো। ভাবিঃ সব বিষয়ে বরকে বলতে নেই, নীজের বলে কিছু থাকতে হয়। আমরা সব ভাবিরা বর এবং সন্তান বাহিরে থাকলে মাঝে মাঝেই বেড়িয়ে পড়ি, পার্কে যাই, গল্পগুজব করি, ফুচকা খাই, জীবন তো একটাই নাকি? আচ্ছা ভাবি আমি তাহলে আসছি, রাতে হাটতে যাবো কিন্তুু। ঠিক আছে। ভাবির কথাগুলো ভাবতে ভাবতে কাপড় নিয়ে বাসায় ফিরলেন তিনি।

৩ সপ্তাহ পরঃ- ——— মাইসাঃ বাবা আমার একটা এন্ড্রয়েড ফোন লাগবে।ক্লাশের সবাই এন্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করে। ঠিক আছে মা এই মাসের বেতন পেলে কিনে দিবো। মাইসাঃ আজতো মাত্র ৭ তারিখ। মাস শেষ হতে তো আনেক দিন বাকি,আমার কালকেই ফোন লাগবে। ঠিক আছে মা কালই পাবে। মাইসাঃ Thank you Baba. মনির সাহেব কিছুটা অবাক হলেন মেয়ের কথায়, আগে কখনও এভাবে তার সাথে কথা বলেনি মাইসা। তাছাড়া মাইসা এসব কি পোষাক পড়েছে।আগের মাইসা আর এখনের মাইসাার মধ্যে পার্থক্য লক্ষনীয়। এই শুনছো, আমি একটু পাশের ভাবিদের সাথে মার্কেটে যাচ্ছি। ঠিক আছে যাও, তাড়াতাড়ি ফিরবেতো? চেষ্টা করবো, দেরী হলে খাবার রাখা আছে খেয়ে নিও। আজ সত্যিই অবাক মনির সাহেব, এটা কি তার পরিবার। স্ত্রী, সন্তান সবাই যেন অচেনা আজ। তাদের কথাবার্তা, চালচলন, পোশাক সবকিছুই পাল্টে গেছে। তবে কি সত্যিই জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল রাজধানীমুখি হওয়া।

সম্মানিত পাঠকবৃন্দ মনির সাহেবের মতো অনেকে আছেন যারা কিছু করতে / বলতে না পারার দুঃখ বুকে চাপা দিয়ে রেখেছেন। শহরের সাথে মানানসই হতে স্ত্রী, সন্তান আধুনিকতার নামে বেহায়াপনার স্বর্গে হারিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। রাজধানীতে যারা আছেন কিংবা কখনও এসেছেন তারা দেখছেন/দেখেছেন। এখানে অভিজাত এলাকাগুলোতে নারীদের চলাচল, তাদের পোশাক, তাদের সময় জ্ঞান। রাত ১২ টার পর ভদ্র মহিলারা (অভিজাত পরিবারের সদস্যা তাই ভদ্র মহিলা বলতে বাধ্য হলাম) ব্যায়াম করার নামে বিকৃত পোশাকে পথে বের হয়, আমার /আপনার গ্রাম থেকে আসা স্ত্রী, সন্তানেরা এসব দেখে কি চুপ থাকতে পারবে? তাদের কি ইচ্ছে করবেনা স্বাধীন বাংলায় স্বাধীন ভাবে চলতে? পারিবারিক শিক্ষা এখানে কতক্ষন ঢাল হিসাবে কাজ করবে ? আচ্ছা মেয়েদের কথা বাদ দিলাম, আমরা পুরুষেরা ঢাকার এসব কালচার দেখতে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে গ্রামের লজ্জাবতী স্ত্রীকে কি সেকেলে মনে করছিনা? আমাদের সন্তানদের কি আমরা শহুরে রাজকন্যা হিসাবে দেখতে আগ্রহী হয়ে উঠছিনা ? আপনারা হয়তো বলবেন এখন গ্রামও এক্ষেত্র পিছিয়ে নেই। আমিও আপনাদের সাথে একমত, তবে উৎপত্তিস্থল কিন্তুু রাজধানী।

রাজধানীতে বিভিন্ন দেশের মানুষ বসবাস করেন, তাদের কালচার বিভিন্ন হবে এটা স্বাভাবিক, তাদের দেখে অন্যরা শিখবে এটাকে অ-স্বাভাবিক কিভাবে বলি আপনারাই বলুন। আজ আমরা পরিবারকে ভালো রাখার জন্য, ছেলে-মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য মরিয়া হয়ে রাজধানীমুখি হচ্ছি। ছেলে-মেয়েকে হয়তো শিক্ষিত করতে পারছি কিন্তুু বিনিময়ে যা হারাচ্ছি তা কি পুরনীয়? রাজধানীর সবাই নষ্ট কালচারে আসক্ত আমি তা বলছিনা কিন্তু সংখ্যাটা যদি কম বলি তবে অনেক বেশী বলা হবে বলে আমি মনে করি।