রোববার আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস-২০২১ উপলক্ষে বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশনের আয়োজনে রাজধানীর ব্যানবেইজ ভবনে এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব গোলাম মো. হাসিবুল আলম এ সময় সংযুক্ত ছিলেন।
ফরাসউদ্দিন বলেন, টিকা যেহেতু চলে এসেছে, আশা করা যায় টিকা দেওয়া গেলে চলতি বছরের মধ্যে কোভিড অনেকটাই শেষ হবে। উক্ত অনুষ্ঠানে তিনি প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা স্থায়ীভাবে বাতিলের মত দিয়েছেন।
ফরাসউদ্দিন বলেন, ‘একটি কথা বলতে চাই, কথাটি সরকারি মহলের কাছে ভাল লাগবে না জানি। কথাটি হলো পঞ্চম শ্রেণির ও অষ্টম শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষার ব্যাপারে অভিযোগ রয়েছে। আমার মনে হয় যারা দেশ চালাচ্ছেন, নীতি নির্ধারণ করছেন, তাদের সামনে গিয়ে যারা কথা বলেন, তারা সত্যি কথাটি হয়তো বা প্রকাশ করেন না। অভিভাবক ও ছাত্র-ছাত্রীরা এভাবে খুব অসহায় বোধ করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা প্রাইভেট পড়ায় ও নোট-গাইড প্রকাশের অভিপ্রায় আছে, তারা কিন্তু মহাখুশি। তাই দৃঢ়ভাবে সুপারিশ হবে, এই কোভিড-১৯-এর কারণে এবার এই দুই পরীক্ষা হয়নি। একে (পিইসি ও জেএসসি) স্থায়ীভাবে বাদ দেয়া যায় কি না, সেই চিন্তা বোধহয় করা দরকার।’
প্রাথমিক স্কুল খোলার প্রস্তাবনার বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব হাসিবুল আলম বলেন, ‘আপনার প্রস্তাবনা লিখে রেখেছি। আমরা চেষ্টা করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠার বন্ধ থাকলেও শিক্ষকরা নিয়মিত স্কুলে আসছেন। তারা দৈনন্দিন নানা কাজ করছেন।’
ফরাসউদ্দিনের আলোচনার সূত্র ধরে সভার প্রধান অতিথি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা ও জেএসসি পরীক্ষা নিয়ে নানা মত রয়েছে। বিশেষ করে প্রাথমিকের পরীক্ষাটি অধিকাংশ মানুষই বলছেন তারা এটি চান না। এগুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা নানা জায়গায় হচ্ছে। এটি নিয়ে এই মুহূর্তে কোনো সিদ্ধান্ত আমাদের কাছে নেই। তারপরও এগুলো নিয়ে আমরা ভেবে দেখছি।’
এসময় মন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষাকে আনন্দময় করতে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে কাজ করছে সরকার। জিপিএ ৫ এর উন্মাদনা আর নয়। আমাদের জিপিএ ৫ পাওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।’
ধারাবাহিক মূল্যায়নের প্রতি গুরুত্বারোপ করে মন্ত্রী বলেন, ‘পরীক্ষা নির্ভর সনদসর্বস্ব শিক্ষা থেকে আমরা বের হয়ে আসার চেষ্টা করছি। আমরা ধারাবাহিক মূল্যায়ন পদ্ধতিকে গুরুত্ব দিচ্ছি।’
উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘আগামী পোস্ট কোভিড কার্যক্রমে পাঠদান, দক্ষ জনসম্পদ সৃষ্টিতে নতুন করে ভাবার সময় এসেছে। শিক্ষা প্রশিক্ষণে প্রাইভেট পার্টনারশিপের বিষয়ে অনেক সুযোগ আছে। এখানে ব্যাপক পরিবর্তনেরও সুযোগ আছে। শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় মূল্যায়ন না করে ক্লাসে মূল্যায়ন করার চিন্তা করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে আমাদের উচিত মূল্যায়ন, পাঠদান ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে দক্ষতা নির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে আগানো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিশাল জনগোষ্ঠীকে অনার্স ও মাস্টার্স দিচ্ছি, সেগুলোকে কীভাবে দক্ষতা নির্ভর করা যায়, দক্ষতা নির্ভর প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা যায়, তা নিয়ে কাজ করছি। দক্ষতা নির্ভর প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে আমরা কাজ করতে চাই।’