নিজস্ব প্রতিবেদক::লন্ডনে অবস্থান করা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবাইদা রহমানের নামে ইংল্যান্ডের ব্যাংকে থাকা তিনটি ব্যাংক হিসাব জব্দে (ফ্রিজ) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ইমরুল কায়েস বুধবার এ আদেশ দিলেও বৃহস্পতিবার তা প্রকাশ হয়। দুর্নীতি দমন কমিশনের একটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ আদেশ দেয়।
দুদক সূত্র জানায়, জব্দ করার আদেশ হওয়া তিনটি ব্যাংক হিসাবই ব্রিটেনের সানটাডার ব্যাংক ইউকে পিএলসি’র।
জানা যায়, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং ও অর্থ পাচারপূর্বক বিদেশে বিনিয়োগ সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধানে টিম গঠন করেছে দুদক।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ব্রিটেনের সানটাদার ব্যাংক ইউকে পিএলসি পরিচালিত হোয়াইট অ্যান্ড ব্লু কনসালট্যান্ট লিমিটেডে তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমানের তিনটি ব্যাংক হিসাবে ৫৯ হাজার ৩৪১ দশমিক ৯৩ ব্রিটিশ পাউন্ড স্থানান্তরের এফআইইউ, ইউকে এর নির্দেশে আটক আছে।
দুদক মনে করছে ওই অর্থের বিষয়ে এখনই কোনো ব্যবস্থা না নিলে তা বেহাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এছাড়া মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ১৭ ধারা মতে, রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা সম্ভব হবে না বিধায় রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ১৪ ধারা মতে এসব অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধ করা একান্ত প্রয়োজন।
দুদকের সিকিউটর মাহমুদ হোসেন (জাহাঙ্গীর) জানিয়েছেন, আদেশটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ব্রিটেনের অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসে পাঠানো হবে। সেখানে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে পাঠিয়ে আদেশ কার্যকর করবেন।
যুক্তরাজ্যে থাকা তারেকের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের মাধ্যমে বিদেশে বিনিয়োগ সংক্রান্ত একটি অভিযোগের অনুসন্ধান করছে দুদক। সংস্থাটির উপ-পরিচালক আখতার হামিদ ভূইয়ার নেতৃত্বে এই অনুসন্ধান চলছে।
সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে গ্রেপ্তার হওয়ার পর ২০০৮ সালে জামিনে মুক্তি হয়ে লন্ডন যান তারেক রহমান। এরপর থেকে তিনি সেখানেই আছেন।
দুই বছর আগে বিদেশে অর্থপাচার মামলায় তারেককে সাত বছরের কারাদণ্ড ও ২০ কোটি টাকা জরিমানা করে হাইকোর্ট। গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় তার ১০ বছরের কারাদণ্ড ও দুই কোটি ১০ লাখ টাকা জরিমানা হয়েছে।
এই মামলায় কারাদণ্ড হওয়া তার মা খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর তারেককে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করেছে বিএনপি। এছাড়া ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা মামলায় তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। তারেকের বিরুদ্ধে আরও বিভিন্ন মামলা চলছে।