ঢাকা ০৫:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যহারের স্মারকলিপি নেননি ইউএনও

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : করোনা পরিস্থিতিতে প্রশাসনের কার্যক্রম নিয়ে ফেসবুকে সমালোচনা করায় ঠাকুরগাঁওয়ে সাংবাদিক আল মামুন জীবনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যহারের দাবিতে স্থানীয় সাংবাদিকরা জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারক লিপি প্রদান করতে গেলে তা গ্রহণ করেননি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী অফিসার খায়রুল আলম সুমন।

সোমবার দুপুর ২টায় বালিয়াডাঙ্গী প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে দিতে গেলে তা প্রত্যাখান করে ফিরিয়ে দেন।

স্মারকলিপি না নিয়ে ইউএনও খায়রুল আলম সুমন জানান, শুধুমাত্র অফিসিয়াল কাগজপত্র ছাড়া অন্য কোন কাগজপত্র জেলা প্রশাসক বরাবরে পাঠাতে পারবেন না বলে পরিস্কার জানিয়ে দেন।

স্মারকলিপি জমা না দিতে পেরে বালিয়াডাঙ্গী প্রেস ক্লাবের সভাপতি এন এম নুরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার আলী, সাংবাদিক মাহাবুব আলম, ইলিয়াস আলী, মাজেদুল ইসলাম হৃদয়সহ অন্যান্য সাংবাদিকরা ইউএনও অফিস থেকে ফিরে আসেন।

গত ১৫ এপ্রিল বালিয়াডাঙ্গী থানার এসআই জহুরুল ইসলাম বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিক মামুনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। সাংবাদিক আল মামুন জীবন বালিয়াডাঙ্গী প্রেস ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি দৈনিক অধিকারের জেলা প্রতিনিধি ও স্থানীয় একটি অনলাইন পত্রিকার বার্তা প্রধান হিসেবে কর্মরত আছেন।

সাংবাদিক মামুন করেনা পরিস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যমে এলাকার তথ্য সংগ্রহ করে বস্তনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে আসছিলো। সম্প্রতি ঢাকা-নারায়নগঞ্জ থেকে ঠাকুরগাঁওয়ে আসা গণপরিবহন ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয় মামুন। বিষয়টি প্রশাসনের খারাপ লাগলে তিনি পোস্টটি তুলে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নিকট ক্ষমা দেখা করার চেষ্টা করেন। দেখা না পেয়ে তিনি মোবাইলে মেসেজের মাধ্যমে ক্ষমা চান। এরপরেও গত ১৩ তারিখ রাতে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করে বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশ।

সাংবাদিক মামুন জানান, প্রশাসন বিষয়টি অবগত করার সাথে সাথে ফেসবুক স্ট্যাটাসটি তুলে নিয়েছি। এরপরেও ডিসি ও এসপি’র কাছে ক্ষমাও চেয়েছি। এতকিছুর পরও আমাকে মামলা দেওয়া হলো। মামলার পর পুলিশ ভাড়া বাসা, শ্বশুড়বাড়ীসহ নানা জায়গায় অভিযান চালাচ্ছে। আমি চার দিন ধরে পলাতক।

তিনি আরও বলেন, আজ ৪ দিন হলো ৩ বছরের শিশুটির মুখ দেখতে পায়নি। সত্য কথা বলতে গিয়ে আমাকে ডিজিটাল আইনে মামলা দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে। মামলা তুলে নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে অনুরোধ করেছেন তিনি।

তবে স্থানীয় সাংবাদিকদের ধারণা, সম্প্রতি বালিয়াডাঙ্গীতে ৮৮৯ বস্তা ওএমএস’র চাল উদ্ধার নিয়ে সরেজমিনে রিপোর্ট করেছিলেন মামুন। সে জন্যও তিনি প্রশাসনের রোষানলে পড়তে পারেন বলে মনে করছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা।

এদিকে চাল চুরির ঘটনায় সংবাদ পরিবেশন করায় বিডিনিউজ২৪ ও জাগো নিউজ২৪ এর সম্পাদকসহ আরও দুইজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে জিডিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে একই থানায়।

সম্পাদক ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা দ্রæত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের কর্মরত সাংবাদিকরা।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যহারের স্মারকলিপি নেননি ইউএনও

আপডেট টাইম ১০:৫২:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ এপ্রিল ২০২০

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : করোনা পরিস্থিতিতে প্রশাসনের কার্যক্রম নিয়ে ফেসবুকে সমালোচনা করায় ঠাকুরগাঁওয়ে সাংবাদিক আল মামুন জীবনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যহারের দাবিতে স্থানীয় সাংবাদিকরা জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারক লিপি প্রদান করতে গেলে তা গ্রহণ করেননি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী অফিসার খায়রুল আলম সুমন।

সোমবার দুপুর ২টায় বালিয়াডাঙ্গী প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে দিতে গেলে তা প্রত্যাখান করে ফিরিয়ে দেন।

স্মারকলিপি না নিয়ে ইউএনও খায়রুল আলম সুমন জানান, শুধুমাত্র অফিসিয়াল কাগজপত্র ছাড়া অন্য কোন কাগজপত্র জেলা প্রশাসক বরাবরে পাঠাতে পারবেন না বলে পরিস্কার জানিয়ে দেন।

স্মারকলিপি জমা না দিতে পেরে বালিয়াডাঙ্গী প্রেস ক্লাবের সভাপতি এন এম নুরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার আলী, সাংবাদিক মাহাবুব আলম, ইলিয়াস আলী, মাজেদুল ইসলাম হৃদয়সহ অন্যান্য সাংবাদিকরা ইউএনও অফিস থেকে ফিরে আসেন।

গত ১৫ এপ্রিল বালিয়াডাঙ্গী থানার এসআই জহুরুল ইসলাম বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিক মামুনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। সাংবাদিক আল মামুন জীবন বালিয়াডাঙ্গী প্রেস ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি দৈনিক অধিকারের জেলা প্রতিনিধি ও স্থানীয় একটি অনলাইন পত্রিকার বার্তা প্রধান হিসেবে কর্মরত আছেন।

সাংবাদিক মামুন করেনা পরিস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যমে এলাকার তথ্য সংগ্রহ করে বস্তনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে আসছিলো। সম্প্রতি ঢাকা-নারায়নগঞ্জ থেকে ঠাকুরগাঁওয়ে আসা গণপরিবহন ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয় মামুন। বিষয়টি প্রশাসনের খারাপ লাগলে তিনি পোস্টটি তুলে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নিকট ক্ষমা দেখা করার চেষ্টা করেন। দেখা না পেয়ে তিনি মোবাইলে মেসেজের মাধ্যমে ক্ষমা চান। এরপরেও গত ১৩ তারিখ রাতে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করে বালিয়াডাঙ্গী থানা পুলিশ।

সাংবাদিক মামুন জানান, প্রশাসন বিষয়টি অবগত করার সাথে সাথে ফেসবুক স্ট্যাটাসটি তুলে নিয়েছি। এরপরেও ডিসি ও এসপি’র কাছে ক্ষমাও চেয়েছি। এতকিছুর পরও আমাকে মামলা দেওয়া হলো। মামলার পর পুলিশ ভাড়া বাসা, শ্বশুড়বাড়ীসহ নানা জায়গায় অভিযান চালাচ্ছে। আমি চার দিন ধরে পলাতক।

তিনি আরও বলেন, আজ ৪ দিন হলো ৩ বছরের শিশুটির মুখ দেখতে পায়নি। সত্য কথা বলতে গিয়ে আমাকে ডিজিটাল আইনে মামলা দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে। মামলা তুলে নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে অনুরোধ করেছেন তিনি।

তবে স্থানীয় সাংবাদিকদের ধারণা, সম্প্রতি বালিয়াডাঙ্গীতে ৮৮৯ বস্তা ওএমএস’র চাল উদ্ধার নিয়ে সরেজমিনে রিপোর্ট করেছিলেন মামুন। সে জন্যও তিনি প্রশাসনের রোষানলে পড়তে পারেন বলে মনে করছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা।

এদিকে চাল চুরির ঘটনায় সংবাদ পরিবেশন করায় বিডিনিউজ২৪ ও জাগো নিউজ২৪ এর সম্পাদকসহ আরও দুইজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে জিডিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে একই থানায়।

সম্পাদক ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা দ্রæত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের কর্মরত সাংবাদিকরা।