‘বয়েজ লকার রুম’। জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ইনস্টাগ্রামের একটি গ্রুপ। দিল্লির বিভিন্ন স্কুলের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র সেই গ্রুপের সদস্যরা। তাদের প্রত্যেকের বয়স ১৭-১৮ মধ্যেই। এই কিশোরদের সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপে আলোচনার বিষয়বস্তু, তাদের সহপাঠীদের কীভাবে গণধর্ষণ করবে ও অন্যান্য অশ্লীল কথাবার্তা। সেই গ্রুপে আলোচনার স্ক্রিনশট এক ছাত্রী তুলে ধরেছিল টুইটারে। তার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে ঝড় উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে।
দিল্লির এক নামী স্কুলের ছাত্রকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। দিল্লি পুলিশের সাইবার সেল তার মোবাইল বাজেয়াপ্ত করে তদন্ত চালাচ্ছে। তাকে জেরা করে ওই গ্রুপের আরও কয়েকজনকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। ওই গ্রুপে দক্ষিণ দিল্লির চার-পাঁচটি স্কুলের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির বেশ কয়েকজন ছাত্র যুক্ত রয়েছে বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। মেয়েদের গণধর্ষণ করার উপায় ও পদ্ধতি নিয়েই চর্চা চলে গ্রুপে। রেপ-কালচার নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয় গ্রুপে। ওই গ্রুপ নিয়ে একটি মামলা দায়ের করেছে দিল্লি পুলিশ। ইনস্টাগ্রাম কর্তৃপক্ষকে এ নিয়ে একটি চিঠিও দিয়েছে দিল্লির সাইবার ক্রাইম ডিভিশন।
দিল্লি মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন স্বাতী মালিওয়াল গ্রুপের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি করেছেন। তিনি এক সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘দিল্লি কমিশন ফর ওমেন, ইনস্টাগ্রাম ও দিল্লি পুলিশকে চিঠি দিয়েছে। ওই ছেলেদের গ্রেপ্তার করা হোক ও তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’
‘বয়েজ লকার রুম’ গ্রুপের আলোচনার বিষয়বস্তু প্রকাশ্যে আনেন যারা তাদের মধ্যে অন্যতম, ‘আশনা শর্মা’ নামের এক টুইটার ব্যবহারকারী। তিনি লেখেন, ‘এত ভয়ঙ্কর কথাবার্তা আমি জীবনে শুনিনি। তারা কী করছে সে ব্যাপারে তাদের বিন্দুমাত্র অনুশোচনা নেই।’
শুধু গণধর্ষণের পরিকল্পনা নয়, মেয়েদের ছবি বিকৃত করে পোস্ট করার অভিযোগও উঠছে ওই গ্রুপের বিরুদ্ধে। দক্ষিণ দিল্লির অপর এক ছাত্রী জানিয়েছে, তার এক বান্ধবী ধর্ষণের হুমকি পেয়েছেন। সেই ছাত্রী টুইটে লিখেছেন, দক্ষিণ দিল্লির ১৭-১৮ বয়সী ছেলের ইনস্টাগ্রাম গ্রুপ ‘বয়েজ লকার রুম’, সেখানে মেয়েদের ছবি বিকৃত করে হুমকি দেওয়া হয়। আমার স্কুলের দু’জন ছেলেও রয়েছে সেখানে। আমি ও আমার বন্ধু এই সব দেখে ভীত। এখন মা আমাকে ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট বন্ধের জন্য চাপ দিচ্ছে।
এই বিষয়টি নিয়ে গত দু’দিন ধরে উত্তাল সোশ্যাল মিডিয়া। ‘বয়েজ লকার রুম’ হ্যাশট্যাগ এখন ট্রেন্ড করছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।