ঢাকা ০৬:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রেশন সুবিধা চান সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

সচিবালয় সচিবালয়। ফাইল ছবি

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মতো সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রেশন চেয়েছেন। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিবকে চিঠি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সচিবালয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৮ নভেম্বর এ চিঠি দেয়া হয়।

প্রসঙ্গত, সচিবালয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. এনামুল হক এবং সাধারণ সম্পাদক মো. নূরুজ্জামাল ২১ অক্টোবর মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে দুটি বিষয়ে লিখিত আবেদন করেন।
এর মধ্যে একটি ছিল রেশন প্রদান এবং অপরটি টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল করা। দুটি দাবিই যৌক্তিক হওয়ায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ তা আমলে নেয়। এরপর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাধারণ অধিশাখা থেকে অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিবের কাছে রেশনের বিষয়ে চিঠি দেয়া হয়।

এতে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, মুদ্রাস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রশাসনিক কল্যাণ সমিতির রেশন সুবিধার আবেদনটি পর্যালোচনাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে।

প্রশাসনিক কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতির চিঠিতে বলা হয়, সচিবালয় প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র। এখানে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নীতিনির্ধারণী কার্যাদিসহ প্রজাতন্ত্রের সব প্রশাসনিক কার্যক্রম সম্পাদিত হয়। এক্ষেত্রে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও ইতিবাচক ভূমিকা অনস্বীকার্য। তবে এসব গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে গিয়ে প্রায় প্রতিদিনই অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অফিস সময়ের পরও অফিস করতে হয়। কোনো কোনো মন্ত্রণালয়ে রাত ৮টা পর্যন্ত কাজ হয়।

এছাড়া জরুরি প্রয়োজনে সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও অফিসে এসে কাজ করতে হয়। কিন্তু বাড়তি কাজের জন্য কোনো ওভারটাইম বিল কিংবা অতিরিক্ত আর্থিক সুবিধা দেয়া হয় না। অথচ প্রায় একই ধরনের কাজ করেও সরকারের বিভিন্ন সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রেশনের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের বিশেষ বা ঝুঁকিভাতা পাচ্ছেন।

এ তালিকায় দুদক, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী, কারা অধিদফতর এবং কোস্টগার্ডসহ ১৫টি দফতরের বেসামরিক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ৩০ থেকে ৭০% হারে বিভিন্ন ধরনের বিশেষ ভাতা পাচ্ছেন। এর মধ্যে অনেকে বিশেষ ভাতার সঙ্গে রেশনও পাচ্ছেন।

কল্যাণ সমিতির আবেদনে আরও বলা হয়, এ ধরনের বাড়তি সুবিধাভোগী এবং আমরা সবাই একই বাজারে বাজার করছি। থাকছি একই শহরে। প্রত্যেকের জীবনযাত্রার স্বাভাবিক ব্যয় বৃদ্ধির প্রভাবও একই। অথচ বেতন ভাতা দেয়ার ক্ষেত্রে বৈষম্য করা হচ্ছে।

২০১৫ সালে জাতীয় বেতন স্কেল জারি করা হয়েছে। এর মধ্যে পার হতে চলেছে ৬টি বছর। এ সময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যসহ সার্বিক ব্যয় বেড়েছে বহুগুণ। নানারকম বিলের হিসাবও বেড়েছে। কিন্তু বাড়েনি বেতন। তাই অন্তত রেশন সুবিধা দিয়ে হলেও কিছুটা বৈষম্য কমানোর জোরালো দাবি তাদের।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

রেশন সুবিধা চান সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

আপডেট টাইম ০১:১৩:৫৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৬ জানুয়ারী ২০২১
সচিবালয় সচিবালয়। ফাইল ছবি

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মতো সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রেশন চেয়েছেন। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিবকে চিঠি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। সচিবালয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৮ নভেম্বর এ চিঠি দেয়া হয়।

প্রসঙ্গত, সচিবালয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. এনামুল হক এবং সাধারণ সম্পাদক মো. নূরুজ্জামাল ২১ অক্টোবর মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে দুটি বিষয়ে লিখিত আবেদন করেন।
এর মধ্যে একটি ছিল রেশন প্রদান এবং অপরটি টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল করা। দুটি দাবিই যৌক্তিক হওয়ায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ তা আমলে নেয়। এরপর মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাধারণ অধিশাখা থেকে অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিবের কাছে রেশনের বিষয়ে চিঠি দেয়া হয়।

এতে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, মুদ্রাস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রশাসনিক কল্যাণ সমিতির রেশন সুবিধার আবেদনটি পর্যালোচনাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়েছে।

প্রশাসনিক কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতির চিঠিতে বলা হয়, সচিবালয় প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র। এখানে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের নীতিনির্ধারণী কার্যাদিসহ প্রজাতন্ত্রের সব প্রশাসনিক কার্যক্রম সম্পাদিত হয়। এক্ষেত্রে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও ইতিবাচক ভূমিকা অনস্বীকার্য। তবে এসব গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে গিয়ে প্রায় প্রতিদিনই অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অফিস সময়ের পরও অফিস করতে হয়। কোনো কোনো মন্ত্রণালয়ে রাত ৮টা পর্যন্ত কাজ হয়।

এছাড়া জরুরি প্রয়োজনে সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও অফিসে এসে কাজ করতে হয়। কিন্তু বাড়তি কাজের জন্য কোনো ওভারটাইম বিল কিংবা অতিরিক্ত আর্থিক সুবিধা দেয়া হয় না। অথচ প্রায় একই ধরনের কাজ করেও সরকারের বিভিন্ন সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রেশনের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের বিশেষ বা ঝুঁকিভাতা পাচ্ছেন।

এ তালিকায় দুদক, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী, কারা অধিদফতর এবং কোস্টগার্ডসহ ১৫টি দফতরের বেসামরিক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ৩০ থেকে ৭০% হারে বিভিন্ন ধরনের বিশেষ ভাতা পাচ্ছেন। এর মধ্যে অনেকে বিশেষ ভাতার সঙ্গে রেশনও পাচ্ছেন।

কল্যাণ সমিতির আবেদনে আরও বলা হয়, এ ধরনের বাড়তি সুবিধাভোগী এবং আমরা সবাই একই বাজারে বাজার করছি। থাকছি একই শহরে। প্রত্যেকের জীবনযাত্রার স্বাভাবিক ব্যয় বৃদ্ধির প্রভাবও একই। অথচ বেতন ভাতা দেয়ার ক্ষেত্রে বৈষম্য করা হচ্ছে।

২০১৫ সালে জাতীয় বেতন স্কেল জারি করা হয়েছে। এর মধ্যে পার হতে চলেছে ৬টি বছর। এ সময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যসহ সার্বিক ব্যয় বেড়েছে বহুগুণ। নানারকম বিলের হিসাবও বেড়েছে। কিন্তু বাড়েনি বেতন। তাই অন্তত রেশন সুবিধা দিয়ে হলেও কিছুটা বৈষম্য কমানোর জোরালো দাবি তাদের।