ঢাকা ০৭:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জাল সনদে চাকরি ১৭ লক্ষ একুশ হাজার আত্মসাত

স্টাফ রিপোটার:- রুহিয়া ডিগ্রি কলেজের এইচ এস সি (বি এম) ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ইংরেজি প্রভাষক আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে নিবন্ধনের জাল সনদে চাকুরি করার অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় মামলা করার জন্য ২৯ সেপ্টেম্বর কলেজ কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন এনটিআরসিএ’র সহকারী পরিচালক তাজুল ইসলাম। চিঠির অনুলিপি ঠাকুরগাঁও সদর থানায়ও পাঠানো হয়েছে। জানা যায়, আতিকুর রহমান ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত পঞ্চম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ দেখিয়ে ২০১২ সালের ১১ নভেম্বর ঠাকুরগাঁও জেলার রুহিয়া ডিগ্রি কলেজের ব্যবসায় শিক্ষা (বিএম) বিভাগের ইংরেজি প্রভাষক পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় তার রোল নম্বর ছিল ৪০২১২৫৪০, রেজি. নং- ৯০০০২৬৮৭। গত ২০/০৫/২০১৫ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা দপ্তর কতৃক অত্র প্রতিষ্ঠান পরিক্ষা ও নিরীক্ষা করেন। ২৬/১১/২০১৮ সালে পরিক্ষা নিরীক্ষার পর এনটিআরসিএ’র সহকারী পরিচালক (পমূপ্র-৩) তাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে আতিকুর রহমানের সনদপত্র যাচাইয়ের তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আতিকুর রহমানের সনদটি সঠিক নয় সনদটি জাল ও ভুয়া রােল নম্বরটি অন্য ব্যক্তির। প্রকৃত রােল নম্বর ধারীর নাম: মোঃ মিজানুর রহমান পিতা: মৃত আবুল হাসিম মাস্টার। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, তিনি আবশ্যিক বিষয়ে পেয়েছিলেন ৬৬ নম্বর ও ঐচ্ছিক বিষয়ে পান ৪১ নম্বর। তিনি নিবন্ধন সনদ জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ পেয়েছেন মর্মে দালিলিক ভাবে প্রমাণিত হয়েছে বিধায় আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে রুহিয়া ডিগ্রী কলেজের পক্ষ হতে থানায় মামলা দায়ের পূর্বক ‘এনটিআরসিএ’ অফিসকে অবহিত করার নির্দেশক্রমে চিঠি দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জকে চিঠির অনুলিপি দেয়া হয়েছে। অভিযোগ বিষয়ে আতিকুর রহমানের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলবেন না বলে জানান। রুহিয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ জানান, এনটিআরসিএ’র চিঠি পেয়েছি। ব্যক্তির দায় অধ্যক্ষ কিংবা প্রতিষ্ঠান বহন করবে না। তবে, বেতন হিসেবে নেওয়া ১২ লাখ ২১ হাজার ২০০ টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দিতে বলা হলেও টাকা ফেরত পাইনি এবং অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়নি। ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি মোঃ তানভিরুল ইসলাম জানান, জাল সনদের বিষয়ে এনটিআরসিএ’র চিঠি এখনও হাতে পাননি। উল্লেখ, ২০১৫ সালের ২০ মে নিরীক্ষা দপ্তরের যুগ্ম পরিচালক বিপুল চন্দ্র সরকার ও অডিটর মাহমুদুল হক রুহিয়া ডিগ্রি কলেজ পরিদর্শন করেন। ওই নিরীক্ষায় আতিকুর রহমানের দাখিলকৃত বেসরকরি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার সনদপত্র জাল বলে ধরা পড়ে। তিন বছর পর ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা দপ্তরের উপপরিচালক অধ্যাপক সাজ্জাদ রশিদ স্বাক্ষরিত প্রতিবেদন কলেজ অধ্যক্ষের কাছে পাঠানো হয়, যেখানে বলা হয়, আতিকুর রহমান অন্য ব্যক্তির সনদপত্র সংগ্রহ করে জালিয়াতির মাধ্যমে চাকরিতে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন। এরপর রুহিয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ ৩১/০১/২০১৯ সালে এ বিষয়ে সাত দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা চেয়ে নোটিশ দিলেও আতিকুর রহমান এর কোনো জবাব দেননি। এর পরিপ্রেক্ষিতে কলেজ পরিচালনা কমিটি জরুরি সভায় তাকে১০/০২/২০১৯ সালে চাকুরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। সেইসঙ্গে ০১/০১/২০১৩ সাল থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সরকার থেকে গৃহিত ও বেতন ভাতা অন‌্যান‌্য বাবদ ১৬৬০২৩৮/=টাকা এবং কলেজ থেকে গৃহিত মোট ৬১৫৫২/=টাকা মোট ১৭২১৭৯০ (সতের লক্ষ একুশ হাজার সাত শত নব্বই) টাকা গ্রহণ সম্পুর্ণ অবৈধ। ২১/১০/২০২০সালে কলেজ গভনিং বডির ৩১১ নম্বর চাকুরী বরখাস্ত করেন।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

জাল সনদে চাকরি ১৭ লক্ষ একুশ হাজার আত্মসাত

আপডেট টাইম ০১:৫৩:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারী ২০২১

স্টাফ রিপোটার:- রুহিয়া ডিগ্রি কলেজের এইচ এস সি (বি এম) ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ইংরেজি প্রভাষক আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে নিবন্ধনের জাল সনদে চাকুরি করার অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় মামলা করার জন্য ২৯ সেপ্টেম্বর কলেজ কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন এনটিআরসিএ’র সহকারী পরিচালক তাজুল ইসলাম। চিঠির অনুলিপি ঠাকুরগাঁও সদর থানায়ও পাঠানো হয়েছে। জানা যায়, আতিকুর রহমান ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত পঞ্চম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ দেখিয়ে ২০১২ সালের ১১ নভেম্বর ঠাকুরগাঁও জেলার রুহিয়া ডিগ্রি কলেজের ব্যবসায় শিক্ষা (বিএম) বিভাগের ইংরেজি প্রভাষক পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় তার রোল নম্বর ছিল ৪০২১২৫৪০, রেজি. নং- ৯০০০২৬৮৭। গত ২০/০৫/২০১৫ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা দপ্তর কতৃক অত্র প্রতিষ্ঠান পরিক্ষা ও নিরীক্ষা করেন। ২৬/১১/২০১৮ সালে পরিক্ষা নিরীক্ষার পর এনটিআরসিএ’র সহকারী পরিচালক (পমূপ্র-৩) তাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে আতিকুর রহমানের সনদপত্র যাচাইয়ের তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আতিকুর রহমানের সনদটি সঠিক নয় সনদটি জাল ও ভুয়া রােল নম্বরটি অন্য ব্যক্তির। প্রকৃত রােল নম্বর ধারীর নাম: মোঃ মিজানুর রহমান পিতা: মৃত আবুল হাসিম মাস্টার। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, তিনি আবশ্যিক বিষয়ে পেয়েছিলেন ৬৬ নম্বর ও ঐচ্ছিক বিষয়ে পান ৪১ নম্বর। তিনি নিবন্ধন সনদ জালিয়াতির মাধ্যমে নিয়োগ পেয়েছেন মর্মে দালিলিক ভাবে প্রমাণিত হয়েছে বিধায় আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে রুহিয়া ডিগ্রী কলেজের পক্ষ হতে থানায় মামলা দায়ের পূর্বক ‘এনটিআরসিএ’ অফিসকে অবহিত করার নির্দেশক্রমে চিঠি দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জকে চিঠির অনুলিপি দেয়া হয়েছে। অভিযোগ বিষয়ে আতিকুর রহমানের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলবেন না বলে জানান। রুহিয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ জানান, এনটিআরসিএ’র চিঠি পেয়েছি। ব্যক্তির দায় অধ্যক্ষ কিংবা প্রতিষ্ঠান বহন করবে না। তবে, বেতন হিসেবে নেওয়া ১২ লাখ ২১ হাজার ২০০ টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দিতে বলা হলেও টাকা ফেরত পাইনি এবং অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলাও করা হয়নি। ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি মোঃ তানভিরুল ইসলাম জানান, জাল সনদের বিষয়ে এনটিআরসিএ’র চিঠি এখনও হাতে পাননি। উল্লেখ, ২০১৫ সালের ২০ মে নিরীক্ষা দপ্তরের যুগ্ম পরিচালক বিপুল চন্দ্র সরকার ও অডিটর মাহমুদুল হক রুহিয়া ডিগ্রি কলেজ পরিদর্শন করেন। ওই নিরীক্ষায় আতিকুর রহমানের দাখিলকৃত বেসরকরি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার সনদপত্র জাল বলে ধরা পড়ে। তিন বছর পর ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা দপ্তরের উপপরিচালক অধ্যাপক সাজ্জাদ রশিদ স্বাক্ষরিত প্রতিবেদন কলেজ অধ্যক্ষের কাছে পাঠানো হয়, যেখানে বলা হয়, আতিকুর রহমান অন্য ব্যক্তির সনদপত্র সংগ্রহ করে জালিয়াতির মাধ্যমে চাকরিতে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন। এরপর রুহিয়া ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মামুনুর রশিদ ৩১/০১/২০১৯ সালে এ বিষয়ে সাত দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা চেয়ে নোটিশ দিলেও আতিকুর রহমান এর কোনো জবাব দেননি। এর পরিপ্রেক্ষিতে কলেজ পরিচালনা কমিটি জরুরি সভায় তাকে১০/০২/২০১৯ সালে চাকুরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। সেইসঙ্গে ০১/০১/২০১৩ সাল থেকে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সরকার থেকে গৃহিত ও বেতন ভাতা অন‌্যান‌্য বাবদ ১৬৬০২৩৮/=টাকা এবং কলেজ থেকে গৃহিত মোট ৬১৫৫২/=টাকা মোট ১৭২১৭৯০ (সতের লক্ষ একুশ হাজার সাত শত নব্বই) টাকা গ্রহণ সম্পুর্ণ অবৈধ। ২১/১০/২০২০সালে কলেজ গভনিং বডির ৩১১ নম্বর চাকুরী বরখাস্ত করেন।