ঢাকা ০৮:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
বিদেশি পিস্তলসহ ডাচ বাংলা এজেন্ট ব্যাংকের কর্মকর্তা আটক ঠাকুরগাঁওয়ে যুব অধিকার পরিষদের কমিটি গঠন ঠাকুরগাঁও স্কাউটসের সভাপতি ডিসি ইসরাত, সম্পাদক মিঠু প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’ গঠন প্রাণিসম্পদ গবেষনা প্রতিষ্ঠানের ৩ দিনব্যাপি ‘ফুড সেফটি হ্যাজারড’ শীর্ষক প্রশিক্ষনের সফল সমাপ্তি স্ত্রীকে প্রেমিকের সঙ্গে হাতেনাতে ধরলেন স্বামী সিআইডিকে মারধর করে আসামি নিয়ে পালাল স্থানীয়রা, গাড়ি ভাঙচুর বিনামূল্যে চক্ষু ক্যাম্প অনুষ্ঠিত, ১৭২ জনের ছানি অপারেশনে স্বাধীনতাবিরোধী আর ফ্যাসিবাদের দোসরদের দিয়ে গনতন্ত্র পরিপুষ্ট হবেনা- শামসুজ্জামান দুদু মানুষ নতুন নেতৃত্বের জন্য মুখিয়ে আছে- বালিয়াডাঙ্গীর পথসভায়- ফারুক হাসান

রোহিঙ্গা সংকটে মানবতা বিরোধী অপরাধের জোরালো প্রমাণ মিলেছে

আজম রেহমান, ডেস্ক নিউজ:: মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে ফের রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের আলামত পাওয়া গেছে। মার্কিন মানবাধিকার সংস্থা হলোকাস্ট মিউজিয়াম এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মানবাধিকার সংস্থা ফোরটিফাই গ্রুপের এক যৌথ অনুসন্ধানে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার ‘জোরালো প্রমাণ’ পাওয়ার কথা জানানো হয়েছে।

রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর জাতিগত নৃশংসতা নিয়ে এক বছর ধরে অনুসন্ধান চালিয়েছে ফোরটিফাই রাইটস আর হলোকাস্ট মিউজিয়াম। রাখাইনের তিনটি গ্রামে গণহত্যার নজির পেয়েছে তারা। অনুসন্ধানের ভিত্তিতে গত ১৫ নভেম্বর বুধবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এতে রোহিঙ্গা গণহত্যার ‘জোরালো প্রমাণ’ পাওয়ার দাবি জানিয়ে বলা হয়, দেশটির সেনাবাহিনী জাতিগত নিধনের জন্য এই নৃশংসতা চালিয়েছে।

এদিকে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লিউ) রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সংঘবদ্ধ ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার যৌন নিপীড়নের আলামত হাজির করেছে। গণহত্যা ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করে দুইটি প্রতিবেদনেই মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আবারও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এর আগেও বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা মিয়ানমারের বিরুদ্ধে একই রকম অভিযোগের আলামত মিলেছিল।

প্রতিবেদনে ত্রাণকর্মী ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মিলে দুইশ’র বেশি সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী ‘ধারাবাহিক, ব্যাপক ও নজিরবিহীন’ সহিংসতা চালিয়েছে। ২০১৬ সালের অক্টোবরে সহিংসতার সূত্রপাত হয়। চলতি বছরের আগস্ট মাসে তাতে নতুন মাত্রা যোগ হয়। রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলের গ্রামগুলোতে গণহত্যা, গণধর্ষণ, অগ্নিকাণ্ডসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হামলার জেরে এখন পর্যন্ত প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকেছে।

প্রতিবেদনে বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠীর সুরক্ষায় মিয়ানমার সরকারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যর্থতাকে দায়ী করা হয়েছে। হলোকাস্ট মিউজিয়ামের কর্মকর্তা আনদ্রেয়া জিটলম্যান বলেন, যে নৃশংসতা চলছে তা বন্ধ করতে হবে, ভবিষ্যতে যাতে আর না হয় তা ঠেকাতে হবে। তিনি বলেন, অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে জোরালো প্রতিবাদ হওয়া উচিত। আনদ্রেয়া জিটলম্যান বলেন, এ বিষয়ে মিয়ানমার সরকারের বক্তব্য জানার চেষ্টা করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সুচি সরকারের এক মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে হলোকাস্ট মিউজিয়াম।

মিয়ানমান সরকার দেশটিতে চলা নৃশংসতার জন্য বরাবরই উগ্রপন্থী রোহিঙ্গাদের দায়ী করে এসেছে। প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের জন্য বিশ্বের, বিশেষত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নৈতিক ব্যর্থতার প্রসঙ্গটি টানা হয়েছে। বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারে রোহিঙ্গারা নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার। এই জনগোষ্ঠী তাদের ওপর চালানো নিপীড়ন সম্পর্কে বারবার বলে এসেছে। তবু জাতিগত নিধন হয়েছে, যা ঠেকানো সম্ভব ছিল।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

বিদেশি পিস্তলসহ ডাচ বাংলা এজেন্ট ব্যাংকের কর্মকর্তা আটক

রোহিঙ্গা সংকটে মানবতা বিরোধী অপরাধের জোরালো প্রমাণ মিলেছে

আপডেট টাইম ০৪:৩৯:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ নভেম্বর ২০১৭

আজম রেহমান, ডেস্ক নিউজ:: মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে ফের রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের আলামত পাওয়া গেছে। মার্কিন মানবাধিকার সংস্থা হলোকাস্ট মিউজিয়াম এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মানবাধিকার সংস্থা ফোরটিফাই গ্রুপের এক যৌথ অনুসন্ধানে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যার ‘জোরালো প্রমাণ’ পাওয়ার কথা জানানো হয়েছে।

রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর জাতিগত নৃশংসতা নিয়ে এক বছর ধরে অনুসন্ধান চালিয়েছে ফোরটিফাই রাইটস আর হলোকাস্ট মিউজিয়াম। রাখাইনের তিনটি গ্রামে গণহত্যার নজির পেয়েছে তারা। অনুসন্ধানের ভিত্তিতে গত ১৫ নভেম্বর বুধবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এতে রোহিঙ্গা গণহত্যার ‘জোরালো প্রমাণ’ পাওয়ার দাবি জানিয়ে বলা হয়, দেশটির সেনাবাহিনী জাতিগত নিধনের জন্য এই নৃশংসতা চালিয়েছে।

এদিকে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লিউ) রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সংঘবদ্ধ ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার যৌন নিপীড়নের আলামত হাজির করেছে। গণহত্যা ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করে দুইটি প্রতিবেদনেই মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আবারও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এর আগেও বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা মিয়ানমারের বিরুদ্ধে একই রকম অভিযোগের আলামত মিলেছিল।

প্রতিবেদনে ত্রাণকর্মী ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী মিলে দুইশ’র বেশি সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী ‘ধারাবাহিক, ব্যাপক ও নজিরবিহীন’ সহিংসতা চালিয়েছে। ২০১৬ সালের অক্টোবরে সহিংসতার সূত্রপাত হয়। চলতি বছরের আগস্ট মাসে তাতে নতুন মাত্রা যোগ হয়। রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলের গ্রামগুলোতে গণহত্যা, গণধর্ষণ, অগ্নিকাণ্ডসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হামলার জেরে এখন পর্যন্ত প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকেছে।

প্রতিবেদনে বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠীর সুরক্ষায় মিয়ানমার সরকারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যর্থতাকে দায়ী করা হয়েছে। হলোকাস্ট মিউজিয়ামের কর্মকর্তা আনদ্রেয়া জিটলম্যান বলেন, যে নৃশংসতা চলছে তা বন্ধ করতে হবে, ভবিষ্যতে যাতে আর না হয় তা ঠেকাতে হবে। তিনি বলেন, অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে জোরালো প্রতিবাদ হওয়া উচিত। আনদ্রেয়া জিটলম্যান বলেন, এ বিষয়ে মিয়ানমার সরকারের বক্তব্য জানার চেষ্টা করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সুচি সরকারের এক মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে হলোকাস্ট মিউজিয়াম।

মিয়ানমান সরকার দেশটিতে চলা নৃশংসতার জন্য বরাবরই উগ্রপন্থী রোহিঙ্গাদের দায়ী করে এসেছে। প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের জন্য বিশ্বের, বিশেষত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নৈতিক ব্যর্থতার প্রসঙ্গটি টানা হয়েছে। বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে মিয়ানমারে রোহিঙ্গারা নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার। এই জনগোষ্ঠী তাদের ওপর চালানো নিপীড়ন সম্পর্কে বারবার বলে এসেছে। তবু জাতিগত নিধন হয়েছে, যা ঠেকানো সম্ভব ছিল।