বরিশাল:: উজিরপুরে একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার এক নারীকে (৩০) রিমান্ডে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠায় দায়ী পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলায় প্রত্যাহার হওয়া পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাইনুল ইসলাম, ওসি জিয়াউল আহসান, উজিরপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপারসহ অজ্ঞাত তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার সকালে অভিযুক্ত উজিরপুরের ওসি জিয়াউল আহসান ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাইনুল ইসলামকে জেলা পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়।
রোববার রাতে মামলাটি দায়ের হয় উজিরপুর থানায়। কিন্তু বিষয়টি গোপন থাকার পর সোমবার রাতে প্রকাশ পায়। ওই নারী বাদী হয়ে মামলাটি করেন। সোমবার দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়। মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত হয়েছেন জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসাইন।
বরিশালের পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন বলেন, ওই নারীর বিবৃতি আমরা যেভাবে আদালতের মাধ্যমে পেয়েছি, সেভাবেই মামলা হিসেবে রেকর্ড করেছি। বিবৃতিতে তিনি যেভাবে স্পষ্ট করেছেন, সেভাবেই নাম এসেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পুরো বিষয়টির তদন্ত চলছে।
আদালত সূত্র জানায়, গত ২৮ জুন ওই নারীকে একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার করে উজিরপুর থানায় নিয়ে যাওয়ার পরপরই এক নারী পুলিশ সদস্য লাঠি দিয়ে তার ওপর নির্যাতন চালান। পরে উপস্থিত অন্য পুলিশ সদস্যরাও তাকে লাঠি দিয়ে মারধর করেন। তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয় এবং ২৯ জুন তাকে দুই দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
আদালতে ওই নারী আসামি অভিযোগ করে বলেন, ৩০ জুন রিমান্ডে নেওয়ার পর তাকে মারধর না করা হলেও পরের দিন সকালে তাকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কক্ষে পাঠানো হয়। সেখানে তার ওপর যৌন নিপীড়ন চালানো হয়।
এরপর এক নারী পুলিশ সদস্যকে ডেকে নিয়ে তাকে আবার লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। একপর্যায়ে তদন্ত কর্মকর্তা নিজেই তাকে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ধরে পেটান। তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। জ্ঞান ফেরার পর তিনি নিজেকে হাসপাতালের বিছানায় দেখতে পান।
উল্লেখ্য, গত ২৫ জুন রাতে উজিরপুরের জামবাড়ি এলাকায় বাসুদেব চক্রবর্তীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরের দিন জামবাড়ি গ্রামের একটি ডোবা থেকে বাসুদেবের লাশ উদ্ধার করা হয়। বাসুদেবের ভাই ডোবা সংলগ্ন বাড়ির এক নারীকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন।
ওই মামলায় ২৮ জুন ওই নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৩০ জুন তাকে দুই দিনের রিমান্ডে পাঠান আদালত। রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।