ঢাকা ০৯:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর আর নেই, ফখরুলের শোক

নিজস্ব প্রতিবেদক::বরেণ্য গণসংগীতশিল্পী ও একাত্তরের কণ্ঠযোদ্ধা ফকির আলমগীর আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি।

শুক্রবার রাত ১০টা ৫৫ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে কোভিড ইউনিটে ভেন্টিলেশনে থাকা অবস্থায় হার্ট অ্যাটাক হওয়ার পর ফকির আলমগীরের মৃত্যু হয়। শিল্পীর মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন তার ছেলে মাশুক আলমগীর রাজীব।

করোনাভাইরাসের দুই ডোজ টিকা নেওয়ার পরও গত ১৪ জুলাই এই সংগীত শিল্পীর করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকলে পরদিন তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। সেখান থেকে তার আর বাসায় ফেরা হল না।

মৃত্যুকালে ফকির আলমগীরের বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে রেখে গেছেন।

ফকির আলমগীর ১৯৫০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানার কালামৃধা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মো. হাচেন উদ্দিন ফকির ও মা বেগম হাবিবুন্নেছা। শিল্পী কালামৃধা গোবিন্দ হাইস্কুল থেকে ১৯৬৬ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে দেশের ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে পরবর্তী পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় এমএ পাস করেন।

ষাটের দশক থেকে ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠীল মাধ্যমে গণসংগীতের সঙ্গে যুক্ত হন ফকির আলমগীর। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যোগ দেন তিনি।স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনে নিয়মিত সংগীত পরিবেশনার পাশাপাশি প্রচলিত ও প্রথাসিদ্ধ গানের বন্ধ্যা ভূমিতে দেশজ ও পাশ্চাত্য সংগীতের মেলবন্ধন ঘটিয়ে বাংলা গানে নতুন মাত্রা সংযোজন করেন।

১৯৭৬ সালে ফকির আলমগীর গঠন করেন ঋষিজ শিল্পগোষ্ঠী। এই গোষ্ঠীর মাধ্যমে গণসংগীতকে তিনি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেন।

‘মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও বিজয়ের গান’, ‘গণসংগীতের অতীত ও বর্তমান’, ‘আমার কথা’, ‘যারা আছেন হৃদয় পটে’সহ বেশ কয়েকটি বই প্রকাশ হয়েছে তার।

সংগীতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য সরকার ১৯৯৯ সালে ফকির আলমগীরকে একুশে পদক দেয়।

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তার কণ্ঠের বেশ কয়েকটি গান দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। এর মধ্যে ‘ও সখিনা’, ‘জন হেনরি’, ‘নেলসন ম্যান্ডেলা’ গানগুলো মানুষের মুখে মুখে ফেরে এখনও।

বরেণ্য গণসঙ্গীতশিল্পী ফকির আলমগীরের মৃত্যুতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

শুক্রবার এক শোক বার্তায় এ শোক জানান মির্জা ফখরুল।

ফকির আলমগীরের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, তার উদ্দীপনামূলক গান জনগণের হৃদয়ে গভীর রেখাপাত এবং শ্রমিক, কৃষকসহ মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামসহ স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন।

বিএনপি মহাসচিব ফকির আলমগীরের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার রাত ১০টা ৫৫ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালের কোভিড ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন ফকির আলমগীর।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর আর নেই, ফখরুলের শোক

আপডেট টাইম ০২:০৭:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ জুলাই ২০২১
নিজস্ব প্রতিবেদক::বরেণ্য গণসংগীতশিল্পী ও একাত্তরের কণ্ঠযোদ্ধা ফকির আলমগীর আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি।

শুক্রবার রাত ১০টা ৫৫ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে কোভিড ইউনিটে ভেন্টিলেশনে থাকা অবস্থায় হার্ট অ্যাটাক হওয়ার পর ফকির আলমগীরের মৃত্যু হয়। শিল্পীর মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন তার ছেলে মাশুক আলমগীর রাজীব।

করোনাভাইরাসের দুই ডোজ টিকা নেওয়ার পরও গত ১৪ জুলাই এই সংগীত শিল্পীর করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকলে পরদিন তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। সেখান থেকে তার আর বাসায় ফেরা হল না।

মৃত্যুকালে ফকির আলমগীরের বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি স্ত্রী, তিন ছেলে রেখে গেছেন।

ফকির আলমগীর ১৯৫০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানার কালামৃধা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মো. হাচেন উদ্দিন ফকির ও মা বেগম হাবিবুন্নেছা। শিল্পী কালামৃধা গোবিন্দ হাইস্কুল থেকে ১৯৬৬ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে দেশের ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে স্নাতক ডিগ্রি নিয়ে পরবর্তী পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় এমএ পাস করেন।

ষাটের দশক থেকে ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠীল মাধ্যমে গণসংগীতের সঙ্গে যুক্ত হন ফকির আলমগীর। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যোগ দেন তিনি।স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনে নিয়মিত সংগীত পরিবেশনার পাশাপাশি প্রচলিত ও প্রথাসিদ্ধ গানের বন্ধ্যা ভূমিতে দেশজ ও পাশ্চাত্য সংগীতের মেলবন্ধন ঘটিয়ে বাংলা গানে নতুন মাত্রা সংযোজন করেন।

১৯৭৬ সালে ফকির আলমগীর গঠন করেন ঋষিজ শিল্পগোষ্ঠী। এই গোষ্ঠীর মাধ্যমে গণসংগীতকে তিনি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেন।

‘মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও বিজয়ের গান’, ‘গণসংগীতের অতীত ও বর্তমান’, ‘আমার কথা’, ‘যারা আছেন হৃদয় পটে’সহ বেশ কয়েকটি বই প্রকাশ হয়েছে তার।

সংগীতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য সরকার ১৯৯৯ সালে ফকির আলমগীরকে একুশে পদক দেয়।

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তার কণ্ঠের বেশ কয়েকটি গান দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। এর মধ্যে ‘ও সখিনা’, ‘জন হেনরি’, ‘নেলসন ম্যান্ডেলা’ গানগুলো মানুষের মুখে মুখে ফেরে এখনও।

বরেণ্য গণসঙ্গীতশিল্পী ফকির আলমগীরের মৃত্যুতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

শুক্রবার এক শোক বার্তায় এ শোক জানান মির্জা ফখরুল।

ফকির আলমগীরের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, তার উদ্দীপনামূলক গান জনগণের হৃদয়ে গভীর রেখাপাত এবং শ্রমিক, কৃষকসহ মেহনতি মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামসহ স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন।

বিএনপি মহাসচিব ফকির আলমগীরের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

করোনায় আক্রান্ত হয়ে শুক্রবার রাত ১০টা ৫৫ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালের কোভিড ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন ফকির আলমগীর।