বৃহস্পতিবার বিকালে র্যাব সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব কথা বলেন।
রাজধানীর বনানীর বাসা থেকে আলোচিত অভিনেত্রী পরীমনিকে আটকের সময় বিপুল পরিমাণ মদ, ইয়াবা, ভয়ংকর মাদক আইস ও এলএসডি পেয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব)। বনানীর ১৯/১ লেক ভিউ ভবনের পঞ্চম তলার ফ্ল্যাট থেকে পরীমনিকে বুধবার রাতে আটক করা হয়। আজ (বৃহস্পতিবার) তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
রাজধানীর বনানী থেকে বিপুল পরিমান মাদকসহ আটক চলচ্চিত্র নায়িকা পরীমনি ও প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজসহ চারজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে র্যাব।
বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাব সদর দফতর থেকে পাঠানো এক ক্ষুদে বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
এ বিষয়ে র্যাব সদর দফতরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, পরীমনির বিরুদ্ধে একটি মাদক মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে।
তিনি বলেন, পরীমনির বাসা থেকে অবৈধ বিদেশি মদ, এলএসডি, আইস এবং এসব সেবনের সরঞ্জাম পাওয়া গেছে। পরীমনিকে এখন নানা অভিযোগের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
পরীমনিকে আটকের পর বুধবার রাতে বনানীর ৭ নম্বর রোডে প্রযোজক নজরুল ইসলাম রাজের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে র্যাব। তদন্ত-সংশ্নিষ্ট সূত্র জানায়, পরীমনিকে জিজ্ঞাসাবাদের পর নজরুল ইসলাম রাজের নামটি সামনে আসে। তার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক পরীমনির। একাধিক সময় ফেসবুক লাইভে কথা বলার সময় রাজ অভিনেত্রীর পাশে ছিলেন।
র্যাবের কর্মকর্তারা জানান, বুধবার বিকেলে অভিযানের সময় পরীমণির বাসায় প্রবেশ করা নিয়েই অনেক জটিলতা তৈরি হয়। তিনি ভেতর থেকে বাসার দরজা খুলছিলেন না। প্রায় আধঘণ্টা পর দরজা খুলে দিলে র্যাবের গোয়েন্দা শাখার একটি দল তার বাসায় প্রবেশ করে। পরীমণি প্রথমে র্যাবের গোয়েন্দা দলের কাছে উচ্চ পর্যায়ে তার অনেক যোগাযোগের কথা বলেন। পরে তার বাসা থেকে বিদেশি মদ, আইস ও এলএসডি মাদক উদ্ধারের পর চুপসে যান তিনি। এরপর আভিযানিক দলের সদস্যদের সহযোগিতা করেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, আটকের পর পরীমণিকে সোজা উত্তরার র্যাব সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে র্যাবের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা তাকে মধ্যরাত পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে পরীমণি কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। তার সঙ্গে উচ্চবিত্ত ও ধনাঢ্য ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উচ্চ পর্যায়ের কার কার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে- তা অকপটে বলতে শুরু করেন তিনি।
র্যাব সূত্র জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবের কর্মকর্তারা তার উচ্ছৃঙ্খল জীবন-যাপন, বিপুল পরিমাণ অর্থের উৎস এবং কিছুদিন আগে বোট ক্লাবে ঘটে যাওয়া ধর্ষণের অভিযোগ সম্পর্কেও জানতে চাওয়া হয়। কোনো কোনো প্রশ্নের জবাবে নিশ্চুপ ছিলেন পরী। তবে বেশিরভাগ সময়ই কান্নাকাটি করেছেন।