অনলাইন ডেস্ক::আমেরিকার ভিসা নিষেধাজ্ঞার হুমকির ইস্যুতে ভারত সরকার কি বাংলাদেশে সরকারের পাশে থাকবে? এ প্রশ্ন এখন নানা জায়গায় আলোচিত হচ্ছে। এ নিয়ে বিবিসি বাংলার এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, আমেরিকা র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর সুরাহার জন্য বাংলাদেশ সরকার দিল্লির দ্বারস্থ হয়েছিল বলে খবর বেরিয়েছিল যা তারা অস্বীকার করেনি। ভারত এখন যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ একটি কৌশলগত সহযোগী দেশ। কোয়াডের সদস্য। খুবই ঘনিষ্ঠ একটি প্রতিরক্ষা সহযোগিতা গড়ে উঠেছে দুই দেশের মধ্যে। তাছাড়া, ভারতের বাজারও আমেরিকান বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর জন্য খুবই লোভনীয়।
কিন্তু দিল্লি কি তাদের সেই কূটনৈতিক-অর্থনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আওয়ামী লীগের ওপর চাপ কমাতে সাহায্য করবে?
“আওয়ামী লীগ দিল্লির ওপর ভরসা করে এবং এখনও করবে, কিন্তু ভারতেরও কিছু সমস্যা রয়েছে। ভারত কি আমেরিকাকে বলবে বাংলাদেশ নিয়ে তোমরা যা করছো সেটি ঠিক নয়? আমার মনে হয়না ভারত তা করবে,’ বিবিসি বাংলাকে বলেন ভারতের জিন্দাল স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের অধ্যাপক এবং দক্ষিণ এশিয়া বিশ্লেষক প্রফেসর শ্রীরাধা দত্ত।
তিনি বলেন, “এটা ঠিক যে কূটনীতি বিভিন্ন চ্যানেলে হয়, ভারত হয়ত ট্র্যাক টু বা ট্র্যাক থ্রি চ্যানেলে একথা তুলবে, কিন্তু ভারত সরকার কখনই মার্কিন সরকারের কাছে গিয়ে বাংলাদেশ বা আওয়ামী লীগের হয়ে দেন-দরবার করবে না।”
তিনি বলেন, বাংলাদেশের চাপ থাকলেও রোহিঙ্গা সংকটে নিয়েও ভারত মিয়ানমার সরকারের ওপর কখনই খোলাখুলিভাবে কোনো চাপাচাপি করেনি। তবে মিজ দত্ত স্বীকার করেন ভারত চায় আওয়ামী লীগের সরকার বাংলাদেশে থাকুক কারণ, তার মতে, নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগগুলো সবসময় শেখ হাসিনা আন্তরিকভাবে বিবেচনা করেছেন যা নিয়ে দিল্লি কৃতজ্ঞ।
এ কারণে, তিনি বলেন, পরপর দুটো নির্বাচন নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন উঠলেও ভারত চোখ বুজে ফলাফলকে মেনে নিয়েছে।“এটা ঠিক যে ভারত আওয়ামী লীগকে অন্ধের মত সমর্থন করেছে…কিন্তু আমেরিকা এখন যেভাবে ক্ষেপে উঠেছে সেটা ভারতের জন্য চিন্তার জায়গা তো বটেই। মনে হচ্ছেনা আমেরিকানরা পেছোবে। সেখানে ভারত কী করতে পারবে তা নিয়ে আমি সন্দিহান।”
এর আগে র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়েও ভারত যে বাংলাদেশের হয়ে আমেরিকার সাথে জোরালো কোনও দেন-দরবার করেছে তার কোনো প্রমাণ নেই।
তাছাড়া, মিজ দত্ত বলেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার তোয়াক্কা না করে রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কেনা নিয়ে দিল্লি ও ওয়াশিংটনের সম্পর্কে সম্প্রতি চাপ তৈরি হয়েছে।
“ভারত যতই নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ ভাবুক না কেন তাদের তো অনেক জায়গাতেই যুক্তরাষ্ট্রকে প্রয়োজন।”