ঢাকা ০৬:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ২৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঠাকুরগাঁওসহ ৫ উপজেলায় প্রতিকূলতাকে মোকাবেলা কৃষক শুরু করেছে বোরো রোপন

মনসুর আহাম্মেদঃ ঠাকুরগাঁওয়ের, হরিপুর, পীরগঞ্জ,বালিয়াডাঙ্গী, রানীশংকৈল, এই ৫ উপজেলার সর্বত্র বোরো বীজতলা ‘কোল্ড ইনজুরি’তে আক্রান্ত হতে শুরু হলেও সেসব প্রতিকূলতাকে মোকাবেলা করে কৃষকরা মাঠে বোরো রোপন শুরু করেছে।অনেক বীজতলার বোরো চারা পোড়া বা ঝলসানো রোগে আক্রান্ত হয়ে পরলে কৃষকরা কীটনাশক স্প্রেসহ নানা রকম পদ্ধতি অবলম্বন করে বীজতলাগুলোকে রক্ষা করেছে। ওই বীজতলা থেকে বীজ সংগ্রহ করে ঠাকুরগাঁওয়ে ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে বোরো ধানের চারা রোপন। চাষিদের মধ্যে বোরো আবাদ নিয়ে যে শঙ্কা দেখা দিয়েছিল তা ধীরে ধীরে অবসান হতে শুরু করেছে। বীজতলা রক্ষার জন্য কিছু কিছু বোরো বীজতলায় এখনো হরেক রকমের পলিথিন দিয়ে ঢেকে রেখেছে কৃষকরা।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে ঠাকুরগাঁও জেলায় এ বোরো মৌসুমে ৬০ হাজার ৩১০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের ১২ হাজার ৯৪ হেক্টর ও উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের ৪৮ হাজার ২১৫ হেক্টর জমি। এ জন্য কৃষকরা তাদের ৪হাজার ৭৯২ হেক্টর জমিতে বোরো বীজতলা তৈরি করে। তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে জেলার অধিকাংশ বীজতলা কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়ে হলুদ বর্ণ ধারণ করে শুকিয়ে মরে যাওয়া শুরু করলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও চাষীরা স্থানীয়ভাবে এই বোরো বীজতলাগুলোকে রক্ষার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে বীজতলাগুলোকে রক্ষা করেছে।
সদর উপজেলার ভেলাজান গ্রামের বোরো চাষী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এবার দুই একর জমিতে বোরো আবাদ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সে মোতাবেক আগাম প্রস্তুতি হিসেবে ১০শতক জমিতে বীজতলা তৈরি করেছি এবং বোরো রোপন শুরু করেছি।আগামী দু’ এক দিনের মধ্যে বোরো রোপন শুরু করব।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার হরিণমারী গ্রামের কৃষক ওয়াহেদুজ্জামান জানান,গত আমন মৌসুমে আকস্মিক বন্যার ফলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সে ক্ষতি পোষাতে ১০ বিঘা বোরো আবাদের সিদ্ধান্ত নেয়। সে মোতাবেক বোরো বীজতলাতে বীজবপন করি। বোরো রোপন শুরু করেছি। তবে বৈদ্যুতিক যদি কোন লোডশেডিং না থাকে তাহলে আগামী ৭ দিনে আমার বোরো রোপন শেষ করতে পারবো।
ধনতলা গ্রামের মাঝারুল ইসলাম জানান,আমার এক মাত্র অর্থকরী ফসল হলো এই বোরো ধান। সারা বছরের ভাত, পরিবারের খরচ ও মেয়ের লেখাপড়ার খরচ এখান থেকেই হয়। তাই বোরো রোপন শুরু করেছি। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বোরো রোপন শেষ করতে পারবো।
এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ পরিচালক (শষ্য) কৃষিবীদ মো.শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দুই দফার তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে জেলার কিছু কিছু বোরো বীজতলা কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হলেও শীত কেটে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষি সম্প্রসারণের পরামর্শ মোতাবেক কৃষকরা তাদের বীজতলা রক্ষা করতে পেরেছে। এখন পুরোদমে চলছে বোরো রোপনের মৌসুম। আমরা আশা করছি এ বছর অন্যান্য বারের তুলনায় বোরোর ব্যাপক ফলন হবে।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

ঠাকুরগাঁওসহ ৫ উপজেলায় প্রতিকূলতাকে মোকাবেলা কৃষক শুরু করেছে বোরো রোপন

আপডেট টাইম ০৮:১০:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মার্চ ২০১৮

মনসুর আহাম্মেদঃ ঠাকুরগাঁওয়ের, হরিপুর, পীরগঞ্জ,বালিয়াডাঙ্গী, রানীশংকৈল, এই ৫ উপজেলার সর্বত্র বোরো বীজতলা ‘কোল্ড ইনজুরি’তে আক্রান্ত হতে শুরু হলেও সেসব প্রতিকূলতাকে মোকাবেলা করে কৃষকরা মাঠে বোরো রোপন শুরু করেছে।অনেক বীজতলার বোরো চারা পোড়া বা ঝলসানো রোগে আক্রান্ত হয়ে পরলে কৃষকরা কীটনাশক স্প্রেসহ নানা রকম পদ্ধতি অবলম্বন করে বীজতলাগুলোকে রক্ষা করেছে। ওই বীজতলা থেকে বীজ সংগ্রহ করে ঠাকুরগাঁওয়ে ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে বোরো ধানের চারা রোপন। চাষিদের মধ্যে বোরো আবাদ নিয়ে যে শঙ্কা দেখা দিয়েছিল তা ধীরে ধীরে অবসান হতে শুরু করেছে। বীজতলা রক্ষার জন্য কিছু কিছু বোরো বীজতলায় এখনো হরেক রকমের পলিথিন দিয়ে ঢেকে রেখেছে কৃষকরা।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে ঠাকুরগাঁও জেলায় এ বোরো মৌসুমে ৬০ হাজার ৩১০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের ১২ হাজার ৯৪ হেক্টর ও উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের ৪৮ হাজার ২১৫ হেক্টর জমি। এ জন্য কৃষকরা তাদের ৪হাজার ৭৯২ হেক্টর জমিতে বোরো বীজতলা তৈরি করে। তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে জেলার অধিকাংশ বীজতলা কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়ে হলুদ বর্ণ ধারণ করে শুকিয়ে মরে যাওয়া শুরু করলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও চাষীরা স্থানীয়ভাবে এই বোরো বীজতলাগুলোকে রক্ষার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে বীজতলাগুলোকে রক্ষা করেছে।
সদর উপজেলার ভেলাজান গ্রামের বোরো চাষী নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এবার দুই একর জমিতে বোরো আবাদ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সে মোতাবেক আগাম প্রস্তুতি হিসেবে ১০শতক জমিতে বীজতলা তৈরি করেছি এবং বোরো রোপন শুরু করেছি।আগামী দু’ এক দিনের মধ্যে বোরো রোপন শুরু করব।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার হরিণমারী গ্রামের কৃষক ওয়াহেদুজ্জামান জানান,গত আমন মৌসুমে আকস্মিক বন্যার ফলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সে ক্ষতি পোষাতে ১০ বিঘা বোরো আবাদের সিদ্ধান্ত নেয়। সে মোতাবেক বোরো বীজতলাতে বীজবপন করি। বোরো রোপন শুরু করেছি। তবে বৈদ্যুতিক যদি কোন লোডশেডিং না থাকে তাহলে আগামী ৭ দিনে আমার বোরো রোপন শেষ করতে পারবো।
ধনতলা গ্রামের মাঝারুল ইসলাম জানান,আমার এক মাত্র অর্থকরী ফসল হলো এই বোরো ধান। সারা বছরের ভাত, পরিবারের খরচ ও মেয়ের লেখাপড়ার খরচ এখান থেকেই হয়। তাই বোরো রোপন শুরু করেছি। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বোরো রোপন শেষ করতে পারবো।
এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ পরিচালক (শষ্য) কৃষিবীদ মো.শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দুই দফার তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে জেলার কিছু কিছু বোরো বীজতলা কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হলেও শীত কেটে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষি সম্প্রসারণের পরামর্শ মোতাবেক কৃষকরা তাদের বীজতলা রক্ষা করতে পেরেছে। এখন পুরোদমে চলছে বোরো রোপনের মৌসুম। আমরা আশা করছি এ বছর অন্যান্য বারের তুলনায় বোরোর ব্যাপক ফলন হবে।