ঢাকা ০৫:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
দুর্নীতির অভিযোগে পীরগঞ্জ পাইলট স্কুলের প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত ড. মো. হারুনুর রশীদ পরিচালিত সেলিনা হোসেনের ‘কাকতাড়ুয়া বুধা’ মুক্তি পেয়েছে ভাল মানুষ থেকেইে ভাল মানুষ তৈরী হয়—ঠাকুরগাঁওয়ে আল-হাসানাহ স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরুস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে সাবেক এমপি জাহিদুর রহমান ঠাকুরগাঁয়ে যুবলীগ নেতার পলিথিন কারখানা বন্ধ, মালামাল জব্দ সাগর-রুনি হত্যা মামলা র‌্যাব থেকে তদন্তের দায়িত্ব পিবিআইয়ের কাছে সংস্কারের পরেই নির্বাচন: ড. ইউনূস বশিরউদ্দীন ও ফারুকীকে কার বুদ্ধিতে নিলেন, প্রশ্ন মান্নার ভূমি সেবায় দুর্নীতি-অনিয়মে তাৎক্ষণিক শাস্তির ব্যবস্থা ভোট কারচুপির তদন্ত সাবেক ডিসি-এসপি-ইউএনওদের ঘুম হারাম আসিফ নজরুলকে হেনস্তা,দূতাবাসের কাউন্সেলরকে দেশে ফেরত, চাকরি হারাচ্ছেন স্টাফ

১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি ইন্দিরা গান্ধীর সাথে প্রথম সাক্ষাৎ হয় বঙ্গবন্ধুর

অনলাইন ডেস্ক ॥ ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারি দিনটি ছিল সোমবার।

ব্রিটিশ সরকারের বিমানে করে সকাল আটটা নাগাদ দিল্লীর বিমানবন্দরে অবতরণ করেন শেখ মুজিবুর রহমান। এর ঠিক দুদিন আগেই পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে লন্ডন পৌঁছেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের পুরোধা ব্যক্তি শেখ মুজিবুর রহমান।

দিল্লী বিমানবন্দরে শেখ মুজিবকে স্বাগত জানান ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ভি ভি গিরি এবং প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী।

এরপর ভারতের রাজধানী দিল্লীতে শেখ মুজিবকে বিপুল সংবর্ধনা দেয়া হয়। দিল্লীর রাস্তায় তাদের গাড়ি বহরের ওপর পুষ্পবর্ষণ করা হয়েছিল। তখন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তরুণ কর্মকর্তা ছিলেন দেব মুখার্জি, যিনি পরবর্তীতে ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সেদিনের ঘটনা স্মৃতিচারণ করে মি: মুখ্যার্জি বিবিসি বাংলাকে বলেন, এর আগে কয়েক সপ্তাহ শেখ মুজিবকে নিয়ে অনেকে বেশ উদ্বিগ্ন ছিলেন। কারণ পাকিস্তানের কারাগারে তিনি বেঁচে আছেন কিনা – সেটি নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল অনেকের মনে।

দেব মুখার্জি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সহায়তার জন্য ভারতকে অভিনন্দন জানিয়ে শেখ মুজিব উষ্ণ ভাষণ দিয়েছিলেন। ইন্দিরা গান্ধী ও শেখ মুজিব একই মঞ্চে বক্তৃতা করেন সেদিন। সে ভাষণে শেখ মুজিব বলেন, “আপনাদের প্রধানমন্ত্রী, আপনাদের সরকার, আপনাদের সৈন্য বাহিনী, আপনাদের জনগণ যে সাহায্য এবং সহানুভূতি আমার দুঃখী মানুষকে দেখিয়েছে, চিরদিন বাংলার মানুষ তা ভুলতে পারবে না।”

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আন্তর্জাতিক জনমত গঠনের জন্য ইন্দিরা গান্ধী কূটনীতিকভাবে যে ভূমিকা রেখেছিলেন সেজন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন শেখ মুজিব।

“দুদিন আগেও আমি পশ্চিম পাকিস্তানের অন্ধকার সেলের মধ্যে বন্দি ছিলাম। শ্রীমতি গান্ধী আমার জন্য দুনিয়ার এমন কোন জায়গা নাই যেখানে তিনি চেষ্টা করেন নাই আমাকে রক্ষা করার জন্য। আমি ব্যক্তিগতভাবে তার কাছে কৃতজ্ঞ,” দিল্লীর ভাষণে বলেছিলেন শেখ মুজিব।

ইন্দিরা গান্ধীর সাথে সেটিই ছিল শেখ মুজিবের প্রথম সাক্ষাৎ। যদিও এর আগের দিন লন্ডনে থাকা অবস্থায় ইন্দিরা গান্ধীর সাথে টেলিফোনে কথা বলেন শেখ মুজিবুর রহমান। মি: মুখার্জি বিবিসি বাংলাকে বলেন, “তার আগে তো শেখ মুজিব সম্পূর্ণ পাকিস্তানের প্রাদেশিক নেতা ছিলেন। তারপরে তিনি জাতীয় নেতা হয়ে উঠেন। তারপরে তো মিলিটারি ক্র্যাক ডাউন শুরু হয়। কাজেই ওনার সাথে তো পূর্বে দেখা হওয়ার কোন সুযোগ হয়নি।”

ইন্দিরা গান্ধীর সাথে শেখ মুজিবুর রহমানের সেই প্রথম সাক্ষাতের মাধ্যমে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভিত্তি তৈরি করেছিল বলে মনে করেন মি: মুর্খাজি।

তার মতে, শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের পরে বহু বছরের জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ক বিঘ্নিত হয়।

দিল্লীতে কয়েক ঘণ্টা অবস্থানের পর শেখ মুজিবকে বহনকারী বিমানটি ঢাকার তেজগাঁও বিমানবন্দরে এসে নামে। তাকে স্বাগত জানানোর জন্য সকাল থেকে দলে দলে মানুষ ঢাকার তেজগাঁও বিমানবন্দরে জড়ো হতে থাকেন ।

বিমানবন্দর থেকে তিনি যান তৎকালীন রমনার রেসকোর্স ময়দানে, যেটি বর্তমানে সোহরাওয়ার্দি উদ্যান। স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে তার প্রথম ভাষণ সেখানেই হয়।

বিমানবন্দর আর রেসকোর্সের আশেপাশে ছিল মানুষের ঢল।

সূত্র : বিবিসি বাংলা

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

জনপ্রিয় সংবাদ

দুর্নীতির অভিযোগে পীরগঞ্জ পাইলট স্কুলের প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত

১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি ইন্দিরা গান্ধীর সাথে প্রথম সাক্ষাৎ হয় বঙ্গবন্ধুর

আপডেট টাইম ০২:৩০:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ জানুয়ারী ২০২১

অনলাইন ডেস্ক ॥ ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারি দিনটি ছিল সোমবার।

ব্রিটিশ সরকারের বিমানে করে সকাল আটটা নাগাদ দিল্লীর বিমানবন্দরে অবতরণ করেন শেখ মুজিবুর রহমান। এর ঠিক দুদিন আগেই পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে লন্ডন পৌঁছেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের পুরোধা ব্যক্তি শেখ মুজিবুর রহমান।

দিল্লী বিমানবন্দরে শেখ মুজিবকে স্বাগত জানান ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ভি ভি গিরি এবং প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী।

এরপর ভারতের রাজধানী দিল্লীতে শেখ মুজিবকে বিপুল সংবর্ধনা দেয়া হয়। দিল্লীর রাস্তায় তাদের গাড়ি বহরের ওপর পুষ্পবর্ষণ করা হয়েছিল। তখন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তরুণ কর্মকর্তা ছিলেন দেব মুখার্জি, যিনি পরবর্তীতে ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সেদিনের ঘটনা স্মৃতিচারণ করে মি: মুখ্যার্জি বিবিসি বাংলাকে বলেন, এর আগে কয়েক সপ্তাহ শেখ মুজিবকে নিয়ে অনেকে বেশ উদ্বিগ্ন ছিলেন। কারণ পাকিস্তানের কারাগারে তিনি বেঁচে আছেন কিনা – সেটি নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল অনেকের মনে।

দেব মুখার্জি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সহায়তার জন্য ভারতকে অভিনন্দন জানিয়ে শেখ মুজিব উষ্ণ ভাষণ দিয়েছিলেন। ইন্দিরা গান্ধী ও শেখ মুজিব একই মঞ্চে বক্তৃতা করেন সেদিন। সে ভাষণে শেখ মুজিব বলেন, “আপনাদের প্রধানমন্ত্রী, আপনাদের সরকার, আপনাদের সৈন্য বাহিনী, আপনাদের জনগণ যে সাহায্য এবং সহানুভূতি আমার দুঃখী মানুষকে দেখিয়েছে, চিরদিন বাংলার মানুষ তা ভুলতে পারবে না।”

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় আন্তর্জাতিক জনমত গঠনের জন্য ইন্দিরা গান্ধী কূটনীতিকভাবে যে ভূমিকা রেখেছিলেন সেজন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন শেখ মুজিব।

“দুদিন আগেও আমি পশ্চিম পাকিস্তানের অন্ধকার সেলের মধ্যে বন্দি ছিলাম। শ্রীমতি গান্ধী আমার জন্য দুনিয়ার এমন কোন জায়গা নাই যেখানে তিনি চেষ্টা করেন নাই আমাকে রক্ষা করার জন্য। আমি ব্যক্তিগতভাবে তার কাছে কৃতজ্ঞ,” দিল্লীর ভাষণে বলেছিলেন শেখ মুজিব।

ইন্দিরা গান্ধীর সাথে সেটিই ছিল শেখ মুজিবের প্রথম সাক্ষাৎ। যদিও এর আগের দিন লন্ডনে থাকা অবস্থায় ইন্দিরা গান্ধীর সাথে টেলিফোনে কথা বলেন শেখ মুজিবুর রহমান। মি: মুখার্জি বিবিসি বাংলাকে বলেন, “তার আগে তো শেখ মুজিব সম্পূর্ণ পাকিস্তানের প্রাদেশিক নেতা ছিলেন। তারপরে তিনি জাতীয় নেতা হয়ে উঠেন। তারপরে তো মিলিটারি ক্র্যাক ডাউন শুরু হয়। কাজেই ওনার সাথে তো পূর্বে দেখা হওয়ার কোন সুযোগ হয়নি।”

ইন্দিরা গান্ধীর সাথে শেখ মুজিবুর রহমানের সেই প্রথম সাক্ষাতের মাধ্যমে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভিত্তি তৈরি করেছিল বলে মনে করেন মি: মুর্খাজি।

তার মতে, শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের পরে বহু বছরের জন্য বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ক বিঘ্নিত হয়।

দিল্লীতে কয়েক ঘণ্টা অবস্থানের পর শেখ মুজিবকে বহনকারী বিমানটি ঢাকার তেজগাঁও বিমানবন্দরে এসে নামে। তাকে স্বাগত জানানোর জন্য সকাল থেকে দলে দলে মানুষ ঢাকার তেজগাঁও বিমানবন্দরে জড়ো হতে থাকেন ।

বিমানবন্দর থেকে তিনি যান তৎকালীন রমনার রেসকোর্স ময়দানে, যেটি বর্তমানে সোহরাওয়ার্দি উদ্যান। স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে তার প্রথম ভাষণ সেখানেই হয়।

বিমানবন্দর আর রেসকোর্সের আশেপাশে ছিল মানুষের ঢল।

সূত্র : বিবিসি বাংলা