স্টাফ রিপোর্টার:: অধৃষ্য ক্লাবের উদ্যগে জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার নিম্ন আয়ের মানুষদের সহায়তায় বিভিন্ন স্থানে বসানো হয়েছে অর্ধে ক মূল্যে চাল-ডাল সহ কাচাবাজরের অরধেক মূল্যের বাজার। “মৌলিক অধিকার আদায় করি, কুসংস্কার মুক্ত ও জনসচেতন সমাজ গড়ি” এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় নিত্য প্রয়োজনীয় কাঁচামালের ভর্তুকি বাজার পরিচালনা করছে সামাজিক স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন অধৃষ্য ক্লাব। করোনা কালীন সময়ে লকডাউন পরিস্থিতিতে উপজেলার ফুটানি টাউন বাজার এলাকায় সংগঠনটির নিজস্ব কার্যালয়ে এ কার্যক্রম শুরু হয়। পরবর্তীতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে ভর্তুকি বাজার কার্যক্রম। নিম্ন আয়ের মানুষের কথা ভেবে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ভর্তুকি বাজার পরিচালনা করছেন সংগঠনটির স্বেচ্ছাসেবকরা। এরই ধারবাহিকতায় সোমবার সকালে উপজেলার ডি এন ডিগ্রী কলেজ মাঠে প্রায় ২শ জন সাধারণ ক্রেতার মাঝে বাজার মূল্যের চেয়ে অর্ধেক দামে চাল, ডাল, তৈল, আটা, লবন, পেঁয়াজ, রসুন, ডিম সহ বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল দেওয়া হয়। এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আকতারুল ইসলাম, ডিএন কলেজের অফিস সহকারি ফজলুল হক, অধৃষ্য ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান ডরিন, অধৃষ্য ক্লাবের সভাপতি রাশেদ খান, সাধারণ সম্পাদক জাকিউর রহমান লিপন সহ সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা উপস্থিত ছিলেন। করোনা কালিন সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে লাইনে দাঁড়িয়ে বাজার দরের চেয়ে অর্ধেক দামে নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করতে পেরে খুঁশি ক্রেতারা।
নারায়নপুর গ্রামের ক্রেতা হামিদা বেওয়া জানান, সারাদেশের মত আমাদের এলাকাতেও করোনা ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে কিছুদিন লকডাউন থাকায় আয় রোজগার প্রায় বন্ধ। এমন সময়ে হাটের থেকে কম দামে চাল, ডাল, তেল কিনতে পারছি। অধৃষ্য ক্লাবের ছেলেরা এটা খুব ভালো কাজ করেছে।
বথপালিগাঁও এলাকার ক্রেতা তৈয়ব আলী, মাইকিং শুনে এখানে কম দামে তরি তরকারি কিনতে এসেছিলাম। বাজারের চেয়ে কম দামে চাল-ডাল সহ মরিচ পেঁয়াজ কিনলাম।
ভাকুড়া গ্রামের অটো চালক দবিরুল ইসলাম জানান, লকডাউনের কারণে গাড়ি চালাতে না পেরে অসহায় হয়ে পড়েছিলাম কয়েকদিন ধরেই ভর্তুকি বাজার থেকে কম দামে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র কিনতে পেরেছি। আমাদের মত মানুষদের জন্য সুবিধা হয়েছে। আশা করছি এ ধরণের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
অধৃষ্য ক্লাবের সভাপতি রাসেদ খান জানান, যথাসম্ভব চেষ্টা করা হয়েছে সকলের নিকট সমানভাবে সুবিধা পৌছিয়ে দিতে। আজকে প্রায় ১৯০ জন সুবিধাভোগীকে নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচামাল দেওয়া হয়েছে। ক্লাবের এমন একটি উদ্যোগ এবং প্রোগ্রাম আয়োজন করতে পেরে এবং থাকতে পেরে আমি সত্যিই গর্বিত। পুরো মাস আমরা পরিচালনার চেষ্টা করবো তবে দু একদিন বৃক্ষরোপণ উপলক্ষে বিঘ্ন ঘটতে পারে। সকলের নিকট সহযোগিতা একান্ত কাম্য। আমাদের এই ধারা অব্যাহত রাখতে যথাসম্ভব সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিন। যারা ইতিমধ্যে আর্থিক ভাবে সহযোগীতা করেছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানায়।
অধৃষ্য ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মেহেদি হাসান ডরিন জানান, সামর্থ কম থাকায় ও আর্থিক সংকুলান এর ব্যাপারে খানিকটা দ্বিধা দ্বন্দ্ব থাকায় দীর্ঘদিন পূর্বের এই পরিকল্পনাটি এতদিন বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় নি। অবশেষে সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে ক্লাবের নিজস্ব অর্থায়নে কয়েকদিন ধরে চালিয়ে যাচ্ছি। বর্তমানে অসহায় বলতে শুধু গরীব মানুষদের বুঝায় না, অনেক মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার করোনার প্রকোপে জর্জরিত এবং তাদের আর্থিক অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়েছে। তাই সকলের প্রয়োজনে যেনো কাজে আসতে পারি সেই চিন্তা থেকেই এমন উদ্যোগ। তবে সকলেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে না দিলে হয়তো আমাদের কার্যক্রম বা বাজারের পণ্য বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে না। আমরা যতদিন পারি চেষ্টা করে যাবো আমাদের এই সেবা মানুষের নিকট পৌঁছিয়ে দিতে।
উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আকতারুল ইসলাম জানান, করোনা ভাইরাস প্রকোপের সময় সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে অধৃষ্য ক্লাবের সদস্যরা যে উদ্যোগ হাতে নিয়েছে এতে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে। নিঃসন্দেহে এটা অনেক ভাল উদ্যোগ। এ ধরণের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতের উপজেলা পরিষদ সর্বাত্মক চেষ্টা করবে। সাধারণ মানুষের জন্য অধৃষ্য ক্লাবের মত উপজেলার সব স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এগিয়ে আসলে করোনাকালীন সংকট মোকাবেলা করা সম্ভব।