ঢাকা ১২:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডিসি-এসপিদের মেসেজ পরিষ্কার, কী করবে ইসি?

বিশেষ প্রতিনিধি::কেমন হবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন? নির্বাচনের মূল নিয়ামক জেলা প্রশাসক ও এসপিদের ভূমিকা কেমন হবে? তার একটি পরিষ্কার বার্তা পাওয়া গেলো শনিবার। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এ দিন মতবিনিময় করা হয় ডিসি-এসপিদের সঙ্গে। ডিসি-এসপিরা তাদের নানা চাওয়া পাওয়ার কথা তুলে ধরেন। কিন্তু অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে তাদের তেমন কোন আগ্রহ ব্যক্ত করতে দেখা যায়নি। এ নিয়ে বলতে গিয়ে একজন নির্বাচন কমিশনার উল্টো তোপের মুখে পড়েন। সমকালের রিপোর্টে এ ঘটনার বিবরণ পাওয়া যায়। এতে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান বলেন, বৈঠকে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর বিষয়ে যতটা বক্তব্য এসেছে নির্বাচন প্রসঙ্গে তেমন কোনো মতামত পাওয়া যায়নি। জেলা পরিষদ নির্বাচনে স্থানীয় এমপিদের তরফে আচরণবিধি লঙ্ঘনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রকাশ্যে ফল পাল্টে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। এমনকি কোনো কোনো এমপি ইসি সদস্যদের প্রকাশ্যে গালিও দিচ্ছেন। ইসির পক্ষ থেকে আয়োজিত রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন অংশীজনের সংলাপে ডিসিদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের ওপরে সৃষ্ট আস্থাহীনতার জন্য তিনি মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দায়ী করেন। এ সময় তিনি মাঠ প্রশাসনের কর্তাদের নখদন্তহীন এবং মন্ত্রী-এমপিদের ছাড়া চলতে পারেন না বলে মন্তব্য করেন। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, ম্যাজিস্ট্র্রেটদের বিদ্যমান সুবিধাও তাঁদের হাতে পৌঁছায় না।

তাঁর এই বক্তব্যের পরে সভাকক্ষের মধ্যেই একযোগে ডিসি-এসপিরা হইচই শুরু করেন। এ সময় সিইসিসহ অন্য কমিশনারবৃন্দ এবং জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবও মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন। এ পর্যায়ে কমিশনার আনিছ বলেন, তাহলে কি আপনারা আমার বক্তব্য শুনতে চান না। তখন সবাই একযোগে ‘না’ বলে উঠলে নিজের বক্তব্য শেষ না করেই বসে পড়েন সর্বশেষ জ্বালানি সচিব হিসেবে অবসরে যাওয়া এই কমিশনার।

মাঠ প্রশাসন ও পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। প্রায় সবাই এ ব্যাপারে একমত যে, প্রশাসন ও পুলিশ নিরপেক্ষ না হলে কিছুতেই অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। কারণ নির্বাচনের পরিবেশ রক্ষায় প্রধান ভূমিকা তাদেরই। কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই অবাধ নির্বাচনের কথা বলে আসছে। সরকারও বলছে, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা। আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোও এ ব্যাপারে জোর দিচ্ছে। তবে মাঠ প্রশাসন শনিবার স্পষ্ট বার্তা দেয়ার পর নির্বাচন কমিশন এখন কী করে তাই হবে দেখার। যদিও কমিশনের কি আদৌ কিছু করার আছে সে প্রশ্নও রয়েছে।

Tag :

ভিডিও

এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

Azam Rehman

ডিসি-এসপিদের মেসেজ পরিষ্কার, কী করবে ইসি?

আপডেট টাইম ১০:৩৪:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ অক্টোবর ২০২২
বিশেষ প্রতিনিধি::কেমন হবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন? নির্বাচনের মূল নিয়ামক জেলা প্রশাসক ও এসপিদের ভূমিকা কেমন হবে? তার একটি পরিষ্কার বার্তা পাওয়া গেলো শনিবার। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এ দিন মতবিনিময় করা হয় ডিসি-এসপিদের সঙ্গে। ডিসি-এসপিরা তাদের নানা চাওয়া পাওয়ার কথা তুলে ধরেন। কিন্তু অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে তাদের তেমন কোন আগ্রহ ব্যক্ত করতে দেখা যায়নি। এ নিয়ে বলতে গিয়ে একজন নির্বাচন কমিশনার উল্টো তোপের মুখে পড়েন। সমকালের রিপোর্টে এ ঘটনার বিবরণ পাওয়া যায়। এতে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান বলেন, বৈঠকে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর বিষয়ে যতটা বক্তব্য এসেছে নির্বাচন প্রসঙ্গে তেমন কোনো মতামত পাওয়া যায়নি। জেলা পরিষদ নির্বাচনে স্থানীয় এমপিদের তরফে আচরণবিধি লঙ্ঘনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রকাশ্যে ফল পাল্টে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে। এমনকি কোনো কোনো এমপি ইসি সদস্যদের প্রকাশ্যে গালিও দিচ্ছেন। ইসির পক্ষ থেকে আয়োজিত রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন অংশীজনের সংলাপে ডিসিদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের ওপরে সৃষ্ট আস্থাহীনতার জন্য তিনি মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দায়ী করেন। এ সময় তিনি মাঠ প্রশাসনের কর্তাদের নখদন্তহীন এবং মন্ত্রী-এমপিদের ছাড়া চলতে পারেন না বলে মন্তব্য করেন। এক পর্যায়ে তিনি বলেন, ম্যাজিস্ট্র্রেটদের বিদ্যমান সুবিধাও তাঁদের হাতে পৌঁছায় না।

তাঁর এই বক্তব্যের পরে সভাকক্ষের মধ্যেই একযোগে ডিসি-এসপিরা হইচই শুরু করেন। এ সময় সিইসিসহ অন্য কমিশনারবৃন্দ এবং জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবও মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন। এ পর্যায়ে কমিশনার আনিছ বলেন, তাহলে কি আপনারা আমার বক্তব্য শুনতে চান না। তখন সবাই একযোগে ‘না’ বলে উঠলে নিজের বক্তব্য শেষ না করেই বসে পড়েন সর্বশেষ জ্বালানি সচিব হিসেবে অবসরে যাওয়া এই কমিশনার।

মাঠ প্রশাসন ও পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। প্রায় সবাই এ ব্যাপারে একমত যে, প্রশাসন ও পুলিশ নিরপেক্ষ না হলে কিছুতেই অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। কারণ নির্বাচনের পরিবেশ রক্ষায় প্রধান ভূমিকা তাদেরই। কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই অবাধ নির্বাচনের কথা বলে আসছে। সরকারও বলছে, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা। আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোও এ ব্যাপারে জোর দিচ্ছে। তবে মাঠ প্রশাসন শনিবার স্পষ্ট বার্তা দেয়ার পর নির্বাচন কমিশন এখন কী করে তাই হবে দেখার। যদিও কমিশনের কি আদৌ কিছু করার আছে সে প্রশ্নও রয়েছে।