কূটনৈতিক রিপোর্টার:: ইউরোপীয় ইউনিয়ন ডে উপলক্ষে অনুষ্ঠিত এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ইউরোপের ২৭ রাষ্ট্রের ওই জোটের তরফে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হলেই কেবলমাত্র পর্যবেক্ষক পাঠাবে ইইউ। মাঠ পর্যায়ে নির্বাচন-পূর্ব পরিস্থিতি কেমন? বিশেষত তা অংশগ্রহণমূলক হওয়ার পরিবেশ আছে কিনা? তা মূল্যায়নে একটি স্বাধীন বিশেষজ্ঞ দল পাঠাচ্ছে ইইউ। জুলাই মাসে তারা বাংলাদেশ সফর করবে। তারা ফিরে তাদের মতামতসহ ইইউ’র হাই রিপ্রেজেন্টিটিভ জোসেফ বোরেলের কাছে মূল্যায়ন রিপোর্ট জমা দেবে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই বাংলাদেশে নির্বাচনে ইইউ পর্যবেক্ষক পাঠাবে কিনা? সে সিদ্ধান্ত নেবেন জোসেফ বোরেল। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে অনুষ্ঠিত ওই সংবাদ সম্মেলনে ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি ছাড়াও ইতালি, নেদারল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, ডেনমার্ক, সুইডেন ও স্পেনের রাষ্ট্রদূতরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নির্বাচনের আগে বা পরে রাজনীতিতে কোনো সহিংসতা বা অস্থিতিশীলতা দেখতে চায় না ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন। একই সঙ্গে বাংলাদেশের নির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ে তাদের কোনো ধরনের মধ্যস্থতা করার চিন্তাও নেই বলে খোলাসা করা হয়। এক প্রশ্নের জবাবে চার্লস হোয়াইটলি বলেন, আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের উচ্চ প্রতিনিধি (জোসেফ বোরেল) বলেছেন, আমরা নির্বাচন পর্যবেক্ষক মিশন পাঠাতে প্রস্তুত। আপনারা আরও জানেন, আমরা নির্বাচন কমিশন থেকে আমাদের পর্যবেক্ষক মিশন মোতায়েনের বিষয়ে একটি চিঠি পেয়েছি। পর্যবেক্ষক পাঠানোর ক্ষেত্রে কোনো বাধা যাতে না হয়, সেটার সিকিউরিটি হিসেবে এটা দরকার ছিল।ইইউ দূত বলেন, জোসেফ বোরেল যখন বাংলাদেশকে পর্যবেক্ষক পাঠানোর অগ্রাধিকার তালিকায় রাখেন তখন তিনি বলেছেন যে, পর্যবেক্ষক তখনই পাঠানো হবে যখন নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে।
তবে তিনি বলেন নি যে এক্স পার্টিকে অংশগ্রহণ করতে হবে বা ওয়াই পার্টিকে অংশগ্রহণ করতে। বিষেশজ্ঞ দল এখানে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিস্থিতিও দেখবে, সব দলের সঙ্গে আলোচনা করবে এবং মূল্যায়ন করবে আমরা কোনটিকে অংশগ্রহণমূলক হিসেবে বিবেচনা করবো। আমরা এখনই বলতে পারছি না যে অমুক দল অংশগ্রহণ করলো বা করলো না এবং সেটির ওপর পর্যবেক্ষক পাঠানো নির্ভর করছে।
বিশেষজ্ঞ দল আসাটা ইইউ এঙ্গেজমেন্টের প্রথম ধাপ এবং এরা ইইউ এর কোনো কর্মকর্তা নয় জানিয়ে তিনি বলেন, দলটি সব রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ ও মিডিয়ার সঙ্গে বসবে। এটা শুধু নির্বাচনের বিষয় নয়, এখানে দেখা হবে একটি নির্বাচনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয়ও, যাতে নিরাপত্তার বিষয়ও রয়েছে।
ওদিকে দূতদের লিখিত বিবৃতিতে বলা হয়, ইইউ-বাংলাদেশ সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো মূল্যবোধ। বাংলাদেশের জিএসপি প্লাস সুবিধা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের সঙ্গে অব্যাহতভাবে কাজ করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এক্ষেত্রে আরও অগ্রগতির জন্য প্রয়োজন শ্রম অধিকার, মানবাধিকার এবং পরিবেশগত মানদ-। বাংলাদেশের নতুন ‘ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুক’-এর অনেক ফিচারের ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নিজের ২০২১ সালের ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজির সঙ্গে মিল রয়েছে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি অব্যাহত রাখা উভয়ের লক্ষ্যের মধ্যে রয়েছে।