দুর্নীতি বিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, বিশ্বজুড়ে দুর্নীতি-গ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশ এবার আরো খারাপ অবস্থানে গেছে।
মঙ্গলবার ঢাকায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ২০১৮ সালে দুর্নীতির সূচকে বাংলাদেশের ফলাফল ১৮০ টি দেশের মধ্যে ১৪৯তম অবস্থানে। অথচ ২০১৭ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৪৩ তম।
বাংলাদেশের স্কোর ১০০’র মধ্যে ২৬, যেটি ২০১৭ সালের চেয়ে দুই পয়েন্ট কম। অর্থাৎ শতকরা হারে বাংলাদেশের দুই পয়েন্ট অবনতি হয়েছে।
সবচেয়ে দুর্নীতি-গ্রস্ত দেশ কারা?
টিআই’র প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, পৃথিবীর যেসব দেশে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয় সেগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩ তম।
বাংলাদেশের সাথে একই অবস্থানে থাকা দেশগুলো হচ্ছে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক এবং উগান্ডা।
অথচ ২০১৭ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৭ তম।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয় আফগানিস্তানে। এরপরই বাংলাদেশের অবস্থান।
সবচেয়ে দুর্নীতি-গ্রস্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের তুলনায় অন্য যেসব দেশ খারাপ অবস্থানে আছে তাদের বেশিরভাগ যুদ্ধ বিধ্বস্ত কিংবা অভ্যন্তরীণ সংঘাতে জর্জরিত।
বাংলাদেশের দুই প্রতিবেশী ভারত এবং মিয়ানমারের অবস্থান এক্ষেত্রে বাংলাদেশের চেয়ে ভালো অবস্থানে আছে। টিআই’র সূচকে ভারতের অবস্থান ১৮০ টি দেশের মধ্যে ৭৮তম এবং তাদের পয়েন্ট ৪১। অন্যদিকে ২৯ পয়েন্ট নিয়ে মিয়ানমারের অবস্থান ১৩২ তম।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুর্নীতির ধারণা সূচকে সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ এবারই সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে রয়েছে।
তিনি বলেন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দুই পয়েন্ট কমে যাবার বিষয়টি দ্বিতীয়বারের মতো হলো।
বাংলাদেশের এই অবস্থানকে ‘বিব্রতকর’ বলে বর্ণনা করেন মি: ইফতেখারুজ্জামান।
২০১৬ সালে নভেম্বর মাস থেকে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে এ জরিপের জন্য।
সবচেয়ে কম দুর্নীতি হয় যেসব দেশে
অন্যদিকে যেসব দেশে সবচেয়ে কম দুর্নীতি হয় সেগুলোর মধ্যে প্রথমে রয়েছে ডেনমার্ক এবং দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে নিউজিল্যান্ড।
ডেনমার্কের পয়েন্ট ৮৮ এবং নিউজিল্যান্ডের পয়েন্ট ৮৭।
মি: ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কোন দেশ সম্পূর্ণ স্কোর পায়নি।
তিনি বলেন, “বিশ্বে এমন কোন দেশ নেই যেখানে দুর্নীতি হয়না।
এ সূচক যেসব বিষয়ের উপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয় সেগুলোর কয়েকটি হচ্ছে – ঘুষ লেনদেন, সরকারি ব্যবস্থাকে ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করা, সরকারি সম্পদ ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার এবং স্বজনপ্রীতি।
মি: ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এ সূচকটি তৈরি করা হয় তিনটি আন্তর্জাতিক জরিপের উপর ভিত্তি করে।
বার্লিন-ভিত্তিক দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ১৯৯৫ সাল থেকে দুর্নীতির ধারণাসূচক প্রকাশ করছে।
এ সূচকে বাংলাদেশকে প্রথমবারের মতো অন্তর্ভুক্ত করা হয় ২০০১ সালে।