বিশেষ সংবাদদাতা:: স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, সরকারি স্বাস্থ্যসেবার পরিধি ও মান বৃদ্ধি করে মাথাপিছু স্বাস্থ্যব্যয় কমানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দেশের সরকারি হাসপাতালে নতুন চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। শিগগিরই পাঁচ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হবে।
তিনি বলেন, যথাযথ মানের যন্ত্রপাতি স্থাপন ও রক্ষণাবেক্ষণ, হাসপাতালের সম্প্রসারণ, পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি নতুন নতুন বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণের মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় আধুনিক স্বাস্থ্যসেবাকে আরও সহজলভ্য ও সুলভ করার কাজ শুরু করেছে সরকার।
রোববার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের একজন মানুষও যেন মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবার আওতার বাইরে না থাকে সেদিকে দৃষ্টি রেখে দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মাঝে বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তাফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদসহ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি, মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বক্তৃতা করেন।
জাহিদ মালেক বলেন, দেশের প্রত্যেক মানুষের জন্য বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে দেশের সকল পর্যায়ের হাসপাতালে সেবার মান বাড়ানো হবে। সরকারের উদ্যোগের সফল বাস্তবায়নের জন্য সকল স্তরের চিকিৎসক, নার্সসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থল থেকে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে হবে।
এ সময় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে নবরূপে সংস্কার করে পাঁচ হাজার শয্যার হাসপাতালে রূপান্তর, দেশের প্রতিটি বিভাগে একটি করে ১০০ শয্যার ক্যান্সার ও কিডনি হাসপাতাল, মা ও শিশু হাসপাতাল স্থাপনসহ জেলা সদর হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোতে ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপন, বিভিন্ন হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, এ বছরই সরকারি হাসপাতালগুলোতে নতুন ১০০টি আইসিইউ শয্যা বাড়ানোর কাজ সম্পন্ন হবে। শহরের হাসপাতালগুলোতে দরিদ্রদের জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার বিশেষ কর্নার খোলারও চিন্তা করা হচ্ছে। কমিউনিটি ক্লিনিকসহ বড় বড় বিশেষায়িত হাসপাতালে দেশের সাধারণ দরিদ্র জনগোষ্ঠী প্রায় বিনামূল্যে চিকিৎসা পাচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও সংক্রাকম রোগ চিকিৎসায় বাংলাদেশের সাফল্য আজ সারাবিশ্বে প্রশংসিত। কিন্তু ক্যান্সার ও কিডনি রোগসহ কিছু কিছু অসংক্রামক রোগের উন্নত চিকিৎসার জন্য রোগীদের বড় বড় বেসরকারি হাসপাতাল অথবা বিদেশ যেতে হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে দেশের স্বাস্থ্যসেবাকে অসংক্রামক রোগ মোকাবেলার জন্য স্বয়ংসম্পূর্ণ করে গড়ে তোলা হবে।
অনুষ্ঠানে ২০১৮ সালে দেশের সেরা সেবাপ্রদানকারী ২৭টি প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালকে ‘জাতীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী পুরস্কার’ প্রদান করা হয়। এ বছর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ক্যাটাগরিতে পাঁচটি, জেলা সদর হাসপাতাল ক্যাটাগরিতে পাঁচটি, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তিনটি, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল থেকে দুটি, কমিউনিটি ক্লিনিক ক্যাটাগরিতে পাঁচটি, সিভিল সার্জন ক্যাটাগরিতে পাঁচটি, বিভাগীয় পর্যায় থেকে দুটি প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়। আলোচনা সভার শুরুতে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে সারা দেশব্যাপী বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের কর্মসূচি উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রীর বাবার মৃত্যুতে শোক
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিমের বাবা মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুল খালেক শেখের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। মন্ত্রী মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে শোকসন্তপ্ত পরিবার ও স্বজনের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান।